বাচ্চা হাতি

গেল বছর শীতের শুরুতে গিয়েছিলাম প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিটি দেখতে।
 
১৭৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘কলেজ অব নিউ জার্সী’র পরবর্তীতে ‘প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি’ হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে।
 
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিসেল ওবামা প্রিন্সটন গ্রাজুয়েট। আমেরিকা দুই জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে যারা প্রিন্সটন ষ্টুডেন্ট। আর ৪১ নোবেল লরিয়েটস এই প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি’র-ই জন্ম।
 
প্রিন্সটন ইউনির্ভাসিটিতে ঢুকলেই প্রথমে যে ভবনটি চোখে পরবে এবং আপনাকে অবশ্যই থেমে যেতে হবে- যে ভবনটি দেখলে; সেটা ‘নাসাও হল’।
 
আমরা জানি আমেরিকার প্রথম রাজধানী ছিল ম্যানহাটন, নিউ ইয়র্ক। এরপর ফিলাডেলফিয়া হয়ে তা থিতু হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি’তে।
 
আমরা কিন্তু জানি না যে, আমেরিকায় স্বল্পতম সময়ের জন্য আরও একটা রাজধানী ছিল। সেটা বৃটেনের সংগে আমেরিকার মুক্তিযুদ্ধকালিন সময়ে এবং সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল কারণে।
 
সেই রাজধানীটি ছিল এই নাসাও হলে।
১৭৮৩ সালের জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত আমেরিকার রাজধানী ছিল এই ভবনটি। নাসাও হল।
 
নাসাও হলটি যুদ্ধের সময় বৃটিশ হামলায় গোলার আঘাতে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থও হয়েছিল- আমি নিজে সেই গোলার দাগ দেখেছি সেদিন।
 
১৭৭৫ থেকে ১৭৮৩ এই ৮ বছরব্যাপী ‘আমেরিকান রেভুলেশনারী ওয়ার’ এর মাধ্যমে ইউনাইটেড ষ্টেটস অব আমেরিকা’ স্বাধীনতা লাভ করে গ্রেট বৃটেনের কাছ থেকে- এক ভয়ংকর আর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে।
 
তার আগে মুলত আমেরিকাও ছিল বৃটিশ কলোনী। অবশ্য ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তার ভিন্ন ভিন্ন অংশ স্পেন, ফ্রান্স ও পুর্তগীজদের দখলেও ছিল।
 
আমেরিকা বৃটিশদের পরাজিত করে তাড়িয়ে দেয়।
আমেরিকা যুদ্ধ জয় করে।
 
তারপর?
 
তারপর?
তারপর?
 
আমেরিকা পুরো পৃথিবীকেই জয় করে নেয়।
এ জয় স্বাধীনতার জয়, এ জয় অর্থনৈতিক জয়, এ জয় সক্ষমতার জয়।
 
এবং আজ?
সারা পৃথিবীতে আমেরিকার এক নাম্বার তাবেদার রাষ্ট্র হলো- সেদিনের সেই ‘শাসক’ গ্রেট বৃটেন।
 
আমেরিকা ডান বললে বৃটেনও বলে- ডান , আমেরিকা বাম বললে বৃটেনও বলে- বাম!
 
এবার চলুন আমরা চলে যাই এই একই পৃথিবীর অপর প্রান্তে।
যেখানে রয়েছে ভারত-বর্ষ।
 
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবং আমেরিকার উত্থানের শুরুতে সারা বিশ্বের একছত্র অধিপতি ‘গ্রেট বৃটেন’ তার ক্ষমতা হারতে থাকে। আস্তে আস্তে বাস্তবতার কাছে মাথা নত করে বৃটেন তার পুরো বিশ্ব জুড়ে থাকা কলোনীগুলিতে পতাকা নামিয়ে ফেলতে শুরু করে।
 
তারই ধারাবাহিকতায় তারা তাদের পতাকা গুটিয়ে নেয় ভারতবর্ষ থেকেও।
 
বৃটেন ভারত বর্ষ থেকে পতাকা নামানোর সময় দু’টি মারাত্মক ক্ষত সৃষ্টি করে দিয়ে যায়। এবং দু’টো ক্ষতই তারা করে মুসলিমদের হৃদয়ে।
 
এক ‘বাংলা ও মুসলিম’ বিরোধ, দাঙ্গা, দেশ-ভাগ এবং কিম্ভুমাকৃতির ‘পাকিস্তান রাষ্ট্র’ যার পরিসমাপ্তি ঘটে ১৯৭১ সালে এসে।
দুই ‘কাশ্মির ও মুসলিম’ বিরোধ যা এখনও জ্বলছে, পুড়ছে, মরছে ভারত-পাকিস্তান-চায়নাতে।
 
যাই হোক, আমরা চলুন পাকিস্তানের দিকে দৃষ্টি দিই।
 
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১।
ভারত বর্ষের পুবে আর পশ্চিমে’র ১৫০০ কিলোমিটার দূরত্বে দু’টি ভুখন্ড যার একক নাম পাকিস্তান। ভৌগলিক নাম পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। দু’টি ভুখন্ড মিলেই একটা স্বাধীন দেশ।
 
আমি আবারও বলছি ‘একটি স্বাধীন দেশ’ পাকিস্তান।
 
ঠিক একই রকম একটি দেশ এখনও এই পৃথিবীতে রয়েছে যেটা মালয়েশিয়া। তারও রয়েছে পূর্ব মালয়েশিয়া এবং পশ্চিম মালয়েশিয়া। মাঝখানে বিশাল সাগর। কুয়ালা লামপুরটা পরেছে পশ্চিম মালয়েশিয়াতে। আর পূর্ব মালয়েশিয়া এখনও পাহাড় আর জঙ্গলাকৃর্ণ।
 
সে যাগকে। বলছিলাম পাকিস্তান নিয়ে।
 
বলা হয়ে থাকে- পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের শাসন করতো; আমরা ছিলাম পরাধীন।
আমার প্রশ্ন- কেন এবং কিভাবে?
 
শাসন করা কাকে হবে?
এবং স্বাধীনতা কাকে বলে?
 
আমাদের শাসন করেছে ‘বৃটিশরা’; প্রায় ২০০ বছর। প্রথম ১০০ বছর শাসন করেছে বৃটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এবং পরবর্তী ১০০ বছর শাসন করেছে সরাসরি বৃটিশ গভর্ণমেন্ট। তারাই ভারত বর্ষের নাম দিয়েছিল ‘বৃটিশ ভারত’ এবং তারা লন্ডন থেকে গভর্ণর নিয়োগ করতো একজন বৃটিশকে। সেই সুদুর বিলাত থেকে নিয়ন্ত্রিত বৃটিশ গভর্নর তার ইচ্ছে মতো ভারত বর্ষ শাসন করতো। তখন ভারত বর্ষ পরাধিন ছিল।
 
পাকিস্তান আমলে কি ‘তাই’ হতো?
করাচী থেকে কি কোন গভর্ণর নিয়োগ করা হতো পূর্ব পাকিস্তান শাসন করার জন্য সর্বময় ক্ষমতা দিয়ে না কি পূর্ব পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা ছিল?
 
হ্যা। স্বাধীন প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা ছিল তখন। আর কেন্দ্রিয় সরকার পরিচালিত হতো রাজধানী করাচী থেকে।
 
এই পূর্ব পাকিস্তান থেকে উড়ে গিয়ে বাঙালী খাজা নাজিমুদ্দিন, মোহাম্মদ আলী, বাঙালী হোসেন শহীদ সরোয়ার্দী’রা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে পশ্চিম পাকিস্তানীদের শাসন করে এসেছে।
 
এই পূর্ব পাকিস্তান থেকে উড়ে গিয়ে বাঙালী খাজা নাজিমউদ্দিন পাকিস্তানের দ্বিতীয় গভর্নর জেনালের এবং প্রধানমন্ত্রীত্ব করে এসেছেন।
 
এবার বলুন- পরাধীনতা কাকে বলে?
পরাধীনরা কিভাবে প্রধানমন্ত্রী হতে পারে?
 
পরাধীনতার সংজ্ঞা’টা লিখুন দেখি?
বৃটিশ শাসনের ২০০ বছরে কোন ভারতবর্ষীয় কি লন্ডন গিয়ে প্রধানমন্ত্রীত্ব করে এসেছিল?
 
না। পূর্ব পাকিস্তান পরাধীন ছিল না কোন দিনও।
আপনি মিথ্যা শিখেছেন। ভুল শিখেছেন। হ্যা। পাকিস্তানে সামরিক শাসনাধীন হবার পর ১৯৭০ এর নির্বাচনে শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদীয় দল হিসাবে নির্বাচিত হয় কিন্তু সামরিক জান্তা শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রীত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানায়; এই একটা ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক অবিচার হয়েছিল। এবং সেখানে জুলফিকার আলী ভু্ট্টো, ইয়াহিয়া খান ও শেখ মুজিবের ত্রিমুখী চক্রান্তও ছিল। আম্লীগ, পিপিপি আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্ষমতার দ্বন্দ ছিল ওটা।
 
আর ১৯৪৭ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত ২৩ বছরে ৩জন বাঙালী প্রধানমন্ত্রী থাকা সত্বেও যদি বলেন দেশ পরাধীন ছিল- তাহলে আপনি স্রেফ মুর্খ। আপনাকে যে এসব শিখিয়েছে- সে মহামূর্খ।
 
‘স্বাধীনতা’ শব্দটি উচ্চারণ করার আগে আপনাকে এর প্রকৃত মিনিং জানতে হবে।
আপনি কি জানেন এখনও কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এর ‘গভর্ণর’ নিয়োগ দেয় বৃটিশ রানী! ইউনাইটেড কিংডম বা বৃটেনের পাশাপাশি কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ আরও প্রায় ডজনখানেক দেশেরও রাষ্ট্র প্রধান বৃটিশ রানী।
 
কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড কি স্বাধীন দেশ না?
 
যাই হোক, স্বাধীনতা!
 
পাকিস্তান আমলে কিছুটা স্বাধীনতা মানুষ দেখেছে। কিছুটা সভ্যতা দেখেছে। কাউকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হতো না। গুম করা হতো না। পুলিশ গুলি চালানোর সাহস পেত না।
 
অার আজ, বিচারপতিরাও সরকারের কেনা গোলাম। পুলিশ বিচারপতিরা কথায় কথায় মানুষ হত্যা করছে, গুম করছে, পুংগ করে দিচ্ছে নিরীহ মানুষদের, ভিন্নমতাবলম্বীদের।
 
পাকিস্তানীরা এসব করতো না।
মানুষ তখন আরেকটু স্বাধীন ছিল। রাষ্ট্র আরও সভ্য ছিল।
মানবতা আরেকটু বেশী ছিল। স্বাধীনতাও আরও একটা বেশী ছিল মানুষের জন্য।
 
হ্যা। শক্তি আর বুদ্ধির দাপটে পাকিস্তান আমলে শাসন ব্যবস্থা যেহেতু নিয়ন্ত্রিত হতো পশ্চিম পাকিস্তান (রাজধানী করাচী) থেকে এবং প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনও ছিল পশ্চিমীদের হাতে, সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনও ছিল তাদেরই হাতে। বর্তমান গোপালীদের মতোই ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছে সত্য কিন্তু অসভ্যতা ছিল না তখন।
 
তবে, তারা পূর্ব পাকিস্তানীদের সংগে ১৯৭০ এর নির্বাচনে সমতাভিত্তিক আচরণ করেনি।
অার করেনি বলেই আমরা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ করে তাদের বিদায় করে নিজস্ব স্বাধীন দেশ গড়েছি।
 
এরপর তো আর কোন সমস্যা থাকার কথা নয়।
পাকিস্তানীরা আমাদের সম্পদ নিয়ে যেত- এবার তো আর নিতে পারছে না। তাহলে তো এখন আমাদের ‘আমেরিকা’ আর পাকিস্তানীদের ‘বৃটেন’ হয়ে যাবার কথা?
 
তাই তো?
হয়েছি কি?
 
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- আজ পাকিস্তান আমাদের তাদের দেশে যেতে ভিসাই দেয় না। বলে, তোমরা পাকিস্তান গেলে ফিরো না- তাই ভিসা দেয়া হবে না।
 
এরপরও আপনি বলবেন আপনারা ‘বিজয়ী’?
বিজয়ী শব্দের অর্থ জানেন তো?
 
পাকিস্তান এখন পারমানবিক শক্তিসম্পন্ন একটা দেশ। কথায় কথায় ভারতীয় সেনাদের ‘জয় বাংলা’ করে দেয় তাদের বর্ডারে।
 
অার ভারত পাকিস্তানীদের সাথে না পেরে বাংলাদেশ সীমান্তে প্রতিদিন পাখির মতো গুলি করে আমাদের হত্যা করে যাচ্ছে।
 
আর আমরা স্বাধীনতা উপভোগ করছি!
কি দারুন স্বাধীনতা আমাদের!
 
একদিকে ভারতের বিএসএফ গুলি চালাচ্ছে আমাদের বুকে!
আরেক দিকে ভারতীয় দালাল শেখ হাসিনার অবৈধ গোপালগঞ্জ সরকারও গুলি চালাচ্ছে আমাদের বুকে।
 
আর আমরা বলছি আমরা স্বাধীন।
বাহ, কি চমৎকার স্বাধীনতা।
 
পাকিস্তানী সেনা শাসনের সময় করাচীর অফিসাররা আমাদের প্রশাসন চালাতো, এখন গোপালগঞ্জের লোকজন এসে আমাদের প্রশাসন চালায়।
 
সুতরাং আমরা স্বাধীন!
এটাকে স্বাধীনতা বলে না।
 
যেদিন পাকিস্তান আমাদের তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারবে- সেদিনই শুধু আমরা মাথা উচুঁ করে বলতো পারবো- ‘অামরা স্বাধীন আমরা বিজয়ী’; তার আগে নয়।
ঠিক যেমনটা সম্পর্ক আজ আমেরিকা ও বৃটেনের মধ্যে।
 
মুখের কথায় স্বাধীনতা হয় না।
পাকিস্তান অনেক দূর চলে গেছে- আপনারা শুধু তাদের ‘গালি’-ই দিতে পারবেন; অন্য কিছু করতে পারবেন না। সেই ক্ষমতাই আপনার নেই। সেই যোগ্যতাই আপনার নেই। আপনি যে আরও নীচে নেমে গেছেন সেটাও আপনি জানেন না। সরকারগুলি আপনাকে তা জানাতেও দেয় নি।
 
আজ আপনার মাথার উপর ৪৫,০০০ টাকার ঋণ ঝুলছে- এটা কি আপনি জানেন?
এই ঋণ করেছে সরকার; আর তার দায়িত্ব আপনার।
 
এই ঋণের টাকা দিয়ে জয়কে দেড় কোটি টাকা মাসে দেয়া হচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু ৪০ হাজার কোটি টাকায় তৈরি করা হচ্ছে- মেরে দেয়া হচ্ছে নগদে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এভাবেই লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা চুরি করে যাচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই অবৈধ সরকার।
 
পাকিস্তানে তা হয় না।
এমনকি ভারতেও তা হয় না।
 
আর তাই পাকিস্তান ভারতীয় সেনাদের ‘জয় বাংলা’ করে দেবার স্পর্ধা দেখাতে পারে।
আর, তাই ভারতও বাংলাদেশীদের ‘জয় ইন্ডিয়া’ করে দিচ্ছে প্রতিদিন কথায় কথায়।
 
আপনারা কথায় কথায় বলেন ‘বাংলাদেশ নাকি পাকিস্তানের চেয়েও উন্নত’। গেছেন কোনদিন ইসলামাবাদ? একবার গিয়ে দেখে আসুন। ওদের দেখলে এমনিতেই শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে থাকবে।
 
ঘরে বসে বসে ‘ঘেউ ঘেউ’ তো অনেক প্রাণীই করতে পারে। আপনি তো নিজেকে মানুষ ভাবেন- তাই না? কিন্তু যাবেন কি ভাবে? ওরা তো আপনাকে ভিসাই দিবে না!
 
যাই হোক। সেদিন আমি একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। স্রেফ মজা করেই লিখেছিলাম, ‘পাকিস্তান ইন্ডিয়াকে ‘জয় বাংলা’ করে দিল! নিজেকে আজ ‘রাজাকার রাজাকার’ মনে হচ্ছে!! ‘জয় পাকিস্তান’!!!’
 
কিন্তু আরও মজার বিষয় হলো, যা আমি ভাবতেও পারিনি যে ১২ ঘন্টার মধ্যেই এই সামান্য মজার স্ট্যাটাসটি প্রায় ১১শত লাইক ছাড়িয়ে যায়।
 
এই হতভম্বতা থেকেই আজকের এই আর্টিকেল।
আমি ক্রিকেট খেলা দেখি না। সময় নেই। সেদিনের সেই খেলাটির নামও আমি জানি না। কত ওভারের খেলা ছিল তাও জানি না। শুধু জানি লন্ডনে পাকিস্তান-ভারত খেলাটি হয়েছিল। পাকিস্তান ভারতকে হাড়িয়েছে। ফেসবুক গরম।
 
বাংলাদেশের মানুষ ‘ভারতের পরাজয়’ উদযাপন করছে।
সেদিন পাকিস্তানের জায়গায় শ্রী লংকা থাকলেও আমরা ‘ভারতের পরাজয়’ উদযাপন করতাম।
 
আমি সেদিন বাংলাদেশকে দেখেছি ‘শেখ হাসিনামুক্ত বাংলাদেশ’ হিসাবে!
কি উৎসাহ, কি আনন্দ। ‘ভারত ও হাসিনার পরাজয়’ উদযাপন এর আনন্দ।
 
ভারত নিজেকে শক্তিশালী আঞ্চলিক শক্তি মনে করে।
তারা ভাবে এতদঅঞ্চলে তারাই বাহাদুরী করবে। শুধুমাত্র পাকিস্তান আর চীনকে দেখলে ভয়ে হিসু করে জামা-কাপড় নষ্ট করে ফেলে।
 
২০০৬ সালের আগেও ভারত- বাংলাদেশের উপর ‘ছড়ি’ চালাতে পারতো না।
 
এখন পারে।
এবং অত্যন্ত দুঃখজনক সত্যিটা হলো সেই সুযোগ ভারতকে দিয়েছে শেখ হাসিনা আর কথিত শাগবাগের গণজাগরণ মঞ্চ নামের প্রকৃতপক্ষে দেশী জারজ মিডিয়াগুলি। ভারতীয় কিছু দালাল তো দেশে রয়েছেই যেগুলি মুলত বাম, নাস্তিক নামের সেকুলাংগাররা।
 
এরা বাংলাদেশে ভারতীয় হস্তক্ষেপে আহ্বলাদিত হয়।
খেলায় ‘ভারতের পরাজয়’ উদযাপনকে পাকিস্তান প্রেম বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায়।
 
আর এই বিশেষ শ্রেনীটার হাতেই এখন ক্ষমতার নিয়ন্ত্রন এবং তা জোর করে, অবৈধভাবে।
 
বাংলাদেশের মানুষকে দু’টি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
মহাশক্তিশালী নমরুদ, ফেরাউনরা চিরজীবন ক্ষমতা ভোগ করতে পারেনি। শক্তিশালী সাদ্দাম, মার্কোস, গাদ্দাফিরাও পারেনি। আর শেখ হাসিনাতো তাদের তুলনায় স্রেফ তেলাপোকা- সিকিমের কাজী লেন্দুপ দর্জি সমতুল্য।
 
শেখ হাসিনাকে যেতেই হবে টুডে আর টুমরো।
 
এরপর।
প্রথম যে কাজটা করতে হবে সেটা হলো ‘জঞ্জাল মুক্ত বাংলাদেশ’।
এসব নোংড়া, মিথ্যা আর ধর্ম অার নীতি-নৈতিকতাহীন সেকুলাংগারদের জিরো টলারেন্সে উচ্ছেদ করতে হবে বাংলাদেশের এই পবিত্র মাটি থেকে।
 
দুই, শক্তিশালী জাতিয়তাবাদী মিডিয়া প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল-জাজিরার মতো। প্রয়োজনে বাংলাদেশের বাইরের মাটিতে হলেও।
 
এ দু’টো কাজ অত্যন্ত জরুরী।
নইলে মানুষের ঘাড়ে ‘আরও কোন শেখ হাসিনা’ এসে চেপে বসবে।
 
আর শেষটায় শক্তিশালী কৌশলগত সম্পর্ক তৈরী করতে হবে আমেরিকা ও চায়নার সংগে। ভারতকে কোন ছাড় নয়। প্রয়োজনে সোভিয়েট ইউনিয়নের মতো ভারতকে ভেংগে ৩০টি টুকরা করতে যা যা করা দরকার- তার সবটুকুই করতে হবে আমাদের।
 
ভারত তো স্রেফ একটা বাচ্চা হাতি। এক পাশে পাকিস্তান, উত্তরে মহাশক্তিধর চায়না। পূবে বাংলাদেশ এবং জলন্ত অগ্নিকুন্ড কাশ্মির। অনেক হিসাব বাকী রয়েছে ভারতের। অনেক পাওনা।
 
পিছে ফেলা যাবে ভারতকে সময় মতো।
শুধু দরকার সময় আর সুস্পষ্ট কৌশলী সিদ্ধান্ত।
 
বিশ্ব মোড়ল, মহাশক্তিধর আমেরিকার তার মেক্সিকো বা কানাডা সীমান্তে কোনদিন মানুষ হত্যা করে ক্ষমতাধর হয়নি, মেক্সিকো বা কানাডা সীমানা এখনও প্রায় উম্মুক্ত। আর সেটা শিখতে ও সভ্য হতে ভারতকে গো-মুত্র খাওয়া ত্যাগ করে আরও ২০০ বছর জ্ঞান চর্চা করতে হবে।
 
১৯৭১ সালের পর থেকে মুক্তিযুদ্ধে হেল্প করার বিনিময়ে- ভারত আমাদের যা ক্ষতি করে যাচ্ছে তার প্রতিশোধের কোন বিকল্প নেই।
 
   Send article as PDF