মীর কাশেম আলী | আরও একটি রাষ্ট্রিয় হত্যাকান্ড

মীর কাশেম আলী; ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যার বয়স ছিল ১৭+ বছর (৭২ সালে তোলা মীর কাশেম আলীর একটা ছবি সংযুক্ত)।

সে ঐ ১৭-১৮ বছর বয়সে চট্রগামে গিয়ে যুদ্ধাপরাধ সংঘঠিত করেছে।
এবং সেটা দেখেছে ১৯৭৭ সালে জন্ম নেয়া একজন সাক্ষী।
আর সেই সাক্ষির ভিত্তিতে- সেই কথিত যুদ্ধাপরাধের চুড়ান্ত বিচার করেছে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এবং গতকাল তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মীর কাশেম আলী ২০১০ সালে বিদেশে যান এবং কিছুদিন পরই ফিরে আসেন- তিনি চাইলে নাও ফিরতে পারতেন। তারও ২ বছর পর তাকে আটক করা হয়। ফাঁসির আগে মীর কাশেম আলী বলে গেলেন- “আচ্ছা দেশে না ফিরলে আমার ফাঁসি হয়ত হত না, কিন্তু মৃত্যুর ফায়সালা কি আগ-পর হত?”
– একজন মানুষ কতটা বড় হলে, তার এতটা ঈমানী জোর থাকতে পারে তা আমার ধারণারও বাইরে ছিল।

এমন একটা মানুষকে হত্যা করা হলো- গত ৪০ বছর যার প্রতিষ্ঠানের টাকায়- জীবিকায় দিন-যাপন করেছে এই বাংলাদেশের হাজার হাজার পরিবার।

অবৈধ গোপালগঞ্জ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- এই মহান মানুষটার সারা জীবনের সৎ পথে অর্জিত টাকা ও সম্পত্তি গিলে খাবার লোভে- তাকে হত্যা করেন। এমনকি তার ব্যারিষ্টার ছেলেকেও গুম করা হয়েছে মাত্র মাসখানেক হলো!

১৯৭৫ সালে শেখ হাসিনার বাবাকে স্বপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সেই হত্যার পেছনে জোরালো কারণ ছিল। শেখ মুজিব ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে তার শাসনামলে দেশটাকে জাহান্নাম বানিয়ে দিয়েছিল। দেশ থেকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ধ্বংশ করে একদলীয় পারিবারিক বাকশাল কায়েম করেছিল। হত্যার সময় শেখ মুজিব কুকুরের মতো অশ্লিল গালি-গালাজ করতে করতে মরেছে চারপাশের মানুষকে- আল্লাহর নাম তার মুখেও আসেনি!

শেখ মুজিবের মৃত্যুতে দেশবাসী হেসেছিল, ঈদের উল্লাস করেছিল। এবং তার নামাজে জানাজায় মাত্র ১৭ জন মানুষ শরিক হয়েছিল। এতটাই ঘৃণিত ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছিল কথিত নবী শেখ মুজিব (জা.)।

অথচ, মিথ্যা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ্য মীর কাসেম আলীকে হত্যার পর কোটি কোটি মানুষ দুঃখ প্রকাশ করে যাচ্ছে সংগে শেখ হাসিনা ও তার কুলাংগার প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করে চলছে।

অবশ্য, একই সংগে দেশের হাতে গোনা কিছু সাংবাদিক (শামীম ওসমানের ভাষায়- খানকির পোলারা) ও ভন্ড বুদ্ধিজীবি তথা কিছু কুলাঙ্গার প্রগতিশীল নামীয় নব্য টাউট উল্লাস প্রকাশ করে যাচ্ছে।

ফেসবুকেও কিছু জারজকে দেখছি- খুব উল্লাস প্রকাশে ব্যস্ত। আমি অবাক হই ঈশ্বর এদের চিন্তা-শক্তিও কেড়ে নিয়েছেন! সামান্য যোগ-বিয়োগও এরা শিখেনি! নিজেদের জ্ঞানী, চেতনাবাজ বলে নিজেদেরই বাহাবা নিচ্ছে! ঘৃণা করছি আমি এদের।

অপর দিকে ‘প্রকৃত যুদ্ধাপরাধী’ ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন- যে কিনা শেখ হাসিনার বেয়াই- শেখ হাসিনার কোলে (ক্যাবিনেটে) মন্ত্রীর মর্যাদায় তার গাড়ীতে জাতিয় পতাকার অবমাননা করে চলছে।
এতে অবশ্য ঐসব (অ)সাংবাদিক, (কু)প্রগতিশীল, (দু)বুদ্ধিজীবি চোখে এসব পরে না।

– ওরা মানুষের জন্ম হলে তো চোখে পড়বে?

এখন যদি শেখ হাসিনার কলেরা হয়ে মৃত্যু হয়- আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি- আগামীকাল বাংলাদেশের সকল মিষ্টির দোকানের যাবতীয় মিষ্টি ১ ঘন্টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে ‘হাসিনা মৃত্যুর আনন্দ মিছিলে মিছিলে’। দেশটা জল্লাদ বাহিনীর হাতে থকে মুক্তি পাওয়ার আনন্দে।

সেই দিনটার জন্য-ই কি অপেক্ষায় ১৬ কেটি মানুষ?

আমি ব্যক্তিগতভাবে কোন হত্যাকান্ডকেই সমর্থন করি না।

আধুনিক বিশ্ব থেকে মৃত্যুদন্ড নামে কুখ্যাত শাস্তিটি উঠে যাচ্ছে- আমি বাংলাদেশ থেকেও ‘যে-কোন হত্যাকান্ড ও মৃত্যুদন্ড’ তুলে নেবার জোড় দাবী জানাচ্ছি। সেই সংগে সকল পুলিশি হত্যাকান্ডের প্রতি আমার তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি।

মীর কাশেম আলী সাহেব আরও একটা বিষয় চোখে আংগুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন- ‘ভালবাসা আইন, ক্ষমতা বা বন্দুক দিয়ে অর্জন করা যায় না- কাজ ও ব্যবহারে ভালবাসা এমনিতেই চলে আসে’।

এবং আমি আজকের এসব অসভ্য ও কুলাংগার বিচারপতিসহ এই প্রধান বিচারপতি সিনহা এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশবাসীর সংগে প্রতারণা করে সুচতুর শেখ মুজিব তার পরিবার (শেখ হাসিনাসহ)- কে ঢাকা শহরে ৯ মাস পাকিস্তানীদের নিরাপত্তায় ও মাসিক ১৫০০ রুপি ভাতার ব্যবস্থা করে দেয়াকে ‘যুদ্ধাপরাধ ও দেশবাসীর সংগে প্রতারণা’র অভিযোগে বিশেষ ট্রাবুনাল গঠন করে শেখ হাসিনার বিচার ও যাবজ্জিবন কারাদন্ড দাবী জানাচ্ছি।

   Send article as PDF