ভাষার ব্যবহার

এই পৃথিবীর আধুনিক তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তির যে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে তার সর্ম্পূর্ণ বা বলতে গেলে একক কৃতিত্ব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকা নামের দেশটির। দেশটা যে কতটা উন্নত ও আধুনিক তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব; কল্পনার চেয়েও বেশী।
সত্যি বলছি- এদেশের মানুষ চিন্তার গতিতে কাজ করে।

মূলতঃ যাদের চিন্তায় দেশটি আজকের এ অবস্থায় পৌচেছে বা এগিয়ে চলছে- তাদের মানে সাদা চামড়ার মানুষদের নিউ ইয়র্কের রাস্তাঘাটে তেমন একটা দেখা যায় না। নিউ ইয়র্ক সিটিতে চলাচলরত বড় বড় পাবলিক বাসগুলিতে এদের দেখা যায় না; সাবওয়েতে কদাচিত- তাও আবার শুধুমাত্র ম্যানহ্যাটন এলাকায়। সর্বত্র কালো, ল্যাটিনো আর বাংলাদেশীদের অবস্থান। কেউ কেউ অবশ্য গায়ের সাদা রংওয়ালা কিছু চাইনিজ বা স্পানিশ মেয়েদেরও সাদা চামড়ার মানুষ ভেবে ভুল করে থাকে!

আমেরিকানরা তাদের অত্যাধুনিক চিন্তা-ভাবনা আর কাজকর্মের সংগে সর্বদা বেশ মজার মজার বিষয়কেও সংযুক্ত করতে ভূলে না।

নিউ ইয়র্ক সাবওয়ের মেট্রোরেলগুলিতে কিছু পরামর্শমূলক প্রিন্টেড পোষ্টার বা লেখনী দেখা যায়।
OFFER YOUR SEAT TO AN ELDERLY, DISABLE, OR PREGNANT PERSON.Even Better, Add A SMILE.

আর একটি মজার লেখা দেখুন- সাবওয়ে ট্রেনে ব্যস্ততার কারণে সময় বাচাঁতে অনেকেই রেষ্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে আসেন চলতে চলতে খাবার খেয়ে নেন- তাদের জন্য:
IT’S A SUBWAY CAR, NOT A DINING CAR.

এরকম আরো অনেক, অনেক মজার মজার লেখা।

ও, হ্যাঁ; সাবওয়ে মেট্রো ট্রেনে অনেক মেয়েকেই মেক-আপ করতে দেখা যায়; অনেকে আবার জামা-কাপড়, জুতাও চেঞ্জ করে থাকে।

আমেরিকায় প্রায় সর্বত্রই সিসি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে- রাস্তাঘাট, দোকান-পাট, ঘর-বাড়ী সব স্থানেই বলতে গেলে। এদেশে কাজের মূল্য অনেক বেশী কাজেই ক্যামেরা বিশাল একটা ভরসা।


আমার বাসার পাশে একটি বাড়ীতে সিকিউরিটি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে নিরাপত্তার কারনে। সেখানে সুন্দর একটি সাইনবোর্ড লাগানো:
SMILE, You Are On Camera


সাবওয়েতে মাঝে মধ্যেই একটা রিয়েল ইষ্টেট কোম্পানীর বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে:’পৃথিবীর যে-কোন স্থানের ৫০০ স্কয়ার ফিট স্পেস-এর চেয়ে নিউ ইয়র্ক সিটির ৫০০ স্কয়ার ফিট স্পেস অনেক বড়!’

১৯৯৬ সালে আমি জীবনের প্রথমবার সাবওয়ে মেট্রো ট্রেনে উঠার সুযোগ পাই। সেটা আমার প্রথম ভারত ভ্রমণকালে- কলকাতা মেট্রোতে। তারও প্রায় ২০ বছর আগে চালু হওয়া ‘কলকাতা মেট্রো’ দেখে আমি বেশ অভিভুত ও উত্তেজিত। দমদম থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার ঘুড়ে বেড়ালাম।তবে, তখন আমার সবচে যে বিষয়টা ভাল লেগেছিল তা হলো কলকাতা মেট্রো সার্ভিসে নিয়মিত অডিও পরামর্শ ও ঘোষণার একটি অংশ।

হুবহু মনে নেই তবে মোটামুটি নিম্নরূপ:’ধূমপান করা যে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর- নিশ্চয়ই কলকাতা মেট্রো’র যাত্রীদের তা বলে দিতে হবে না; আমরা বিশ্বাস করি- তারা অবশ্যই সেটা জানেন।’

শ্রেফ ‘ধুমপান স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর’ এর পরিবর্তে কত চমৎকার ভঙ্গিমায় উপস্থাপনা। আমি অভিভূত।

আসুন না, আমরাও সবসময়ই চেষ্টা করি আমাদের অতি সাধারণ কথাগুলিও একটু বা যতটা সম্ভব অসাধারণভাবে উচ্চারণ করতে।

   Send article as PDF