ইঞ্জিনিয়ার সজীব ওয়াজেদ জয়

আমি সাধারণতঃ আমার জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখি।
কিনতু ‘নিজের’ কথা খুব একটা লিখি না।
আজ আমার একটা দক্ষতার বিষয়ে বলবো।

একটা সময় পর্যন্ত আমার টাইপিং স্পীড ছিল বাংলা এবং ইংলিশ দুটো’তে-ই 100WPM
বিষয়টা অনেকেই হয়তো বুঝবেন না; একটু বুঝিয়ে বলি।

যেমন, ‘বাংলাদেশ’ একটি সম্পূর্ণ শব্দ বা ওয়ার্ড।
আমি এই ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি ১ মিনিটে ১০০ বার টাইপ করতে পারি বাংলা বা ইংলিশ যে-কোন ভাষাতেই।

আমি প্রফেশনাল টাইপিষ্ট নই, কোনদিন চাকুরীও করিনি।
সাধারণত 85WPM টাইপিং স্পীডকেই হাইলি স্টান্ডার্ড স্পীড হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

এবার পেছনের গল্পটা বলি।
সেটা ১৯৯৪ সালের সেপ্টেম্বার মাস। আমি আমার জীবনের প্রথম কমপিউটার কিনবো।

তার আগে আমি ৩ মাসের একটি কমপিউটার বেসিক ট্রেনিং নিয়েছি। তখন ছিল ৮০২৮৬ মেশিন। হার্ড-ড্রাইভ ছিল না। ছিল সোয়া পাঁচ ইঞ্চ ফ্লপি ড্রাইভ এবং সবে মাত্র সাড়ে তিন ইঞ্চ ফ্লপি ড্রাইভ বাজারে এসেছে। উইন্ডোজ ছিল না। আইবিএম কমপিউটারে এমএস ডস মোডে ওয়ার্ড ষ্টার, লোটাস আর ডিবেস ছিল মূলত সফটওয়ার।

তখন ঢাকাতে হাতে গোনা কয়েকটি কমপিউটার সিষ্টেম তৈরী অফিস ছিল। ধানমন্ডি ৭ নাম্বার রোডে এমনই একটি প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী ছিল- ইন্টিলিজেন্ট ট্রেড সিষ্টেমস লিমিটেড। ওরা আমাকে একটি কনফিগারেশন দিল- তখনকার লেটেষ্ট সিষ্টেম ৮০৩৮৬ মাদারবোর্ড, ৪এমবি হার্ড ডিক্স, ১এমবি র্্যাম, মনিটারসহ সব মিলিয়ে ৪৩,০০০ টাকা।

যেদিন আমার কমপিউটার ডেলেভারি নিতে গেলাম; সেদিন দেখলাম খুব হ্যান্ডসাম এবং অত্যন্ত আকর্ষনীয় চেহারার এক যুবক আমার কমপিউটারে সফটওয়ার ইনষ্টল করছে।

সে আমাকে ওয়ার্ড ষ্টার এর পরিবর্তে ওয়ার্ড পারফেক্স, লোটাস ও ডিবেস এবং ডসসেল এর অপারেটিং শিখিয়ে দিল।

তার ভেতর দু’টি চমৎকার দক্ষতা আমাকে খুবই মুগ্ধ করেছিল।
একটা হলো সে চমৎকার গ্রাফিক্স এর কাজ জানে এবং তার টাইপিং স্পীড অসম্ভব বেশী।

যখন সে আমার সামনে টাইপ করছিল- আমার মনে হচ্ছিল কী-বোর্ডে মনে হয় আগুন ধরে যাবে।

আমাকে সে দিন তিনেক ট্রেনিং দিয়েছিল; সে ছিল ওই অফিসের একজন এমপ্লয়ী। আমার ভীষন ইচ্ছে হল আমারও এরকম স্পীড হওয়া চাই।

ওই যে চাইলাম, আর হয়ে গেল।

যা-ই হোক, সেদিনের সেই ছেলেটা ছিল আজকের প্রধানমন্ত্রী (তখনকার সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী) শেখ হাসিনার ছেলে ‘সজীব ওয়াজেদ জয়’ যে আজ প্রায় এক কোটি ষাট লাখ টাকা মাসিক বেতনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইটি উপদেস্টা (যদিও তার আইটি নলেজের চেয়ে গ্রাফিক্সের দক্ষতা অনেক অনেক গুন বেশী।)

হার্ভর গ্রাফিক্স সফটওয়্যারটি জয়-ই আমাকে শিখিয়ে ছিলেন।

ঢাকার নবাবগঞ্জে গিয়ে আমার অফিসে ঐ কমপিউটার সিষ্টেমটি সেটআপ করে দিয়ে আসার কথা ছিল সেই সেলসম্যান কাম ইন্ডিয়া থেকে পাশ করা হার্ডওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সজীব ওয়াজেদ জয় এর।

কিন্তু তৎকালিন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে জরুরী চিকিৎসার জন্য সিংগাপুর যাবার প্রয়োজন হলে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সিংগাপুর চলে যান।

এবং তার পরিবর্তে অন্য একজন আমার কমপিউটারটি সেটআপ করে দিয়ে আসেন।

 

   Send article as PDF