ব্লাক হোল :: ২

তুমি তো আমাকে খোঁজ করছিলে
শুধুমাত্র হিমালয় ও কাঞ্চনজংঘার আশপাশ দিয়ে

ঠিক যে সময়টাতে আমি তোমার জন্য দৌড়ঝাপ করছিলাম
প্যাসিফিকের পাড়ে সান্তা মারিনার বীচ ধরে, পুরো ওয়েষ্ট কোষ্টে।

তাহলে পাবে কিভাবে বলো?
কাঞ্চনজংগা, হিমালয়ের মাউন্ট এভারেষ্ট
রকি ও আন্দেজ পর্বতমালায়ও আমি তোমাকে খুঁজেছি
অনেক বছর আগে। সেটা তো আসলে তুমি জানতেই পারো নি।

তোমার আমার কষ্টটুকুতে যদিও মিল অনেক বেশী
কিন্তু দু’জনের কষ্টের কালার কিন্তু একই রকম ছিল না।

আমি তো সাদা পছন্দ করতাম,
সেজন্য গন্ধরাজের মতো ধবধবে সাদাই ছিল আমার প্রথম পছন্দ!

অথচ, দেখ, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস,
আমি পেলাম রক্তজবার মতো লাল টকটকে কষ্ট
(যেন বুক ফেরে চুইয়ে চুইয়ে পরছে সব) আর তুমি?
কাঁচা হলুদ রঙের মতো কষ্ট তোমার পছন্দ
কিন্তু তা আর হলো কোথায়?
তোমার কষ্টের রঙ হয়ে গেল গাঢ় বেগুনী।

রংধনুর সাতটি রঙ-এর মধ্যে তুমি ছিলে আমার ঠিক বিপরীত প্রান্তে।
আমাকে চটজলদি খুঁজে পাবে কিভাবে বলো? আর তাইতো তোমার
সময় লেগেে গেল দীর্ঘ ১৩টি বছর। এতো কষ্ট কি সহ্য করা যায়?

আর আমি কিন্তু টানা ২০টি বছর তোমাকেই খুঁজে বেড়াচ্ছিলাম।
আটলানটিক, প্যাসিফিক, ইন্ডিয়ান আর আর্কটিক ওসেন
নর্থ ও সাউথ পোল- কোনটা বাদ রেখেছি বলো তো!

প্যাটাগনিয়ার তোমাকে খুঁজেছি কমচে-কম ২ বছর।
খুব ঝামেলাপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থাতো,
বুঝতেই পারো একটু বেশী সময় লেগে গেল।

ওদিকে সাইবেরিয়া, আলাস্কা আর গ্রীনল্যান্ড
কোথাও বাদ দেইনি তোমাকে খুঁজে পেতে।

কিন্তু কপাল কিছু তোমারও অনুকুলে ছিল না।
আমাকে খুঁজতে গিয়ে তুমি গোবী মরুভূমির কঠোর তাপে গেলে হারিয়ে।
সেখানে আবারও ভুল করলে তুমি, সংগী করলে এক গোবী উটকে!
কি হলো এতে তোমার সময়ক্ষেপন ও কষ্টের আকৃতি বৃদ্ধি ছাড়া?
কতগুলো বছর তুমি সেখানে আটকে ছিলে- একটি বার কি ভেবে দেখেছো?
কিভাবে পাবে আমায় চটজলদি?

আমি তো তোমাকে সাহারায় খুঁজেছি, খুজেছি ভিক্টোরিয়াতেও।

নায়াগ্রা জলপ্রপাতের যে জলরাশী-
তার প্রতিটি ঢেউয়ে আমি তোমাকে খুঁজেছি।
সত্যি বলছি, প্রতিটি ঢেউ আমি উল্টে পাল্টে দেখেছি।
কিন্তু সেখানেও পাইনি তোমাকে। তুমি তো আটলানটিকই পার হওনি।
তাহলে, আমি জানবো কিভাবে?
তাছাড়া তুমি কি বলেছো কখনও তা আমাকে?
সারাক্ষন চুপচাপ থাকো। তুমি চুপ থাকলে আমি বুঝবো কিভাবে?

ধরো, তোমার কষ্টের রঙ যদি হতো কালো,
আর আমার তো সাদাই ছিল প্রিয় পছন্দ;
তাহলে কিন্তু তোমাকে আমি প্রথম যৌবনেই খুঁজে পেতাম অনায়াসে।
কোন অভিযোগ করার সুযোগই আমি তোমাকে দিতুম না।

বিশ্বাস করো,
তোমাকেই খুঁজতে গিয়ে গ্রান্ড ক্যানিয়ানে
খরস্রোতা কলোরাডো নদীর গভীরে একবার পরে যাই;
আর তোমাকে তো আগেই বলেছি যে,
সেবার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের পাশে-
গভীর জলে জেলি ফিসের কামড়ও হজম করতে হয়েছে আমাকে।

তাহলে আমার দোষটা কোথায়, সামান্য দেরীর জন্য?

বড্ড বেশী দেরী হয়ে গেল- তাই না?
তবুও, দেখা তো হলো, পেলুম তোমাকে- এটাই বা মন্দ কি?

যদি শেষ পর্যন্ত দেখাটাই না হতো!
পাওয়াটাই মুল কথা। তাইনা? তুমিই বলো।

   Send article as PDF