সাদা ঘোড়া

দেশটিতে ঘোড়াকে খুব মর্যাদা দেয়া হয়।
(যেমন ভারতে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয় গরুকে।)

 
এক ছিল রাজা।
 
তো- সেই রাজা একদিন সকল মন্ত্রী, পাতিমন্ত্রী, সেনাপতি ইত্যাদি সকলকে ডেকে বলল- রাজ্যে ঘোষনা দিয়ে দাও ‘কেউ যদি এই রাজ্যে কোন ঘোড়া মারে- তাহলে যাবজ্জিবন কারাদন্ড হবে’।
 
অতঃপর কোন একদিন এক ব্যক্তি রাজ মহলে এসে রাজার নিকট নালিশ করলো:
– রাজা মশাই ঘোড়া মারলে কি হয়?
– কার এতা বড় দুঃসাহস আমার রাজ্যে বসবাস করে ঘোড়া মারবে? কোথায় সে? ধরে নিয়ে আস তাকে।
– না, রাজা মশাই মানে জানতে চাচ্ছিলাম কি শাস্তি দিবেন?
– অবশ্যই যাবজ্জিবন! সে যে-ই হোউক না কেন!
– না; মানে, ইয়ে- রাজামশাই; বলছিলাম কি- আমাদের মাননীয় রাজপুত্র আজ একটা ঘোড়া মেরে ফেলেছে।
– কি! রাজপুত্র হয়েছে তো কি হয়েছে? কোথায় সে? কোন ঘোড়াটা মেরেছে?
– না মানে ইয়ে, ওই আস্তাবলের বাইরের- সেই বড় ঘোড়াটা। ঐ যে, মানে- সাদা ঘোড়া টা।
 
– ‘ওহ্! তাইতো বলি! আ-রে দূর বোকা! ওটা তো সাদা ঘোড়া।’ বললেন মাননীয় রাজা মশাই।

এটা কৌতুক ছিল।
কেউ যদি এই নির্মল কৌতুকটিকে জয়ের ব্যাংক চুরির সাথে অথবা সারাদেশে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সংগে মিলিয়ে ফেলেন তাহলে সেটা একান্তই নিজ নিজ দায়িত্বে মেলাবেন- আমি কোন দায়িত্ব নিচ্ছি না কিন্তু।

তাহলে এবার বাস্তব ঘটনা শুনুন।
ভারতে রাজধানী নয়াদিল্লীতে ময়ূর পাখি মারলে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের বিধার রয়েছে।

তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী।
রাজীব গান্ধী একদিন নিজে গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছিলেন হঠাৎ তার গাড়ীর নীচে একটা ময়ূর পাখি চাপা পরে মারা গেল।

ভারতের আইন বাংলাদেশের চেয়েও শক্তিশালী।
কোর্টে মামলা উঠলো।

স্বাক্ষী, প্রমাণ ইত্যাদি শেষে মামলার রায় বের হল-
‘রাজীব গান্ধি সম্পূর্ণ নির্দোষ এবং বেকসুর খালাস।
পাখিটি ইচ্ছা করে রাজীব গান্ধির গাড়ীর নিয়ে গিয়ে মরেছে।
রাজীব গান্ধির কোন ইচ্ছাই ছিল না পাখিটি হত্যা করার। দোষ পাখিটিরই।’

   Send article as PDF