চলুন আমরা ঘুমাই

তুমি আমার, আমি তোমার
এভাবে চিরটা কাল তোমার-আমার;
 
তোমাকে আমি আমার হৃদয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছি
আর চাবিগুচ্ছ সমুদ্রে ছুরে মেরেছি।
 
এটা একটা ইংরেজী কবিতার বাংলা অনুবাদ। মুল কবি বা অনুবাদকের নামও মনে নেই। কবিতাটুকু মনে আছে।
 
কবিতাটা কিন্তু দারুণ কার্যকরী।
বিশ্বাস হচ্ছে না?
 
কোন মেয়ের উপর কবিতাটা এপ্লাই করুন- কাজে দিবে!
দেখুনই না ট্রাই করে- দেখতে তো ক্ষতি নেই। পরে না হয় সরি টরি বলে, মাথায় হাত বুলিয়ে মা-টা সম্মোধন করে পিছিয়ে আসতে পারবেন।
 
কবিতা আমার সবসময়ই অতি প্রিয়।
অসংখ্য কবিতার বই পড়তাম। আবৃতি শুনতাম। শিমুল মোস্তাফার ভরাট গলা আমাকে সত্যিই তৃপ্তি দিতো।
 
আমার অসংখ্য প্রিয় কবিতার লেখক ছিলেন তসলিমা নাসরিন।
অত্যন্ত সমালোচিত এবং নষ্ট চরিত্রের তসলিমা নাসরিন শেখ হাসিনার বদান্নতায় দেশ আর নাগরিকত্ব ছেড়ে এখন ভারতবাসী এবং তার চরিত্র এতটাই পচে গেছে যে সেই সংগে লেখার মানও নষ্ট হয়ে গেছে। এখন শুধুই দুর্গন্ধ বেড়য়! ওয়াক থু!
 
আমি কবিতা ভালবাসি। স্রেফ কবিতা।
কবিকে নিয়ে আমার কোন আগ্রহ নেই। আগ্রহ থাকতেও নেই।
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার অতি প্রিয় কবি একজন। তার গান আমার মনে প্রশান্তি এনে দেয়, এখনও।
 
একটু বিষন্নতা মুক্ত হতে ‘রবীন্দ্র সংগীত’ এরচে বড় ওষুধ দ্বিতীয়টা তৈরী হয়নি। ওনার ‘শেষের কবিতা’ আমার পড়া সর্বকালের সেড়া সাহিত্য।
 
ভদ্রলোক ইংরেজীতে সাহিত্য চর্চার করে রীতিমতো নোবেল পুরস্কার হাতিয়ে নিয়েছেন।শুধু তাই নয় এই ভদ্রলোক আবার ইংরেজ-তোষামদীতেও দারুণ সিদ্ধহস্ত ছিলেন- নোবেল প্রাপ্তিতে ওটাও কিন্তু কম প্রয়োজন নয়!
 
অত্যাচারী জমিদার। প্রজাকুলের ঘামে নিজে পয়সাওয়ালা। নিজের স্ত্রীকে নয়, ভাবীকেই ভালবাসতেন ঢের বেশী।
 
চরম মাপের হিন্দু সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যক্তিত্ব নিয়ে সত্যিই আমার কোন মাথাব্যথা নেই। আমি শুধুই তার কবিতারই ভক্ত, তার সাহিত্যকে ভালবাসি, তার গানের পাগল।
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সংগে তো আর আমার কোন ব্যক্তিগত মেলামেশা ছিল না যে তাকে নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করবো; আমি স্রেফ তার সৃষ্টির ভক্ত। আমি তার সৃষ্টিকে মর্যাদা দিই। ভালবাসি।
 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন অনুসরনীয় ব্যক্তত্ব হতে চাননি- ননও। সুতরাং কোন সমস্যাতো দেখি না।
 
একটা কবিতা পড়েছিলাম ২০০০ সালের দিকে।
বইটার নামই আমাকে আটকে দিয়েছিল ভেতরের কবিতাগুলি পড়ার বাধ্যবাধকতায়।
 
‘এ বছর পাখি বন্যা হবে’।
ওহ, সে কি আকর্ষণীয় নাম। এ বছর পাখি বন্যা হবে।
 
এই নামের প্রেমে না পরবে- সেই মানুষের ভেতরে তো প্রেমই নেই! পুরো বইয়ের কবিতাগুলিই আমাকে অস্থির করে দিয়েছিল।
 
প্রকৃতিবাদী কবির লেখা প্রতিটি কবিতাই আমাকে তার ভক্তে পরিণত করতে সময় নেয়নি খুব বেশী একটা।
 
তিনি আবু হাসান শাহরিয়ার।
ফেসবুকে আমার সংগে ফ্রেন্ডলিষ্টে ওনি ছিলেন প্রায় বছর খানেকের বেশী। আমার পোষ্টে প্রায়ই দেখতাম লাইক দিতেন, কমেন্টও করতেন। আমিও করতাম। ইনবক্সে কথাও হতো মাঝে মধ্যে।
 
আমার লেখাও নিয়মিত পড়তেন তিনি। কিন্তু আমার কিছু রাজনৈতিক লেখার ভার উনি নিতে পারেননি। আমাকে আনফ্রেন্ড করে দিয়েছিলেন। সেটা নিয়ে আমি কিছু কষ্টতো পেয়েছিলামই। তারপরও তার কবিতার মুগ্ধতা আমাকে ধরে রেখেছিল।
 
গত দিন কয়েক দেখলাম ব্লগার পিনাকী ভট্টাচার্য’র সংগে তিনি বেশ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন।
 
পিনাকী ভট্টাচার্য আমার ফ্রেসবুক ফ্রেন্ড। আমি তার লেখা পছন্দ করি। কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত তো থাকেই- তারপরও তার লেখার যুক্তি ও তথ্যের বাহার আমাকে মোহিত রাখে।
 
মো্ল্লা, হেফাজত, ইসলামী কিছু বিষয় নিয়ে আবু হাসান শাহরিয়ারকে দেখলাম বেশ কিছু অশালীন, অগ্রহনযোগ্য এবং ধৃষ্ঠতাপূর্ণ ও নোংড়া স্ট্যাটাস দিতে। আমি তার ফ্রেন্ডলিষ্টে থাকলে- তার জোড়ালো প্রতিবাদ করতাম।
 
অবশ্য আবু হাসান শাহরিয়ার দ্বিমতকে সহ্য করতে পারেন না বলেই মনে হয়। আর তাই তো তার টাইমলাইন শুধুমাত্র ফ্রেন্ডদের জন্যই উম্মুক্ত- ফেসবুক প্রোফাইল পাবলিক করার মতো যোগ্যতা এখনও অবধি অর্জন করে উঠতে পারেননি আবু হাসান শাহরিয়ার।
 
পিনাকী ভট্টাচার্য তার যৌক্তিক ও তথ্যপুর্ণ বক্তব্য দিয়ে আবু হাসান শাহরিয়ারের কথাগুলি যে- অনায্য এবং অসুন্দর সেটা প্রমাণ করে দিচ্ছিলেন নিজের টা্ইমলাইনে। আর তাতেই ক্ষেপে উঠলেন ‘কবি’ আবু হাসান শাহরিয়ার।
 
এমন কিছু কথা আবু হাসান শাহরিয়ারকে লিখতে দেখেছি- আমার তাকে ‘মানুষ-সুলভ’ কোন প্রানীই মনে হয়নি। একজন কবি এতটা নিম্নরুচির ও নিম্রমানের হতে পারে!
ছিঃ! ওয়াক থু! ওয়াক থু আবু হাসান শাহরিয়ার।
 
মি. শাহরিয়ার আপনার বক্তব্যের বিরুদ্ধে তো পিনাকী ভট্টাচার্য’ও লিখেছেন- দেখুন তো তার লেখায় কোন নোংড়ামী খুঁজে পান কি না? ব্যক্তিগত আত্রমন তো পশুরা করে- মানুষ হতে হলে ব্যক্তিগতভাবে নয়- কথা দিয়ে যুক্তি খন্ডন করে পরাজিত করতে হয়। কবিতা ভালো লিখেন আপনি- তবে এবার মানুষ হবার চেষ্টাটিও করুন মশাই।
 
আচ্ছা!
আপনি কি আমার এই লেখাটা এই পর্যন্ত পড়েছেন?
 
ওয়াও! গুড।
তাহলে বলতেই হবে- আমি আপনার ভেতর আগ্রহ জিইয়ে রাখতে পেরেছি। কারণ, একটা লেখা একজন মানুষকে মাত্র ৪ সেকেন্ড আটকিয়ে রাখতে পারে। ৪ সেকেন্ডের মধ্যে যদি লেখাটা তার যদি ভালো না লাগে- তাহলে কেউ আর সে লেখাটা পড়ে না।
 
যাই হোক, এবার একটু রাজনীতিতে আসি।
বেগম খালেদা জিয়া তার দলের ‘ভিষন টুয়েন্টি থার্টি’ ঘোষনা করেছেন।
 
আমি তার পুরো ভাষনটি পড়তে চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু ৪ সেকেন্ড পড়েই বুঝে ফেলেছি তিনি কি বলতে চেয়েছেন। নাহ। নতুন কিছুই নাই। পুরাই বাংলা সিনেমা।
 
বড়লোক নায়িকা। গরীব নায়ক। প্রেম হয়। তারপর ভিলেন। মাঝখানে কিছু ডিসুম ডাসুম। এরপর ট্রাজেডি বা মিলন।
 
দিল্লীকা লাড্ডু।
 
বুঝে ফেলেছি, ভিষন টুয়েন্টি থার্টি হবে-
– ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে সংসদে উচ্চকক্ষ
– ক্ষমতায় গেলে গণভোটিং চালু
– বিশেষ ক্ষমতা আইন (১৯৭২) বাতিল
– ইত্যাদি আরও হাবিজাবি।
 
ভদ্রমহিলা দেশকে উন্নত করে দেবেন, গণতন্ত্র দেবেন আরও অনেককিছু দিবেন।
 
তো, দুই মেয়াদে যে দশ বছর ক্ষমতায় ছিলেন- তখন কি করেছেন?
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী কি করেছিলেন?
২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়তে গড়িমসি কে করেছিল?
উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারপতিদের বয়স বাড়িয়েছিল কে?
চরমদলকানা পাগলা আজিজ কে প্রধান নির্বাচন কমিশানার কে বানিয়েছিল?
মেরুদন্ডহীন ইয়াজউদ্দিনকে দিয়ে পাতানো নির্বাচন করার নামে গণতন্ত্রের (যেটুকুই বা ছিল) মূলে কে প্রথম কুঠারাঘাত করেছিল?
 
এখন বেগম জিয়া এসেছেন টুয়েন্টি থার্টি খেলতে?
তো, আর কি কি খেলবেন শুনি?
 
আপনি এক গোল দিবেন অতপর হাসিনা আরেকটা দিবে?
যেমনটা হাসিনা এখন লেখছে ‘ভিষন টুয়েন্টি টুয়েন্টি ওয়ান’! এরপর দিয়ে রেখেছি টুয়েন্টি ফরটি ওয়ান!
 
দু’জন মিলে দেশটাকে বানিয়েছেন ‘ফুটবল মাঠ’ আর জনগণকে বানিয়েছেন ‘ফুটবল’। আর আপনার দু’জনই নিজেদের পরিবার নিয়ে খেলোয়াড়। যখন যিনি ক্ষমতায় থাকবেন- রেফারীও তার মনোনীত!
 
এসব ভন্ডামী বাদ দিন।
আমরা বরং খুশী হবো আপনি আর হাসিনাঝি দেশ ছেড়ে বিদায় হলে। আপনাদের দিয়ে কিছুই হবে না। দেশটাকে এনাফ ধর্ষন করেছেন আপনার দু’জন। আপনাদের সময় শেষ।
 
আপনারা নিজেরা স্বেচ্ছাবিদেয় নিয়ে হয় আমাদের বাঁচতে দিন- নইলে যেভাবে আপনারা দু’জন মিলে পাবলিকে ধর্ষন করেছেন- ঠিক সেভাবেই একদিন পাবলিক কর্তৃক গণধর্ষন হতে প্রস্তুত থাকুন।
 
বিএনপি আম্লীগ হাসিনা খালেদা এখন স্রেফ তো বাতিল মাল।
আপনাদের আর কোন চাহিদা নেই।
কিছু পুরাতন আর অবুঝ এখনও আপনাদের তোষামদী করে নিজেদের স্বার্থে। তাদের সংখ্যাটিও কম। মানুষ আপন প্রয়োজনে সচেতন হচ্ছে কারণ দেশবাসীর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
 
আপনাদের দুই পরিবার পরিবার খেলা বন্ধ হবেই।
 
আপনাদের কি দেবার ক্ষমতা রয়েছে সেটা পরীক্ষিত। আপনাদের কাছে কেউ কিছু চায় বলে তো মনে হয় না। দেখেন না আপনার ডাকে এখন আপনার দলের নেতাকর্মীরাও অার মাঠে নামে না! এথেকেও বুঝেন না?
 
হাসিনার পতনের পর দেখবেন ওর দলের ডাকেও কাউকে মাঠে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
আপনার পরিণতির জন্যও আপনি-ই দায়ি। কারণ আপনি অযোগ্য। যেমন অযোগ্য শেখ হাসিনা।
 
অযোগ্যের বিদেয় হবেই।
একানব্বই এর পর গত হয়েছে আজ প্রায় তিন যুগ।
দুই মহিলা মিলে কি দিয়েছেন দেশটাকে? আর কি নিয়েছেন দেশ থেকে?
 
প্লিজ আপনার বিদেয় হোন। আপনাদের আমরা চাই না। আর এটাও চাই না সাদ্দাম, গাদ্দাফি বা মার্কোসের মতো করুণ বিদেয় আপনাদেরও হোক। নিজের সম্মান নিজেকেই রাখতে হয়।
 
মানুষকে যোগ্যতা অর্জন করতে দিন।
যোগ্য মানুষ তার নিজ যোগ্যতা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিবেই- এবং সেদিন আসবেই।
 
যাই হোক প্রথমটা শুরু করেছিলাম একটা বিদেশী কবিতা দিয়ে।
হাসিনা এবং খালেদা ভেবে বসেই রয়েছেন যে দেশটা তাদের। এবং তারা দেশের মানুষগুলিকে গরু-ছাগল বানিয়ে তালাবদ্ধ করে তার চাবিগুলি একজন বঙ্গপোসাগরে অন্যজন দিল্লীতে ছুড়ে ফেলেছেন। কিন্তু তিনারা ভুলেই গেছেন যে তালাও ভেংগে ফেলা যায়।
 
বাংলাদেশ সে যোগ্যতা অর্জন করবেই।
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে এবং সময়ের প্রয়োজনে অনেক অচিন্তনীয় ঘটনাও ঘটে।
 
যাক এবার শেষ কথা বলি। নতুন একটা তথ্য পেলাম।
তথটা হলো ঘুমেরও কিন্তু একটা চাংক রয়েছে- সেটা জানেন?
 
ঘুমের চাংক হলো দেড় ঘন্টা করে। মানে ৯০ মিনিট। আপনি হয় ৯০ মিনিট ঘুমাবেন নয় তিন ঘন্টা অথবা সাড়ে চার ঘন্টা কিম্বা ছয় ঘন্টা অথবা সাড়ে সাত ঘন্টা হিসাবে আরামের ঘুম দিতে পরবেন। অন্যথা হলে অর্থাৎ দেড় ঘন্টার মাল্টিপ্লাই না হলে- আপনার ঘুম কিন্তু পরিপূর্ণতা পায় না। সেক্ষেত্রে নানা জতিলতা হয়। মাথা ঝিমঝিম করে। ইত্যাদি।
 
সুতরাং চলুন আমরা দেড় ঘন্টার হিসাব মিলিয়ে ঘুমাতে থাকি।
হাসিনা খালেদাকে আরও লুটপাট করার সুযোগ দিই।
 
কি অাছে?
দেশ এভাবেই চলুক। টুয়েন্টি থার্টি। টুয়েন্টি ফরটিওয়ান।
তারপর আরো হিসাব চলতে থাকুক …
 
চলুন আমরা ঘুমাই চাঙ্ক মিলিয়ে।
 
 
   Send article as PDF