চুমু চাকমা লক্ষী

প্রথম ধাক্কাতেই যদি আপনি কাউকে ইমপ্রেসড বা চমকিয়ে দিতে না করতে পারেন, তাহলে সেটা করতে পরে অনেক সময় লেগে যাবে- এবং সেই সময় বা সুযোগ আর আসবে কি না তার নিশ্চয়তা আপনাকে কে দিবে? এই বিদ্যাটা কিন্তু আমি খুব ছোটবেলাতেই বুঝে ফেলেছিলাম।

আমি অনেক কিছুই কিভাবে যেন আগে থেকেই বুঝে ফেলতে পারি। কিভাবে বুঝি আমি নিজেও জানি না, হঠাৎই মাথায় এসে ভর করে। সাহস করে বলে ফেললেই দেখি মিলে যায়। বিষয়টা অবশ্যই কাকতলীয়।

বিচিত্রায় ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনটি দেবার পর আমি একশভাগ নিশ্চিত ছিলাম কোন একটা চাকমা মেয়ের চিঠি আমি পাবো। আসলে, উপজাতীয় কালচার সম্পর্কে খুব ছোট বেলা থেকেই আমার খুব দুর্বলতা কাজ করতো। তাই বিভিন্ন বই-পত্র সংগ্রহ করে ওসব পড়তাম।
চুমু চাকমা লক্ষী’র গোটা গোটা হাতের লেখা চিঠিটি যখন হাতে এসে পড়লো, তার নিজের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, ক্লাস টেন-এ পড়ে; খুবই দরিদ্র পরিবারের একটা মেয়ে। রাঙাপানিতে কোন এক হোষ্টেলে থেকে পড়াশোনা করে। ওর পৈত্রিক বাড়ী খাগড়াছরিতে। এরকম ছিল মোটামোটি বর্ণনা।

আমি লক্ষীকে উত্তর লিখবো। একবার চিঠিটি পড়েই ৮০ গ্রামের একটি এ-ফোর সাইজ সাদা অফসেট পেপার নিলাম। সেটাকে মাঝখান বরাবর ভাজ করলাম- তারপর সেটা দু’টো পাতা হয়ে গেল। প্রথম পাতাকে কভার এবং ইনার পেইজকে মুল পত্র হিসাবে লিখার সিদ্ধান্ত নিলাম। কভারে শুধুমাত্র ওর নাম এবং আমার নামা লিখলাম। ভেতরের ডান দিকে আমার নিজের সম্পর্কে খুব সামান্য লিখে- ওদের কালচার নিয়ে কিছু মজাদার তথ্য সঠিক কিনা জানতে চাইলাম।


দু’সপ্তহের মধ্যে ফিরতি চিঠি চলে আসলো। সে ইমপ্রেসড। আমি তো সেটা জানতামই- অবাক হলাম না। খেলা জমে উঠলো।


দু’বছর পার হয়ে গেল। আমরা একটা চুক্তি করে নিলাম। প্রতি সপ্তাহে একজন অপরজনকে চিঠি লিখবো- প্রতিউত্তর পাই বা না পাই। তাই-ই হলো, মাসে ৪টা চিঠি আসতোই নিয়ম করে।


চুমু চাকমা লক্ষী তখন রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পরছে। ওসময়টাতে সে আমার সংগে দেখা করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলো। আমি খুব মজা করতাম। একটা ‘ডেট’ দিতাম। বললাম, ঠিক ১০টায় তোমার কলেজের গেটে আমি এসে দাঁড়াবো। পোষাকের একটা বর্ণনা দিতাম। আসছি। সে যেন উপস্থিত থাকে। গেটে খেয়াল রাখে।


আমি যেতাম না।ইচ্ছে করেই কাজটা করতাম। এভাবে সম্ভবত টানা ৪/৫ মাস ওকে আমি ৪-পাঁচটা ডেট দিয়েছিলাম। যাইনি।


একটা সময় খারাপ লাগলো, এমন করাটা ঠিক হচ্ছে না। তাছাড়া রাঙামাটির প্রতি আমার ছোট বেলা থেকেই ভীষন দুর্বলতা কাজ করতো। মেয়েটার প্রতি কোনই দুর্বলতা ছিল না, তাকে আমি ‘যাস্ট ফ্রেন্ড’ এর বাইরে কখনওই কিছু চিন্তা করতাম না। সেজন্যই টান ছিল না।


অবশেষে এক শীতে ওকে চিঠি লিখলাম। আমি আসছি, শনিবার, ঠিক সকাল ১০টায় তোমার কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে থাকবো। আমরা দু’টো ছেলে। আমার পোষাকের বর্ণনা দিয়ে রাখলাম। লক্ষী চাকমা উত্তরে জানালো সে এবার গেই রঙ এর (অফ হোয়াইট- তখনও গেই রঙটি সম্পর্কে জানি না, অনুমান করে নিয়েছিলাম) জামা পরা থাকবে।
আমার অতি সুদর্শন বন্ধু মাহাবুব। আমি যেখানেই যাবো, সে রেডী সবসময়। আমার ছোট বেলার ম্যাক্সিমাম ভ্রমণে ওকে নিয়ে যেতাম। রাজনীতি করতো, তাও আম্লীগ (তখন ছাত্রলীগ)। (এখন প্যারিস থাকে- ছেলে ভালো- নিজ দায়িত্বে কেউ ইনবক্স করলে আমি কিছু বলবো না)। খুব কিশোর বেলায় আমি যখন প্রথম বিমান ভ্রমণ করি সেই সফরেও মাহাবুব ছিল- সে আজও সেই ভ্রমণ নিয়ে ভীষন আবেগী হয়ে যায়। পাসপোর্ট ছাড়া কিভাবে বিমানে উঠবে- এই চিন্তায় সে টানা ২ দিন কিছু খেতেই পারেনি। যাক সে কথা।


আমরা ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়ে খুব ভোড়ে চট্রগ্রামের মুরাদপুর পৌছে থেকে রাঙামাটির বাসে উঠে বসলাম। দুই ঘন্টায় রাঙামাটি পৌছে গেলাম।


তখন সকাল ৮টা হবে।রাঙামাটির মুল শহর রিজার্ভ বাজারের হোটেলগুলো পাহাড়ের উপর থেকে নীচের দিকে নেমেছে। ঢাকার মতো ভবনগুলো উপরের দিকে উঠে না। কাপ্তাই লেকের ধারেই শহরটি। কোন রিক্সা নেই ওই শহরে। একটু ভিন্ন একটা শহর। বেবী টেক্সিই প্রধান যান। হোটেলে ফ্রেস হয়ে, তারপর কিছু হালকা নাস্তা করে ঠিক সকাল ১০টায় রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ গেটে উপস্থিত হলাম।


সাহসী ছাত্রলীগ নেতা, যে মিছিলে গলা ফাটায়- ভয় পাচ্ছে। এতো দূরে এসে অজানা, অচেনা এক উপজাতীয় মেয়ে। তখন শান্তিবাহিনীর পুরো দাপট। সন্তু লারমার লোকজন বাঙালীদের ধরে নিয়ে মুক্তিপন দাবী করে, মেরেও ফেলে। সেখানে সেনা শাসন চলছে। এমন একটা সময় আমরা দুই সদ্য কৈশর-উত্তির্ণ তরুণ একটা মেয়ের খোজেঁ সেই রাঙামাটি। চট্রগ্রাম হলেও তো একটা কথা ছিল।


আমি ভয় পাই না। ১০টায় গেটের ভেতরে গিয়ে দাঁড়ালাম মিনিট পাঁচেক।
মাহাবুব বললো, কোথায়- কেউ তো নেই। চল দোস্ত, হোটেলে ফিরে যাই। আমি ভয় পাচ্ছি। ঝামেলা হয়ে যাবে। আমি ওকে ধমক দিলাম। বললাম, ‘এই নে রুমের চাবি; আমি পরে আসছি।’ মাহাবুব আমাকে একা ফেলে যাবে- সেটা আমিও জানি।


মাহাবুবকে বললা, ‘চল আমার সংগে; এর আগে অনেকবার ডেট দিয়েও আসিনি। ও হয়তো বিশ্বাস করেনি এবারও। একটু ক্যাম্পসের ভেতরে টু মেরে আসি- তাহলে আমাকে দেখতে পেয়ে ঠিকই আসবে।’


যা বলা। তাই-ই করলাম।পুরো ক্যাম্পাসটি একবার প্রদক্ষিন করলাম।ঢাকার মানুষদের ঢাকার বাইরে দেখলেই নাকি বোঝা যায়। উৎসুখ ছাত্র-ছাত্রীদের নজড়ে পরে গেলাম। সকলেই যেন ‘একটু কেমন করে’ তাকাচ্ছিল কৌতুহল চোখে। তবে, আলাদা করে কোন ‘চোখ’ আমার চোখে পরলো না।


গেটে ফিরে এসে দাঁড়ালাম।মাহাবুবকে বললাম, ‘আমরা গেটে ঠিক ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকবো। লক্ষী যদি এই ১০ মিনিটের মধ্যে না আসে- তাহলে হোটেলে চলে যবো।’
ঠিক এক মিনিট পরই দূরে কলেজের অপর প্রান্তে দু’টো মেয়ের ভেতরে অনেকটা দূর থেকেই আমি ‘একটু ভিন্নতা’ লক্ষ্য করলাম যেন। তার মধ্যে একটা মেয়ে নিয়মিত কলেজ ড্রেস পরেনি- গেই রঙ এর পোষাক এর কালারটা বুঝতে পারলাম যেন।


মাহাবুবকে বললাম, ‘ওই তো, আসছে ওরা।’মাহাবুব খুঁজেই পেল না ওদের। কিন্তু আমার চোখ তো আগে থেকেই খুব ভয়ংকর। প্রকৃতি মারাত্মক এক পর্যবেক্ষন শক্তি এই চোখে বসিয়ে দিয়ে রেখেছে।


আমাদের সামনে শান্ত পায়ে দু’টো মেয়ে এসে দাঁড়ালো।আমি মিষ্টি করে হেঁসে দিয়ে বললাম, ‘লক্ষী কেমন আছো?’


আমার কাছে লক্ষীর যে ছবিটা রয়েছে- সেটার সংগে আশ্চর্যজনকভাবে ওর আজকের চেহারার মিল পাওয়া কস্টকর। অবশ্য ততদিনে আমি জেনে গেছি, মেয়েদের চেহারা সময়ে সময়ে বদলে যায়; গোসলের পর একরকম, গোসলের আগে অন্য মেয়ে। তাছাড়া মেকাপের সংগে সংগেও পরিবর্তন হয়।


লক্ষীও হেসে দিল, সেটা প্রাণ খোলা কোমল হাসি ছিল- কিছুটা লজ্জাও ছিল সেই হাসির অন্তরালে। ওর ঠোট দু’টো কেপে উঠলো, ‘পিয়াস। তুমি কি সত্যিই এসেছো? আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি আজও নিশ্চিত ছিলাম তুমি আমাকে আজও ঠকাবে। আমি তোমার দেয়া প্রতিটি ডেটে এখানে এসে দাঁড়িয়ে থেকেছি। জানতাম তুমি আসছো না; তারপরও মন চাইতো দাঁড়িয়ে থাকি। আজ দাঁড়াইনি। বিশ্বাস করতে পারিনি যে তুমি আসবে’। এক নিঃশ্বাসে অভিযোগ পরে শোনালো আদালতের কাঠগড়ার উকিলের মতো।
আমি জোরে হেসে দিলাম। ওর সংগে একটা মেয়ে। তার দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘আমি পিয়াস, ও আমার বন্ধু মাহাবুব। তোমার নামটা কিন্তু আমি জানি না।’


সাথের মেয়েটি বেশ চটপটে। হেসে বলল, ‘আমার নাম রুমি দেওয়ান’। কয়েক মিনিট গল্প করলাম ওখানে দাঁড়িয়েই। এক পর্যায়ে লক্ষী জানতে চাইলো আমরা কোন হোটেলে উঠেছি। বললাম। বললো, ‘তোমরা এখানেই দাঁড়াও। কোথাও যাবে না। আমরা ৫ মিনিটের মধ্যে আসছি। যেও না কিন্তু।’


অপজিটে পোষ্ট অফিস। আমি বললাম, ‘আমরা পোস্ট অফিসের সামনে থাকবো, এখানে দাঁড়াবো না।’।


ঠিক ১০ মিনিটের মধ্যেই লক্ষী, রুমী আর সংগে আরও ৪/৫জন উপজাতীয় তরুন এসে উপস্থিত হলো। একজন ছেলে নিজের নাম বলে সকলকে আমাদের সংগে পরিচয় করিয়ে দিলো। তারপর বলল, ‘দেখ। তোমরা হয়তো জানো না যে রাঙামাটি বর্তমানে খুবই অশান্ত। গতকালও দু’জন বাঙালী যুবককে আমাদের দলের লোকেরা অপহরণ করেছে। সেনাবাহিনী চারদিকে টহল দিচ্ছে। তোমরা এমন একটা সময় এসেছো- তোমাদের নিরাপত্তা দেবার জন্য আমরা এসেছি। আমাদের উপর বিশ্বাস রাখো। তোমাদের কেউ কোন বিপদে ফেলতে পারবে না। কিন্তু, আমাদের আগে বা পেছনে ফেলে তোমরা কোথাও চলে যেও না। আর যেখানেই যাবে লক্ষী আর রুমিকে সংগে রাখবে।’


ছেলেটির কথায় আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম। ওর চোখে মুখের অভিব্যক্তিতে কোন চালাকি ছিল না। ওরা ৪টা ছেলে ছিল আর লক্ষী, রুমীসহ আরও একটা মেয়ে। আমরা দুটো বেবী টেক্সী নিয়ে প্রথমে আমাদের হোটেলে গেলাম। ছেলেগুলো আমাদের হোটেলের ম্যানেজারের সংগে কথা বললো। ম্যানেজার আমাদের সংগে এসে বলল, ‘ওদের আমি চিনি। আপনাদের কোন অসুবিধে হবে না। কিন্তু এভাবে এই সময়ে আপনাদের উপজাতী মেয়েদের সংগে দেখা করতে আসাটা খুব বোকামী হয়েছে। ওরা অনেক সময় মেয়েদের টোপ হিসাবে ব্যবহার করে বাঙালীদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। যাই হোক, আপনাদের কোন ভয় নেই।’


এসব ঘটনায় মাহাবুব যেন আরো ভয় পেয়ে গেলো। কিন্তু আমি লক্ষীকে অবিশ্বাস করতে পারিনি। ওর সরলতা আর চোখ মুখ আমাকে বলে দিচ্ছিল ভিন্ন বার্তা। ওদের সংগে রেষ্টুরেন্টে ঢুকে নাস্তা করে নিয়ে আমরা প্রথমেই সেই বিখ্যাত ঝুলন্ত ব্রীজে চলে গেলাম। একটু বেশী সাহসী হয়েই যেন এদিক ওদিক ব্রীজের ওপারে ঘুড়ে বেরালাম।


লক্ষ্য করছিলাম, লক্ষী সারাক্ষন আমার ঠিক সংগে সংগে চলাচল করছে, আমি কোথাও বসলে সে দৌড় আমার পাশে চলে আসে। আমি ভিন্ন কিছু ফিল করছিলাম ওর মধ্যে। এরপর আমাদের নিয়ে ওরা গেল একটি বৌদ্ধ মন্দিরে। অনেক বিশাল এবং চমৎকার সুন্দর মন্দিরটি। আমরা ভেতরে গেলাম। দেখলাম। ছবি তুললাম। ওখান থেকে বের হয়ে বাগানের একটু কোনায় আমি দাড়িয়ে দেখছিলাম। লক্ষী দৌড় আমার কছে চলে এল।
‘তুমি তো আমাকে কিছু বলছো না।’ লক্ষী হঠাৎ আমাকে বলল কথাটা।আমি প্রথমে ওর কথাটার প্রকৃত মানেটা উপলব্ধি করে উঠতে পারিনি। ‘কি বলবো’ তাও বুদ্ধিতে কুলোয়নি তখন আমার।


ছবি তোলার প্রচুর নেশা আমার। লক্ষীর সংগে অনেকগুলো ছবি তুললাম। গ্রুপ ছবিও প্রচুর। মাহাবুবকে এক পর্যায়ে আবিস্কার করলাম, রুমি দেওয়ানের সংগে যেন একটু বেশী ঘনিষ্ট হতে চাচ্ছে। আসলে ও স্বাভাবিক হয়ে গেছে- খুব উপভোগ করছে।


সন্ধ্যা হয়ে গেল। ওরা বিদেয় নিবে। পরদিন সকালে ওরা ঠিক ৯টায় আমাদের হোটেলে আসবে আমাদের নিয়ে যেতে। কাল আরও অনেক দর্শনীয় জায়গায় নিয়ে যাবে। যাবার আগে লক্ষী আমাকে একটু দূরে আলাদা করে ডেকে নিয়ে বলল, ‘তুমি কি আমাকে কিছই বলবে না?’


এবার আমি ওর মুখের দিকে তাকালাম।মেয়েটার চোখে জল দেখতে পাচ্ছিলাম। বললাম, ‘কি বলার কথা বোঝাচ্ছো- একটু খুলে বলবে?’ লক্ষী কিছুই না বলে শুধু ‘আচ্ছা যাই, কাল দেখা হবে’। বলে ওদের ফিরে যাবার দলে মিশে গেল।


পরদিন সকালেই ওরা পুরো দলবল চলে এসেছে। এরমধ্যে আগেরদিন রাতে হোটেলে একজন আর্মি অফিসার এসে আমাদের সংগে কথা বলে গেলো। জানতে চাইলো আমাদের পরিচয়। কেন এসছি? ওদের সংগে কিভাবে পরিচয়। কতদিনের পরিচয়। সব তথ্য নোট করে নিলো। ওদের যাদের যাদের নাম জানি, তাও লিখে নিল।


যাবার আগে অফিসারটি বলে গেল। দেখেন আপনারা ছোট মানুষ, কিছুই বুঝেন না। এরা খুবই ভয়ংকর। তাছাড়া এখন এলাকা খুব গরম। আমরা একটা পুরো টিম আজ সারা দিন আপনাদের পেছন থেকে পাহাড়া দিয়েছি। যেখানে যেখানে গিয়েছেন- সব জায়গায় আমাদের একটা টিম ছিল। আশা করছি আপনাদের কোন সমস্যা হবে না। ওদের গতিবিধিতে আমরা খারাপ কিছু লক্ষ্য করিনি। এদের গতিবিধির সংগে আমরা পরিচিত। তারপরও খুব সাবধান থাকবেন। পাহাড়ের ভেতরে যাবেন না। আমাদেরও লক্ষ্য রাখবেন। কোন বিপদ টের পেলে চিৎকার করে মাটিতে শুয়ে পরবেন।


পরদিনও দুপুর পর্যন্ত আমরা রাঙামাটির আরও অনেক দর্শনীয় এলাকা ঘুড়ে বেড়ালাম।ঢাকা থেকে লক্ষীর জন্য গিফট নিয়ে গিয়েছিলাম, মেয়েটা হাতে পেয়ে ভীষন খুশী। একসংগে লাঞ্চ হলো। আমরা বিকেলের বাসে চট্রগ্রাম ফিরবো।


লক্ষী হোটেলে আমার সংগে আমাদের রুমে আসলো।পাশে বসলো। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম ওর চোখ ভেজা। আমার ডান হাতটা শক্ত করে ধরে ওর মুখটা হাতে ঘষতে লাগলো আর মুখে বলল, ‘মুই তোরে হুসপাং’।


কথাটার অর্থ আমি জানতাম। অনেক আগে কোন এক চিঠিতে আমিই ওর থেকে জানতে চেয়েছিলাম বাক্যটা। কিন্তু লক্ষী যে এটা আমার উপরেই প্রয়োগ করবে- বুঝে উঠতে পারিনি।


লক্ষীকে আমি সেদিন এর কোন প্রতিউত্তর দিতে পারিনি।

   Send article as PDF