বাঙালী ও মুজিব

একটা বিষয় কোন ভাবেই আমার মাথায় ঢুকে না।
আমার নিজেরই বুদ্ধি ‘অনেক বেশী মাত্রায় কম’ কি-না ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।
অধ্যপক আনিসুজ্জামান নাকি গতকাল বলেছেন, ‘বংগবন্ধুর স্বপ্নের যে বাংলাদেশ সেটা আমরা হারিয়ে ফেলেছি’। উনি একজন শিক্ষক। উনার কাছ থেকে আমাদের শিক্ষা নেবার কথা! কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন! ওনার নিজের শিক্ষা কতটুকু?
গত প্রায় ৮ বছর যাবৎ ওনার দল (আওয়ামী লীগ) রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে রেখেছে- আর এখন তার মুখ থেকে আমাদের শুনতে হচ্ছে- এটা নাকি শেখ মুজিব চাচ্চুর স্বপ্নের দেশ না! তাহলে?
– ওনারা আর কি চাচ্ছেন?
এই ভদ্রমহাশয় আরও বললেন, ‘রক্ত মাংসের একজন সাধারণ রাজনৈতিক কর্মী থেকে বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলনের মহাকাব্যিক চরিত্র হয়ে উঠেছিলেন মুজিব চাচ্চু। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত কতবার যে তিনি কারাবরণ করেছেন তার কোন ইয়েত্তা নেই।’
১) মানুষ তো রক্ত মাংসেরই হয়!
২) ‘বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলনের মহাকাব্যিক চরিত্র’ এই কথাটার মানে আমি বুঝতে পারিনি। অধ্যপক আনিসুজ্জামান সাহেব কি আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন যে ওনি ‘বাঙালী’ শব্দটার অর্থ ঠিক কি বুঝেন বা বুঝাতে চেয়েছেন?
(ক) প্রাথমিক ভাবে যাদের মাতৃভাষা বাংলা- তাদেরই বাঙালী বলা হয়ে থাকে। এই বাঙালীদের মূলত বসবাস তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তানে, ভারতের পশ্চিম বংগে, ভারতের আসম, ত্রিপুরাসহ উরিষ্যা, বিহার, আন্দামান ও নিকোবর আইল্যান্ডস এও বেশকিছু বাঙালীর বসবাস। তো, মুজিব চাচ্চু কিভাবে ঠিক ‘বাঙালীর স্বাধীনতা আন্দোলনের মহাকাব্যিক চরিত্র’ হয়ে গেলেন?
(খ) আন্দামানের ও নিকোবর আইল্যান্ডস এর বাঙালীদের কি স্বার্থ শেখ মুজিবের? অতদূর না হয় না-ই গেলাম; পশ্চিম বংগের মূল বাঙালীদের কাছে শেখ মুজিবের কি গুরুত্ব রয়েছে- শুনি?
২) ১৯৪৮ থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত কতবার যে তিনি কারাবরণ করেছেন তার কোন ইয়েত্তা নেই। মি. আনিসুজ্জামান- আপনার পেশা শিক্ষকতা। আপনি রাত জেগে যদি পড়াশোনা করেন- সেজন্য কি আপনি আমাদের কাছে দু’টো সালাম বেশী চাবেন?
যার যেটা পেষা- তাকে তো সেটার ফলই ভোগ করতে হবে; তাই নয় কি?
মুজিব চাচ্চু রাজনীতি করেছেন- জেল খেটেছেন; এটাই তো স্বাভাবিক। আমি তো অস্বাভাবিক কিছু পেলাম না এখানে।
৩) মুজিব চাচ্চু নিজে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবার জন্য রাজনীতি করেছেন। রাজনীতি মানেই ক্ষমতায় যাওয়া এবং তার জন্য যা যা করা দরকার তার সবই করা।
অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দেখা যাবে- যারা ক্ষমতায় যেতে পারেননি। তাদের নিয়ে কিন্তু কেউ মাথা ঘামায় না। যারা ক্ষমতায় যেতে পারেন- তাদের ই ইতিহাস মনে রাখে। এটাই বাস্তবতা।
৪) মুজিব চাচ্চু ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন- কিছুদিন প্রেসিডেন্ট, আবার কিছুদিন প্রধানমন্ত্রী, আবার শেষটায় প্রেসিডেন্ট। তিনি নদীর একুল ওকুল দুই কুলেই দৌড়াদৌড়ী করছিলেন- কোন দিকে বেশী সুখ সেটার খোঁজে।
৫) আমরা একজন মানুষকে বিবেচনা করবো- তার ক্ষমতায় থাকা-কালিন সময়টাকে। তিনি কিভাবে ক্ষমতায় এসেছেন- সেটা দেখার কোন দরকার আমার নেই।
৬) শেখ মুজিব চাচ্চু নন; পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের দাবী ছিল পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হবার; শেখ মুজিব সে দাবী মিটানোর চেয়ে নিজের প্রধানমন্ত্রীত্ব পেতেই বেশী ব্যস্ত ছিলেন। ইতিহাস ঘাটলে অন্তত সেটুকুই বোঝা যায়।
৭) ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত শেখ মুজিব বাংলাদেশ কে কি দিয়েছেন? এবং অপর দিকে তিনি নিজে এবং নিজের পরিবারের জন্য কিকি নিয়েছেন? এবং তার ১৫ই আগষ্ট তারই রেজাল্ট প্রকৃতি তাকে দিয়েছে। এগুলিই ইতিহাস।
আমি দিন কয়েক আগে জাতির ডাডি (মুজিব চাচ্চু) কে নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেখানে একটা প্রশ্ন ছিল আমার- শেখ মুজিব চাচ্চুর জীবনীর ঠিক কোন আদর্শগুলি আমাদের মেনে চলা উচিৎ?
না। আমি একটি আদর্শেরও সন্ধান পাই নি কারো কাছ থেকে। আর আমার সামনে তার যা যা আদর্শ বা স্বপ্ন দেখছি- তা হলো ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও জংগী কার্যক্রম, শেখ হাসিনার ভারতের নিকট দেশটাকে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া। দেশে নতুন কোন কর্মসংস্থান নেই, নেই ব্যবসায়ের সুযোগ। পুলিশ দেশের সববে ভয়ংকর সন্ত্রাসী সংগঠন। আওয়ামী লীগের লোকজন দেশটাকে চুষে চুষে খাচ্ছে!
এসবই শেখ মুজিব চাচ্চুর স্বপ্ন, তার দেখানো আদর্শ।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামন সাহেব- আমার কথাগুলির উত্তর কি দেয়া যাবে?
আরেকটা উদাহরণ দিই।
প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়া ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল এরশাদ। দু’জনেই সামরিক বাহিনী থেকে ক্ষমতা নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট এরশাদ দেশ শাসন করেছেন প্রায় ৯ বছর আর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশ শাসন করেছেন মাত্র সাড়ে চার বছর।
বাংলাদেশের মানুষকে জিজ্ঞেস করুন তো- বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে কার অবস্থান রয়েছে? এবং কেন?
ক্ষমতায় যাওয়া এবং ক্ষমতায় যেয়ে মানুষের জন্য; আবারও বলছি ‘শুধুমাত্র নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জন্য’ কাজ করতে পারাটাই মানুষ বিবেচনা করবে।
আপনার শেখ মুজিব বা জেনারেল এরশাদ, হাসিনা কিংম্বা খালেদা জিয়াকে কিন্তু মানুষ তাদের হৃদয়ে স্থান দেয় নি- দিতে পারেনি।
সাধারণ মানুষের ভালবাসায় একমাত্র প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান-ই সিক্ত হয়েছেন। আদর্শ খুঁজতে হলে- প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মধ্যে খুঁজুন- পেয়ে যাবেন।
মি. আনিসুজ্জামান সাহেব, শুনুন।
আপনাদের মতো কিছু জাতিয় কুলাঙ্গারদের জন্যই, আরও যদি স্পষ্ট করে বলি- তাহলে বলতে হবে আপনি, ড. আনোয়ার হোসেন, ড. মুনতাসির মামুন, ড. জাফর ইকবাল এদের মতোই কিছু কুলাঙ্গারদের জন্যই আজ বাংলাদেশটা ধ্বংসের দাড়প্রান্তে এসে দাড়িয়েছে।
শিক্ষক হবার কোন যোগ্যতাই আপনাদের নেই- অাপনারা বস্তাপচা গোলআলু- ডাষ্টবিনই আপনাদের যোগ্য স্থান।
   Send article as PDF