প্রসংগ: সুরেন্দ্র বাবুর উপসংহার!

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ‘মুক্তিবাহিনী’ বা নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি গণবাহিনীর যোদ্ধারা যখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন পাকিস্তানী সেনাদের বিরুদ্ধে, যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলো দুর্দান্ত সাহসিকতায় তখন তাদের প্রধান হিসাবে কোলকাতায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ।
 
মূলত প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বেই চলছিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার। দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও তাকে সকল রকমের সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছিলেন। আসলে পুরো ভারত সরকারই তখন পরিপূর্ণভাবে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে যাচ্ছিল।
 
প্রায় ৭০/৮০ লাখ শরনার্থীর দায়, ইচ্ছুক মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং ও অস্ত্র-শস্ত্র প্রদান থেকে শুরু করে কোলকাতায় প্রবাসী সরকারকে সব-রকমের সহায়তাও চলছিল ভারত সরকারের বদান্নতায়।
 
কিন্তু ঠিক সেই একই সময়ে বাংলাদেশে- বিশেষ করে দক্ষিন বংগে ‘মুজিব বাহিনী’ নামে আরেকটি বাহিনীর জন্মলাভ করে। এই বাহিনী মুলত পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেও তাদের সফলতার উল্লেখযোগ্যতো সেভাবে তো ছিলই না উপরন্তু, ‘মুজিব বাহিনী’ প্রায়ই যুদ্ধরত ‘মুক্তি বাহিনী’র সংগেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তো।
 
‘মুজিব বাহিনী’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে ‘প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার’কে স্বীকারও করতো না- চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছে অনেক বার।
 
এই ‘মুজিব বাহিনী’ তৎকালে মুলধারার প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদকে হত্যা করার জন্য কোলকাতার প্রবাসী সরকারের অফিসে অস্ত্রধারী পর্যন্ত পাঠিয়েছিল- কিন্তু সেই অস্ত্রধারী যুবক তাজউদ্দিনকে হত্যা না করে আত্মসমর্পন করেছিল।
 
সকলের মাথায় প্রশ্ন আসবে কি উদ্দেশ্য ছিল- তাহলে ‘মুজিব বাহিনী’র?
 
তাহলে, আমি আজ একটা প্রশ্ন করি- ‘কি উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা?’
 
আমার এই প্রশ্নের উত্তর কি কেউ দিতে পারবেন?
 
আমিই দিচ্ছি।
শেখ হাসিনাকে পরিচালনা, রক্ষনাবেক্ষন করে চলছে ভারত সরকার তথা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
 
অার সুরেন্দ্র কুমার সিনহা-কে কে পরিচালনা করছে?
 
উত্তরটা খুঁজে নিই- চলুন:
 
সেদিনের ঐ ‘মুজিব বাহিনী’ প্রধান ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগিনা যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণি এবং তাদের সংগে ছিলেন ছাত্রলীগের তিন জঙ্গি ছাত্রনেতা আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ ও সিরাজুল আলম খান।
 
এবং আরও বড় তথ্যটি হলো ‘মুজিব বাহিনী’র জন্মদাতা, পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল ভারতীয় কেন্দ্রিয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ Research & Analysis Wing (RAW)।
 
হ্যা আমি ঠিকই বলছি, সেই সময়ই প্যারলালভাবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ ভিন্ন একটা কাজ করে যাচ্ছিল। যেটা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদকে ভারত সরকারের সমর্থন এর সংগে ‘যায় না’।
 
‘এভাবেই’ ‘ভারতীয় প্রশাসনযন্ত্র’ ‘খেলা’ করে থাকে- অনেকটা গিনিপিগ নিয়ে খেলা করার মতো।
 
আর তাইতো প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন পর্যন্ত তার কর্মকর্তাদের বলতে বাধ্য হয়েছিলেন- ‘যে-ই দেখি ভারতে যায় সে-ই ওদের প্রেমে পরে যায়; বিষয়টা কি? পাকিস্তানে গেলেও কারো কারো ওমন হয়। তবে ভারতের প্রেমেই পরে বেশী- কারণ পাকিস্তানীরা আবার আলাদা জাত। পাকিস্তানীরা সোজাসাপ্টা আর কখনও কখনও চুড়ান্তভাবে গর্দভ। আর ইন্ডিয়ানরা এমন কুটিল আর স্মার্ট যে মাঝে মাঝে আমাদের ওদের মতো করে চিন্তা করতে বাধ্য করে।’
 
আর তাইতো আমি অনেক বারই বলেছি, আজও বলছি- প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ভারতীয় ‘র’ নিয়ন্ত্রিত একটা পুতুল মাত্র।
 
মোদী খেলছে হাসিনাকে আর ‘র’ খেলছে বাবু’কে নিয়ে।
 
ভারত এভাবেই আন্তর্জাতিক রাজনীতি করে।
ভারতীয় প্রশাসনযন্ত্র এ খেলায় খুঁজে বের করলো ‘বাংলাদেশীদের বাস্তব অবস্থান’।
 
দেখলো বাংলাদেশীদের কি প্রতিক্রিয়া হয়।
এবং কি দেখলো জানেন?
 
হ্যাঁ। তারা দেখলো বাংলাদেশের মহান জনগণ, বাংলাদেশের বীর ছেলেরা অতি ব্যস্ত দিনাতিপাত করে চলছে তাদের প্রিয় ক্রিকেট নিয়ে, তারা ব্যস্ত রয়েছে সুন্দরী প্রতিযোগীতা নিয়ে, তারা ব্যস্ত আছে সেলিব্রেটিদের ব্যক্তিগত ‘রসালো জীবন’ খুঁজে বের করতে।
 
‘র’ আর ‘ভারত সরকার’ এর খেলার গেড়াকলে পড়ে যে কাঁতরাচ্ছে বাংলাদেশ- সেটা বাংলাদেশ নিজেই জানেও না।
 
   Send article as PDF