দাদাগিরি

খবরটি বেশ মজার, হিন্দুস্থানের জন্য যথেষ্ঠ আশঙ্ক্ষারও।
 
শিলিগুড়ি করিডর দখল করে নেবে চীন : উদ্বিগ্ন ভারত
ডেইলী নয়াদিগন্তে প্রকাশিত পুরো সংবাদটিতে চোখ বুলাতে পারেন।
 
“শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন ভারতের সামরিক বাহিনী। কারণ চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী মনোভাব। যেভাবে ভুটান, সিকিমের নাকের ডগায় এসে চীনের পিপলস লিবারেশন অফ আর্মি (পিএলএ) নিয়ম করে মহড়া দিচ্ছে, পরিকাঠামো নির্মাণ করছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ক্রমাগত উত্তেজনা ছড়াচ্ছে তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ভারতীয় নৌবাহিনী প্রধান সুনীল লানবা এই আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, শিলিগুড়ি করিডরের ভৌগোলিক অবস্থান যথেষ্ট চিন্তায় ফেলছে। সামরিক বাহিনীর পরিভাষায় ‘চিকেন নেক’ শিলিগুড়ির ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিয়ে কোনো বিশেষ প্ল্যান নিয়ে চীন এগোচ্ছে কিনা সেটাই স্পষ্ট নয়। তবে শিলিগুড়ি করিডর যে চীনের নজরে রয়েছে সে ব্যাপারে নৌসেনা প্রধান নিশ্চিত। ভারতীয় মিডিয়ায় এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।”
 
ভুটানে আমার বেশকিছু ভুটানিজ বন্ধু রয়েছে- ঐতিহ্যগতভাবে তাদের সংগে চাইনিজ কালচারের দারুণ মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তারাও স্বীকার করতো- জীবন-যাত্রায় তারা চাইনিজদের মতোই।
 
এক সময়ের স্বাধীন দেশ সিকিম- ভারতের জোর-দখল করা রাজ্য এখন।
ছবির মতো সুন্দর দেশ সিকিম ভ্রমণের সুযোগও আমার হয়েছিল- ওখানকার মানুষগুলোও বেশ শান্ত, ভদ্র। চাইনিজ কালচারের প্রচন্ড উপস্থিতি সেখানেও আমার চোখ এড়ায়নি।
 
ভারতীয় দখলে থাকা রাজ্য ‘অরুণাচল প্রদেশ’ কে চীন এখনও তার নিজস্ব ভূমি মনে করে। গুগল ম্যাপে গেলে আপনি দেখতে পাবেন ‘অরুণাচল প্রদেশ’টি ভারত বা চায়না কারোরই নির্দেশিত নয়, লাল বর্ডারে অংকিত।
 
ভারতীয় পাসপোর্টে কারো জন্মস্থান অরুণাচল প্রদেশ লেখা থাকলে চায়না তাদের ভিসা দেয় না, ‘তোমরা তো চায়নারই অংশ- চায়না ভ্রমণে তোমাদের ভিসা লাগবে কেন?’
 
ভুটানের ডোকালাম নিয়ে তুলকালাম তো চলছেই- পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে ভারতীয় বাহিনী; সেখানে এখন চায়নিজ সেনাবহিনী স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছে।
 
টিবেট এর পালাতক বিদ্রোহী নেতা দালাইলামাকে ভারত রাজকীয় আশ্রয় দিয়েছে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়। সেখানে বসে প্রকাশ্যে চায়নার বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাচেছ এই বৌদ্ধ ধর্মগুরু দালাইলামা।
 
কাশ্মির এর ‘আকসাই চিন’ অংশটি চায়নার দখলে- যেটা নিয়েও ভারতের সংগে রয়েছে চায়নার গোলোযোগ।
 
এই সেদিনও ভারতীয় আধিপত্যে থাকা, বলতে গেলে ভরতীয় করদরাজ্য নেপাল আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতের বিরুদ্ধে শুধুই চায়নার মদদে। আজ নেপাল শুধুই চায়নিজ ব্লকে রাজনীতি করে যাচ্ছে। ভারতে পরোয়া করে না আজ অার বিশ্বের একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র নেপাল।
 
শুধুই চায়নার ভয়ে মালদ্বীপের ভারতীয় দালাল (বাংলাদেশের হাচিনা বা সিকিমের লেন্দুপ দর্জির মতো) সাবেক প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ নাশিদ এর অনুরোধ সত্বেও ভারতীয় সেনাবাহিনী এই তো সেদিন রওয়ানা হয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে মাঝ পথ থেকে; সাহসে কুলায়নি মালদ্বীপ পর্যন্ত যেতে।
 
শ্রী লংকায়ও আজ ভারতীয়দের আধিপাত্য নেই বললেই চলে।
তামিলদের (এলটিটিই) পরাজিত করার মধ্য দিয়ে এবং চায়নিজ বিনোয়োগ বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকে ভারত এখন শুধুই তাকিয়ে তাকিয়ে শ্রী লংকাকে দেখা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না।
 
আরেক প্রতিবেশী বার্মা যার পোষাকী নাম মিয়ানমার।
সম্পূর্ণ চায়নিজ নিয়ন্ত্রণে থাকা মিয়ানমার যখন রোহিংগাদের উচ্ছেদ করতে রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে, লাখ লাখ রোহিংগা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় খুঁজে বাংলাদেশে- তখন মিয়ানমার সরকারকে উৎসাহ দিতে নেপিডো ছুটে যায় মৌলবাদী সন্ত্রাসী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
 
প্রচন্ড হিন্দুত্ব-সন্ত্রাসবাদী নেতা নরেন্দ্র মোদী এই সেদিনও আমেরিকার তালিকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসাবে নথিভূক্ত ছিলেন; তার উপর ছিল আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞা- যেমনটা রয়েছে বাংলাদেশী সন্ত্রাসী শামীম উসমানের উপর আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞা; ছিল ওসামা বিন লাদেন এর উপরও।
 
আমেরিকার বিশ্ব রাজনীতি আজ মোড় নিয়েছে।
ইরাক ও আফগানিস্থান যুদ্ধের পর ধ্বসে পরা অর্থনীতি সামাল দিতে আমেরিকার বর্তমান ‘আমেরিকা ফাষ্ট’ নীতিতে তারা উপমহাদেশের রাজনীতিতে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। তারা নির্ভর করতে চচ্ছে ভারতের উপর অথবা চুপচাপ থাকা।
 
বাংলাদেশ নিয়ে তাদের আগ্রহ কম।
অপরদিকে ভারত তার দাদাগিরি বাহাদুরীর সবটুকু নেপাল-শ্রী লংকা-মালদ্বীপ থেকে হারিয়ে, পাকিস্তানের কাছে বার বার চপেটাঘাত খেয়ে এখন সবটুকু ঢেলে দিয়েছে বাংলাদেশের উপর। আর তার এ কাজে শুধুই ক্ষমতার গদি টিকিয়ে রাখতে ‘দেশী শীর্ষ-ভাদা’ শেখ হাসিনা তার ক্ষমতার সবটুকু ভারতকেই দিয়ে রেখেছে।
 
আর এ সুযোগে শেখ হাসিনা যখনই ভারতকে দূরে রেখে চায়নার দিকে টার্ণ নেবার চেষ্টা করে তখনই চপেটাঘাত পরে হাচিনার গালে। এই তো সেদিন পলাতক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে দিয়ে এক ঘা দেয়া হলো শেখ হাসিনাকে- যেটা ছিল শুধুই একটা স্যাম্পল।
 
যা-ই হোক, চায়না বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সুপার পাওয়ার।
চায়নার মূল পাওয়ার টাকা, ‘নগদ টাকা’। টাকা দিয়ে তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্বময়। সেই চায়না এই উপমহাদেশের পাকিস্তান, শ্রী লংকা, মালদ্বীপ, নেপাল, মিয়ানমার সবগুলি দেশকেই তাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিয়েছে।
 
চায়না আর যা-ই করুক ভারতের মতো দাদাগিরির নামে নোংড়ামীর খেলা খেলতে জানে না। তারা ‘শক্ত অর্থনীতি’ এবং ‘ডেভেলপমেন্ট’ এর নিশ্চয়তা দিয়ে হাতের মুঠোয় রাখতে চেষ্টা করে।
 
বিষয়টা এরকম ‘ভালবাসার বিনিময়ে ভালবাসা’।
আর ভারত যেটা করে ‘ক্ষমতার দম্ভে ধর্ষন’।
 
আমি বিশ্বাস করি সেই দিন বেশী দূরে নয় যখন চায়না এক ঝটকায় দখল করে নিবে ‘অরুণাচল প্রদেশ’ রাজ্যটি ভারতের কাছ থেকে। আমি সমর্থনও করি।
 
চায়না শিলিগুড়ি করিডোর দখলে নিবে কি না বা হাত দিবে কিনা সিকিমে- সেটাও সময়ই বলে দিবে। তবে ভুটানের ভালোবাসাও চায়না আদায় করে নিবে- সেটাও অনসীকার্য।
 
হাচিনার মরণের পর বাংলাদেশও ঘুড়ে দাঁড়াবে ভারতীয় অাধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে। আর তাতে চায়নিজ অনুকুল পরিবেশ তো শুধুই সময়ের খেলা।
 
সেদিন তো ভারত ভাংবেই।
ভারতকে সেদিন ভাংতেই হবে।
 
সৃষ্টি হোক ভারত ভেংগে ২৯টি নতুন স্বাধীন দেশ।
ধ্বংশ হোক ভারতের দাদাগিরি।
 
ভারত বড় দেশ- কিন্তু ভারতীয় রাজনীতিবিদদের মনটা বড় নয়।
বড় মন ছাড়া বড় দেশ টিকিয়ে রাখা অসম্ভব।
   Send article as PDF