শিক্ষাগত যোগ্যতা!

আমার বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ।
 
আমি টেমস নদীর পানি যমুনায় নিয়ে ফেলি।
আর নাম্বার টু, আমার সব লেখাই আমেরিকাময়।
 
তাই আজ অন্য কিছু লিখবো।
 
অতি সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত গোপালগঞ্জ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক গোপালী ভ্যান চালককে বিমান বাহিনীতে নিয়োগ দিয়েছেন।
 
আসুন আমরা ভ্যান নিয়ে আজ একটু আলোচনা করি।
 
ভ্যান একটি তিন চাকা-ময় গাড়ী।
এটার তিনটি চাকা রয়েছে যদিও ডিজাইনটি রিক্সা থেকে চুরি করা।
এদিকে রিক্সাও আবার এসেছে সাইকেল এর ডিজাইন থেকে।
 
আসলে গাড়ী হিসাবে সাইকেল-টাই বেশ ভালো।
প্যাডল দিয়ে সাইকেল চালাতে হয়। তেল গ্যাস বা বিদ্যুৎ লাগে না।
 
আমি নিজেও বেশ ভালই সাইকেল চালাতে পারি।
 
তো, এই আমেরিকার ২২এস উইলিয়ামস ষ্ট্রিট, ডেটন, ওহাইও ৪৫৪০২ এড্রেসটি সাইকেল চালকদের মনে রাখা উচিৎ। এই ঠিকানায় একটা দুর্দান্ত সাইকেল মেরামতির দোকান রয়েছে।
 
(এখনও সেখানে সাইকেল মেরামতি হয় কি না ঠিক জানি না- খোঁজ নিলেই জানতে পারবো কিন্তু জানতেই ইচ্ছে হচ্ছে না।)
 
যাই হোক ওই সাইকেল মেরামতির দোকানটির নাম ছিল ‘রাইট সাইকেল কোম্পানী’।
 
আর এই সাইকেল কোম্পানীটির মালিকদের আপনি নিশ্চয়ই চিনেন। আমিও চিনি।
 
ওরভিল রাইট এবং উইলবার রাইট।
রাইটস ব্রাদার্স।
 
এই দুই ‘অশিক্ষিত বদমাইশ’ মিলে সাইকেল থেকে রীতিমত বিমান আবিষ্কার করে ফেলল!
 
আর ওরা সেদিন বিমান আবিস্কার করেছিল বলেই আজ হাজার খানেক ডক্টরেট প্রাপ্ত মূখ্যমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিমানের নাট-বল্টু পর্যন্ত নড়েচরে যায়।
 
এবং সেই অপরাধে বিমানের দুই দুইজন অফিসারকে রিমান্ড শেষে এখন জেল খাটতে হচ্ছে!
 
এই অশিক্ষিত ‘দুই ব্রাদার্স’ যদি সেদিন বিমান আবিস্কার না করতো- তাহলে আজ শেখ হাসিনার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হতো না।
 
সুতরাং রাইট ব্রাদার্স রাজাকার।
ওদের ফাঁসি চাই।
 
কিম জং ইল ছিলেন নর্থ কোরিয়ান প্রেসিডেন্ট।
এই ভদ্রলোক বিমানে চড়তেন না। ভয়াবহ রকমের প্রয়োজন না হলে তাকে বিমানে চড়ানো যেত না। তিনি তার মিত্র রাষ্ট্র চায়না আর রাশিয়া ভিজিট করতেন ট্রেন এ করে। আমি একবার বেইজিং এ একটা বিজসেন ট্যুরে- তখনই কিম জং ইল বেইজিং আসলেন বিশাল এক ট্রেন ঝাঁকিয়ে সেই পিয়ং ইয়ং থেকে। তখন অনেক কিছুই জানতে পেরেছিলাম এই ভদ্রলোক সম্পর্কে।
 
ইস। শেখ মুজিব যদি বেঁচে থাকতেন- তাহলে আজ বাংলাদেশ আর উত্তর কোরীয় শতভাগ একই রকম একটা দেশ হতো। একদল। এক পরিবার। সবকিছুর মালিক একটাই পরিবার।
 
শেখ হাসিনার কত দুঃখ। কত দুঃখ।
 
দেখেন ঘটনা। ঠিকই তো হাডসন নদীর পানি হোয়াং হো পর্যন্ত নিয়ে এসেছি!
 
চিন্তা করা যায়!
সুতরাং আমার বিরুদ্ধে ঐ অভিযোগ দুটি সত্য।
 
কোথায় ভ্যান।
আর কোথায় বিমান।
 
থাক। আমেরিকায় ফিরে যাই।
জর্জ ওয়াশিংটন এর নাম শুনেছেন?
এই হাদারাম ‘অশিক্ষিত’ ব্যাটা আমেরিকার জন্ম দিয়েছে!
তারচে আমরা এসব অশিক্ষিত লোকজনের নাম মুখেই নিবো না।
ওয়াশিংটন বাদ।
 
তারচে চলুন আমরা আব্রাহাম লিংকনকে নিয়ে আলোচনা করি।
এই মহান প্রেসিডেন্ট আমেরিকার …
 
দাড়ান, দাড়ান, দাড়ান!
এই ব্যাটাও তো ম্যাট্রিক পাশ করেননি। আরেক অশিক্ষিত হাদারাম।
 
ওহ মাই গড! সর্বনাশ।
আমেরিকার ১০জন প্রেসিডেন্ট নন-মেট্রিক!
আসতাগফিরুল্লাহ্। আসতাগফিরুল্লাহ্। আসতাগফিরুল্লাহ্। (মনে মনে ১০ বার পড়ুন)।
 
President Andrew Johnson (1865-1869)
President Zachary Taylor (1849-1850)
President Millard Fillmore (1850-1853)
President James Monroe (1817-1825)
President Andrew Jackson (1829-1837)
President Grover Cleveland (1885-1889 and 1893-1897)
President William Henry Harrison (1841)
President George Washington (1789-1797)
President Abraham Lincoln (1861-1865)
President Harry S. Truman (1945-1953)
 
ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট জোসেফ এস্ট্রোডা আর বৃটিশ প্রাইম মিনিষ্টার জন মেজর- এদের কথাও তুলবেন না- সব শালা অশিক্ষিত! মূর্খের দল।
 
দূর! প্রেসিডেন্ট ফ্রেসিডেন্ট সব বাদ।
তারচে চলুন আমরা এমন কিছু মহান ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলোচনা করি- যারা এই পৃথিবীকে ‘বদলে’ দিয়েছেন। বদলে দিয়েছেন তাদের জনকল্যানমুখী কর্মকান্ড, আবিষ্কার দিয়ে।
 
কার কথা বলবো?
বিল গেটস্!
মার্ক জাকারবার্গ!
স্টিভ জবস!
 
সর্বনাশ! সবগুলি অশিক্ষিত! মূর্খ। একটাও গ্রাজুয়েট হতে পারিনি।
 
নাহ্। মজা পাচ্ছি না।
 
তারচে চলুন আমরা আজ বিশ্বের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ৬জন জিনিয়াস-কে নিয়ে আলোচনা করি যারা এই বিশ্বকে চেঞ্জ করে দিয়েছেন।
 
নাম্বার ওয়ান: মাইকেল ফ্যারাডে।
ধূর! বিদ্যুৎ আবিষ্কার করছে তো কি হইছে? ওই শালা তো একটা মূর্খের ঘরের মূর্খ। সামান্য কারখানার কর্মচারী। তওবা তওবা তওবা! কিচ্ছু লেখাপড়া শিখে নাই!
 
মেজাজ টা-ই খারাপ করে দিল।
বাকী ৫টার নামই বলবো না- ওই গুলিও নির্ঘাৎ অশিক্ষিতের ঢেকী হবে!
 
ওয়েট ওয়েট।
শিক্ষিত ছাড়া তো আর নভোচারী হওয়া যাবে না- কি বলেন?
 
এবার তাহলে একজন বিখ্যাত নভোচারী নিয়ে আলোচনা করবো। ভদ্রলোকের নাম জন গ্লেন। আমেরিকা আর রাশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় যুদ্ধউত্তর মহাকাশ নিয়ে রাজত্বের যুদ্ধের সময় এই জন গ্লেন সকলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন।
 
উনি তো নির্ঘাৎ উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব হবেনই।
চলুন তাহলে ইংরেজীতেই আলোচনা করি:
During the tense space race of the 1950s and 1960s, one man emerged as the face of the American attempt to beat the Soviets into space and, ultimately, to the moon. That man was John Glenn: he became a war hero and one of the most famous astronauts in history, despite being a ‘college dropout’. Glenn attended Muskingum College, where he studied science, but when the Japanese bombed Pearl Harbor he dropped out in order to fight in World War II.
 
স্যা স্যা স্যা। কলেজ ড্রপ! ফাঁটা বাশের চিপা! ‘college dropout’
 
তারচে বরং চলুন আমরা উইলিয়াম সেক্সপিয়রের দিকে নজর দিই। ওনি তো নির্ঘাৎ পন্ডিত ব্যক্তি।
 
এইরে খাইছে! সেক্সপিয়ার ব্যাটা তো দেখি ১৩ বছর বয়সে ঐ যে স্কুল থেকে বিদায় নিলো … ওই শেষ পড়াশোনার দৌড়।
 
পৃথিবীটাতো দেখি অশিক্ষিত্বের আখড়া!
 
দূর এতো কষ্ট করতে মন চাচেছ না।
চলুন গুগল করি।
 
“50 Extremely Successful People Who Never Finished School”
 
দেখি এবার কার কার নাম আসে?
 
To illustrate my point, here’s a list of 50 people who did not finish school but went on to be very successful.
 
George Washington President of the United States
Abraham Lincoln President of the United States
Harry Truman President of the United States
Grover Cleveland President of the United States
Zachary Taylor President of the United States
Andrew Johnson President of the United States
John Glenn Astronaut, U.S. Senator
Barry Goldwater U.S. Senator
Benjamin Franklin U.S. Ambassador
Winston Churchill Prime Minister of England
John Major Prime Minister of England
Robert Frost Poet
Florence Nightingale Nurse
Buckminster Fuller Futurist and Inventor
George Eastman Founder of Eastman Kodak
Ray Kroc Founder of McDonald’s
Dave Thomas Founder of Wendy’s
Ralph Lauren Fashion designer and Entrepreneur
Doris Lessing Nobel Prize recipient in Literature
George Bernard Shaw Playwright
Peter Jennings News anchor for ABC
Christopher Columbus Explorer
TD Jakes Pastor
Joel Osteen Pastor
John D. Rockefeller Founder of Standard Oil
Karl Rove Presidential advisor
Ted Turner Founder of CNN
Quentin Tarantino Movie director
Peter Jackson Movie director (Lord of the Rings)
Mark Twain Author
Leon Uris Author
Carl Bernstein Washington Post reporter
Carly Fiorina CEO of Hewlett Packard
Charles Dickens Author
Andrew Carnegie Industrialist
William Faulkner Nobel and Pulitzer Prize winner
Li Ka Shing Wealthiest man in Asia
Richard Branson Founder of Virgin Atlantic Airways and Virgin Records
Enzo Ferrari Founder of Ferrari
Henry Ford Founder of Ford Motor Company
J. Paul Getty Founder of Getty Oil
Jack London Author
Larry Ellison Founder of Oracle
Tom Anderson Founder of MySpace
Mark Zuckerberg Founder of Facebook
Steve Jobs Founder of Apple
Steve Wozniak Founder of Apple
Bill Gates Founder of Microsoft
Paul Allen Founder of Microsoft
Ringo Starr Beatle
 
এতক্ষনে বুঝতে পারছি।
আসলে এই পৃথিবীটা হলো অশিক্ষিতদের আখড়া। তাই তো আজ পৃথিবীর এই হাল!
 
তাই তো বলি আমাদের প্রধানমন্ত্রী (ভারত নিয়ন্ত্রিত গোপালগঞ্জ সরকার) কেন এতটা অশিক্ষিতের বিপক্ষে লেগেছেন!
 
আসলে শিক্ষার একটা গুরুত্ব রয়েছে বৈ কি?
আমাদের শেখ হাসিনা তার ছেলেকে বিশাল শিক্ষা দিয়েছেন।
 
সজীব ওয়াজেদ জয় টেক্সাসের আলিংটনের ‘ইউটিএ’ (ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস, আলিংটন) থেকে- পড়াশোনা শেষ করতে পারেন নি- তার আগেই মাদকাসক্ত, ড্রাইভিং লাইসেন্সছাড়া মদ খেয়ে গাড়ী চালনা করে পুলিশের হাতে ধরা পরে গেছেন; জেলও খেটেছেন।
 
আয় বহির্ভূত অর্থ একাউন্টে জমার রাখার জন্য তাকে পুলিশী নজরদারীতের থাকতে হয় আমেরিকায়।
 
এই জন্য তাকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বা ডোনাল্ড ট্রাম তাদের উপদেষ্টা হিসাবে নিতে পারেন নি- জেল খাটা দাগী আসামী বলে কথা!
 
কিন্তু তাতে কি!
ইউটিএ ফেল তো কি হয়েছে- ক্যাম্পাস পর্যন্ত গিয়েছেন তো!
সেটাই বা কম কি?
 
আর তাই তো বর্তমান পৃথিবীর সবচে বেশী বেতন প্রাপ্ত ব্যক্তির নাম সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আইটি উপদেষ্টা’।
 
তার মাসিক বেতন দুই লাখ ডলার। বাংলায় মাসে এক কোটি ষাট লাখ টাকা।
এবং তাকে যেসব বোনাস-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়:
১) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক রিজার্ভের টাকা হ্যাকিং পাওয়ার- যত খুশী হ্যাক করে নিয়ে নিতে পারবেন। এতে তার গবেষনায় প্রচুর সুবিধে হয়।
২) ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ স্লোগান দিয়ে ৪৬ হাজার কোটি টাকা এককালীন দেয়া হয়েছে- বাংলাদেশটাকে স্বপ্নে ডিজিটাল করে দেবার জন্য।
৩) অটিজম পরিবারের সদস্য হিসাবে আইটি উপদেষ্টর বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দেয়া হয়েছে ৬৭ হাজার কোটি টাকা এককালীন- অটিজমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করার জন্য।
৪) তার খালা লন্ডনে বসে একটা ১০০ পাউন্ডের কোম্পানী করে বাংলাদেশ রেলওয়ের সংগে ৭০ হাজার কোটি টাকার চুক্তি করেছে যে কাজটি ১০ হাজার কোটি টাকায় করে ফেলা যাবে- কিন্তু শিক্ষিত হিসাবে ৬০ হাজার কোটি টাকা উপরি দেয়া যাবে- রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে।
 
কারণ, বাংলাদেশের জনগণ তো টাকা-পয়সা রোজগার করে এই ‘শিক্ষিত ফ্যামেলী’কে পুষার জন্যই।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঝুড়িতে প্রায় ডজন খানেক ‘অনানারী ডক্টরেট’ ডিগ্রী রয়েছে। অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় ওনার কাছে নগদ টাকায় পিএইচডি ডিগ্রী বিক্রি করেছে।
 
সুতরাং শেখ হাসিনা এই পৃথিবীর সবচে ‘শিক্ষিত প্রাণী’।
 
তো এই ‘শিক্ষিত প্রাণী’টির অবশ্যই অধিকার রয়েছে দেশের অন্য রাষ্ট্র-নায়কদের নিয়ে, বিশেষত তাদের অর্জিত সার্টিফিকেট নিয়ে গবেষনা করার।
 
আর তাইতো তিনি বলেছেন- বেগম খালেদা জিয়া ম্যাট্রিক ফেল।
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মেট্রিক পাশ।
 
আচ্ছা! ডজনখানেক ডক্টরেট শেখ হাসিনা কি জানেন ‘মেজর জেনারেল’ কাকে বলে?
 
শেখ হাসিনা কি জানেন মেজর জেনারেল কোন ঠুনকো সার্টিফিকেট নয়? সশস্ত্র বাহিনীতে যে-কোন পদবী ‘একাডেমিক পদবী’ বা সার্টিফিকেট হিসাবেই পরিগণিত হয়। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন মেজর জেনারেল।
 
একজন ব্যক্তিকে সশস্ত্র বাহিনীতে ‘কমিশন’ প্রাপ্ত হতে হয় নির্দিস্ট শিক্ষার পরই।
 
ভ্যান চালক বিমানবাহিনীতে চা-বিস্কুট পরিবেশন করতে পারবে, ব্যাটম্যানের চাকুরী পাবে কিন্তু ‘কমিশনড’ হবে না হাজার বছরেও।
 
একজন কমিশন প্রাপ্ত ব্যক্তিত্বকে তার নায্য সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয়। মেট্রিক পাশ করে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেস্টতম পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পাপ্ত হওয়া যায় না- এটুকু জানতেও শিক্ষার প্রয়োজন হয়।
 
অতটুকু শিক্ষা শেখ হাসিনা নিজে অর্জন করেন নি।
 
শেখ হাসিনা ১৯৬৫ সালে এসএসসি পাশ করেছিলেন।
এবং ১৯৭৩ সালে বিএ পাশ করেছেন- পাস কোর্স করে।
শেখ হাসিনা কি তার এই শিক্ষার গ্যাপ এবং ১৯৭৩ সালের গণহারে পাসের বছর বিএ সার্টিফিকেটের ব্যাখ্যা দিতে পারবেন কোনদিন?
 
শেখ হাসিনা কি আদৌ ইডেন কলেজে পড়েছিলেন? পড়ে থাকলে কোন ক্লাশে? কারণ ৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষে ইডেনে ইন্টারমিডিয়েট সেকশনই ছিলো না যা উনি তার বায়োগ্রাফিতে উল্লেখ্য করেন। “ইডেনের ভিপি ছিলাম” এই পরিচয়টাও মিথ্যা ও বানোয়াট।
 
আচ্ছা! ভালো কথা।
একটা প্রংসগ চলে আসছে …
 
শেখ হাসিনা ২৭শে জুলাই ১৯৭১ সজীব ওয়াজেদ জয়কে জন্ম দেন।
ওই সময় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলছিল। বাংলার দামাল ছেলেরা তখন নিজেদের জীবনের সর্বচ্চো ঝুকি নিয়ে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধে প্রাণ দিচ্ছে। ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছিলেন। ২ লাখ মা-বোন তাদের ইজ্জ্বত দিয়েছেন পাকিস্তানী হানাদারদের।
 
আর শেখ হাসিনা ঠিক ‘ঐ সময়’টাতেই কিভাবে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর পাহাড়ায় ঢাকার পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত হসপিটালে বাচ্চা জন্ম দিতে পারলেন- পাকিস্তানীদের সহযোগীতা পেলেন?
এই সেই শেখ হাসিনা- যেই পরিবারের কেউ পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশগ্রহন করে তো নাই ই; উপরোন্ত প্রতি মাসে পাকিস্তানীদের কাছ থেকে ১৫০০ রুপী মাসিক ভাতা গ্রহন করেছে।
 
বাংলাদেশের সবচে বড় রাজাকার পরিবার তো শেখ মুজিবের পরিবার।
 
আর এই পরিবারের ‘রাজাকার শেখ হাসিনা’ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হিংসা করবেন- সেটা অস্বাভাবিক নয়।
 
বেগম খালেদা জিয়া মেট্রিক পাশ করতে পারেন নি। বেগম খালেদা জিয়া যে সময়ে মেট্রিক পরীক্ষা দিয়েছেন- সে সময় কতজন মহিলা বাংলাদেশে মেট্রিক পরীক্ষা দেবার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন?
 
সেটাও বড় কথা না।
বড় কথা হলো- ব্যক্তি শেখ হাসিনা এবং ব্যক্তি খালেদা জিয়াকে সামনা সামনি দাঁড় করান।
দু’জন কথা বলুক; আর আমরা তাদের পার্সোনালিটি দেখি।
 
কার মুখের ভাষা কতো ‘রুচি-জ্ঞান ও সভ্যতা’র প্রমাণ দেয়? 
 
 
যাই হোক।
শেষটায় কয়েকটা কথা বলি।
 
একজন মানুষকে ‘সভ্য ও জ্ঞানী’ হবার ‘অন্যতম’ মাধ্যম হলো একাডেমিক শিক্ষা। সভ্য ও জ্ঞানী হতে প্রয়োজন প্রচুর পড়াশোনা, পরিবেশ থেকে বিদ্যার্যন ও প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহন- প্রতিটি মানুষকেই শিক্ষক মনে করা এবং নিজের মানসিকতাকে বড় করা।
 
কিন্তু ‘একাডেমিক শিক্ষা’কেই যারা ‘একমাত্র রাস্তা’ মনে করে- সভ্য ও জ্ঞানী হবার জন্য- তাদের সার্টিফিকেট রয়েছে কিন্তু প্রকৃত শিক্ষা নেই।
 
বাংলাদেশের আকিজ গ্রুপ এর আকিজ সাহেব বা ঢাকার সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান নিজের নামও সই করতে পারেন না।
 
বাংলাদেশের ‘কে’ রয়েছেন- ডক্টরেট, এমবিএ সহ আরও হাজারো একাডেমিক ডিগ্রীওয়ালা- তাদের সামনে গিয়ে মাথা উচুঁ করে কথা বলতে পারবে? ততটুকু ‘শিক্ষার সার্টিফিকেট’ এই পৃথিবীর কোন বিশ্ববিদ্যালয় দেবার যোগ্যতা অর্জন করেনি- করবেও না কোনদিন।
 
মেশ পালক নিরক্ষর মুহাম্মদ (সা) আরব রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং সরকার প্রধান হিসাবে এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষের মর্যাদা পেয়েছেন।
 
জ্ঞান ও শিক্ষা অর্জন করতে হয় ব্যক্তির নিজস্ব যোগ্যতা দিয়ে।
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় তো দেয় কিছু কাগজের সার্টিফিকেট মাত্র।
 
‘সার্টিফিকেট’ আর ‘সভ্যতা ও জ্ঞান’ অর্জন এক বিষয় না।
শুধু সার্টিফিকেট দিয়ে যোগ্যতা অর্জনও হয় না।
   Send article as PDF