জাফর ইকবাল

হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের আরও অনেকের সংগেই আমারও খুব প্রিয় লেখকদের একজন।
 
এই প্রিয় মানুষটার দু’টি বিষয় আমি জীবনভর খুবই অপছন্দ করে এসেছি।
 
প্রথম বিষয়টা বলি।
হুমায়ন আহমেদ একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি, তার অর্জনে রয়েছে আমেরিকা থেকে একটি পিএইচডি ডিগ্রী। সেই সংগে তার লেখায় বাস্তবতার উপস্থিতি থাকে- কোন ক্ষুদ্র বিষয়কেও তিনি অবহেলা করেন না।
 
কিন্তু, আমি পরিষ্কারভাবেই উপলব্ধি করেছি- তিনি দাঁড়ি-টুপিওয়ালা যে-কাউকেই ‘মাওলানা’ বলে চালিয়ে দিয়েছেন। ড. হুমায়ূন আহমদ এর মতো একজন মানুষ ‘মাওলানা’ শব্দটির মানে জানেন না- এটা আমি বিশ্বাস করি না।
 
একটু ব্যাখ্যা দিই- আপাত দৃষ্টিতে দাাঁড়ি-টুপিওয়ালা মসজিদের ইমাম বা মাদ্রাসার শিক্ষকদের ‘মৌলভী’ বলে চালিয়ে দিলে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ‘মাওলানা’ একটি ডিগ্রী বা পদবী। যেমন ‘ডক্টরেট’, ‘জেনারেল’, ‘প্রফেসর’ বা ‘ইঞ্জিনিয়ার’ একেকটা পদবী- ঠিক তেমনই ‘মাওলানা’ও একটি ডিগ্রী যা সুনির্দিষ্ট পড়াশোনা শেষে অর্জন করতে হয়। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিনে এমএম (মোহাদ্দেস) বিষয়ে মাষ্টার্স এর সমমান সার্টিফিকেট প্রাপ্তি সাপেক্ষেই একজন মানুষ ‘মাওলানা’ ডিগ্রীটি অর্জন করেন।
 
যাকে তাকে মাওলানা বলে চালিয়ে দেয়া যায় না।
 
কিন্তু হুমায়ুন আহমেদ কোন এক অজানা কারণে ‘মাওলানা’ শব্দটিকে নিয়ে অযাচিত বেহাল্লপনা করে গেছেন তার জীবনভর।
 
হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা হোটেল গ্রেভার ইন এ পড়েছিলাম যে তাকে না কি আমেরিকানরা সবসময় ইচ্ছাকৃতভাবেই বিভিন্ন বিকৃত নামে ডাকতো। কেউ বলতো হামায়ুন, কেউ বা বলতো হুমায়ান বা হনুমান ইত্যাদি।
 
হুমায়ুন সাহেব বছর পাঁচেক আমেরিকায় বসবাস করেছেন নর্থ ডেকোটার মতো অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলে। আমি নিউ ইয়র্কে বসবাস করছি প্রায় পাঁচ বছর।
 
মজার বিষয় হলো একজন ব্যবসায়ী হিসাবে আমাকে নিত্যদিন অনেক হোয়াইট আমেরিকানদের সংগে কথা বলতে হয়, বিভিন্ন প্রয়োজনে কল সেন্টারে ফোনে অপারেটর এর সংগেও কথা বলতে হয়, অনেকের সংগেই ঘনিষ্ঠতাও রয়েছে- কিন্তু আজ অবধি কেউ-ই আমাকে কোন বিকৃত নামে ডাকেনি। এরা অত্যন্ত ভদ্র জাতি- এরা প্রত্যেকেই পরিচয়ের প্রথমেই ‘নামের প্রনানসিয়েশন’ টা ভালো মতো জেনে নেয় এবং অত্যন্ত স্পষ্টভাবেই আমার নাম উচ্চারণ করে।
 
হুমায়ূন আহমেদ সাহেবের এরকম আরও অনেক মিথ্যা শিক্ষার প্রমাণ আমি দেখেছি। তারপরও তার লেখার ভক্ত আমি।
 
দ্বিতীয় বিষয়টা বলার পূর্বে অন্য একটা কথা বলা দরকার।
হুমায়ূন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকতা করাকালীন সময়ে ড. আহমেদ শরীফের দলে শিক্ষক রাজনীতি করতেন। এবং এক সময় তিনি শিক্ষক রাজনীতিতে শ্রেফ ভন্ডতা আবিষ্কার করার পর ‘শিক্ষক-রাজনীতি’ থেকে ইস্তফা দেন বলে মৃত্যুপূর্বে তার কোন এক লেখায় বলে গেছেন। এজন্য দেরীতে হলেও হুমায়ূন আহমেদকে ধন্যবাদ।
 
এবার তার করা দ্বিতীয় ও চরম অপছন্দনীয় কাজটা বলি।
হুমায়ূন আহমেদ তার লেখা কোন একটা বইতে (সম্ভবত হোটেল গ্রেভার ইন) তার ছোট ভাই ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল-কে দেশবাসীর সংগে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। সেখানে তিনি জাফর ইকবালকে একজন উচুদরের শিশু সাহিত্যিক হিসাবে প্রশংসা করেছেন।
 
হুমায়ূন আহমেদ নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান।
অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন মানুষ তিনি।
তার যে-কোন কথারই একটা প্রভাব থাকে জনমানুষের কাছে।
 
সেই প্রভাব বলেই ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল’কে নিয়ে আমিও উৎসাহ পাই। কৌতুহলী হই। তখন আমিও সম্ভবত স্কুলের ষ্টুডেন্ট। দিপু নাম্বার টু সিনেমাটি দেখি- মোটামুটি পরিচ্ছন্ন। খারাপ লাগেনি। তবে, আহামরী কিছুও নয়। বেশ কিছু বই পড়ি।
 
কিন্তু তারপর-পরই আমার মোহ ভংগ ঘটে।
বিটিভিতে সেই জাফর ইকবাল এর আরও দু’টি টিভি নাটক দেখানো হয়। ঐ নাটকের যুক্তির অভাব এবং সেই সংগে কিছুটা কাতুকুতু দিয়ে উজ্জিবীত রাখার চেষ্টায় আমি প্রচন্ড বিরক্ত হই। এবং সেই সেদিন থেকেই জাফর ইকবালের যোগ্যতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাই এবং তাকে বর্জন করি। এরপর থেকে আমি আর ড. জাফর ইকবালের লেখা কোন বই পড়তে বিন্দু মাত্র উৎসাহ বোধ করিনি। সেটা নব্বই সালের প্রথম দিককার কথা হবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তার বই পড়া আমি বন্ধ করে দিই।
 
ড. জাফর ইকবাল সিলেটের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। ওনার লেখা নিয়ে প্রথম আলো টাইপ পত্রিকাগুলি মাতা-মাতি শুরু করে। আর সেই সুযোগে জাফর ইকবাল দেশবাসীকে তার জ্ঞান দিয়ে নিজেকে একজন মহান ব্যক্তি হিসাবে প্রচারণায় ব্যস্ত দিনাতিপাত করে যাচ্ছেন।
 
জাফর ইকবালের লেখায় শিক্ষণীয় কিছুই পাওয়া যায় না।
 
১৯৭১ সালে জাফর ইকবালের বয়স ২১ বছর। তখন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। ঐ সময় মাত্র ১৭ বছর বয়সে মীর কাশেম আলী আল বদরের প্রধান হিসাবে শত শত মানুষ হত্যা করে, ধর্ষন করে শেষ করে ফেলে!!!
 
আর ২১ বছরের যুবক দেশ প্রেমিক জাফর ইকবাল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন না করে আত্মগোপন করে!
 
যে ২১ বছরের যুবক মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন না করে পালিয়ে থাকে- তার মুখে জাতি অন্তত মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনতে চাবে- মানুষকে এতটা বোকা ভাবার অবকাশ কোথায়?
 
এই জাফর ইকবাল বর্তমানে তার নির্ধারিত শিক্ষকতা বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের দালাল হিসাবে (স্ব)পদোন্নতি গ্রহণ করেছেন।
 
জাফর ইকবাল এর সোনার ছেলেরা দেশব্যাপী আজ ধর্ষন, খুন, চাঁদাবাজীর মহোউৎব চালিয়ে যাচ্ছে। জাফর মাষ্টাররা তাদের ট্রেনিং দিয়ে যাচ্ছে- যাবেও।
 
জাফর ইকবাল, মুনতাসির মামুন, মতিউর রহমান, শাহরিয়ার কবির-রা ৭১ সালে পালিয়ে বেড়িয়েছে; আওয়ামী লীগের সামনের সাড়ির নেতাদের কাউকে যুদ্ধক্ষেত্রে দেখা যায়নি। ড. হাসান মাহামুদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি যুদ্ধের ময়দানে। আর আজ এরাই মুক্তিযুদ্ধের মহান ফেরীওয়ালা। চেতনাবাজ।
 
আমি এখন আর বিশেষ কারণ ছাড়া জাফর ইকবালের লেখা পড়ি না।
ওসব পড়ার উপযোগী না। শিক্ষনীয় কিছুই নেই তাতে।
 
জাফর ইকবাল সেদিন নিউ ইয়র্কে এসেছিলেন।
বেড়াতে। ফিরে যাবার পর তার লেখা একটা আর্টিকেল সামনে পরে; নিউ ইয়র্ক নিয়ে লেখা বিধায় পড়তে ইচ্ছে হল।
 
ওখান থেকে তার কিছু লেখা’র জোর এবং বাস্তবতা শেয়ার করছি।
 
=== “এয়ারপোর্টে নামার পর ইমিগ্রেশানের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। প্রত্যেকবারই নূতন নূতন নিয়মকানুন থাকে। এবারেও নূতন নিয়ম, যাত্রীদের নিজেদের পাসপোর্ট নিজেদের স্ক্যান করে নিতে হবে। কীভাবে করতে হবে খুব পরিস্কার করে লেখা আছে, সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করি। কিন্তু আমাদের পাসপোর্ট আর স্ক্যান হয় না। দেখতে দেখতে বিশাল হলঘর প্রায় খালি হয়ে গেছে, শুধু আমি আর আমার স্ত্রী পাসপোর্ট নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করছি! কিছুতেই যখন পাসপোর্ট স্ক্যান করতে পারি না, তখন শেষ পর্যন্ত লাজ-লজ্জা ভুলে, কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা একজন পুলিশ অফিসারের কাছে গিয়ে মিন মিন করে বললাম, “আমার পাসপোর্ট কিছুতেই স্ক্যান হচ্ছে না।”
আমার কথা শেষ করার আগেই পুলিশ অফিসার আঙুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে বলল, “আপনি জাফর ইকবাল না?”
পুলিশ অফিসার বাঙালি। শুধু যে বাঙালি তা নয়, আমাকে চেনে। দেশের এয়ারপোর্টে এটা অনেকবার ঘটেছে। কিন্তু নিউ ইয়র্কের এয়ারপোর্টেও এটা ঘটবে কল্পনা করিনি।
বলা বাহুল্য, এরপর আমার পাসপোর্ট মূহূর্তে স্ক্যান হয়ে গেল (কী কারণ জানা নেই, আমার পাসপোর্টে পুরনো পাসপোর্ট লাগানো থাকে, সে কারণে সাইজ মোটা এবং স্ক্যান করার জন্যে যন্ত্রের মাঝে ঢোকানো যায় না! এরকম অবস্থায় কী করতে হবে আমাদের বাংলাদেশের বাঙালি পুলিশ অফিসার সেটা শিখিয়ে দিল।)” ===
 
লক্ষ্য করুন।
ড. জাফর ইকবাল নাকি একজন বিজ্ঞানের শিক্ষক। সে সামান্য একটা পাসপোর্ট- মেশিনে স্ক্যানিং করতে জানে না।
– সে তার ছাত্রদের কি শিখাবে?
 
সে ভেবেছে- তাকে কোন পুলিশ অফিসার চিনতে পেরেছে ওটাই তার বিশাল অর্জন। জাফর ইকবালের মতো অযোগ্যদের এরচে বড় অর্জন আর কি হতে পারে?
 
আরও দেখুন।
=== “বিদেশের মাটিতে নামার পর নানারকম আশংকায় সব সময় আমার বুক ধুকপুক করতে থাকে। এবারে মূহূর্তের মাঝে সব দুশ্চিন্তা, সব আশংকা দূর হয়ে গেল। মনে হল এই শহরটি বুঝি অপরিচিত, নির্বান্ধব, স্বার্থপর নিঃসঙ্গে একটি শহর নয়– এই শহরে আমার দেশের মানুষ আছে, দেশের বাইরে তারা দেশ তৈরি করে রাখে।
আমার ধারণা যে ভুল নয় সেটি কয়েক ঘণ্টার মাঝে আমি আবার তার প্রমাণ পেয়ে গেলাম। যারা খোঁজ-খবর রাখে তারা সবাই জানে, সারা পৃথিবীতেই এখন উবার কিংবা লিফট নামে নূতন সার্ভিস শুরু হয়েছে। স্মার্ট ফোনে তার ‘এপস’ বসিয়ে নিলেই সেটা ব্যবহার করে গাড়ি ডাকা যায়। ভাড়া নিয়ে দরদাম করতে হয় না। ক্রেডিট কার্ড থেকে সঠিক ভাড়া কেটে নেয়, তাই কোনো টাকা-পয়সার লেনদেন করতে হয় না। স্মার্ট ফোনের ম্যাপে গাড়িটা কোনদিকে আসছে সেটা দেখা যায়, গাড়িটার নম্বর কত, ড্রাইভার কে, তার নাম কী, টেলিফোন নম্বর কত সেটাও টেলিফোনের স্ক্রিনে উঠে আসে।
নিউইয়র্কে পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টার মাঝে আমাদের এক জায়গায় যেতে হবে বলে আমার মেয়ে এরকম একটা গাড়ি ডেকে পাঠিয়েছে। সেটাতে ওঠার আগেই টের পেলাম গাড়ির ড্রাইভার বাংলাদেশের তরুণ। আমাকে দেখে তার সে কী আনন্দ! গাড়ি চালাতে চালাতে তার কত রকম কথা। গাড়ি থেকে নামার পর সে আমার মেয়েকে বলল, তার কোম্পানিকে সে জানিয়ে দেবে যেন আমাদের কাছ থেকে কোনো ভাড়া কেটে নেওয়া না হয়। আমি অনেক কষ্ট করে তাকে থামালাম।” ===
 
ড. জাফর ইকবাল সামান্য ‘উবার’ এর ব্যবহার জানেন না। ওনি বিজ্ঞানের শিক্ষক। ছাত্রদের বিজ্ঞান শিখান। উবার একটি স্মার্ট ফোনের এপস। ওখান থেকে ট্যাক্সি ভাড়া নেয়া যায় এবং ক্রেডিট কার্ড থেকে অটোমেটিক ভাড়ার টাকা কেটে নেয়া হয়।
 
অপর দিকে, ট্যাক্সি ড্রাইভারের কোনও ক্ষমতাই নেই ক্রেডিট কার্ড থেকে ভাড়া টাকা চার্জ না করতে অনুরোধ করবে- কমপিউটারের সফটওয়্যারকে অনুরোধ করা যায় নাকি? এটা ইউএসএ- বাংলাদেশ না। জাফর ইকবাল লিখলেন এবং তার তোষামদ ও কথিত ছাত্ররা শিখলোও।
 
আরও দেখুন।
=== “নিউ ইয়র্ক শহরের নূতন প্রজন্ম অবশ্যি চলাফেরার জন্যে নূতন আরেকটি সমাধান খুঁজে পেয়েছে। সেটি হচ্ছে বাইসাইকেল। আমি যখন প্রথম জানতে পারলাম আমার মেয়ে বাইসাইকেল চালিয়ে আমাদের সাথে দেখা করতে এসেছে, আমি তখন জানতে চাইলাম সাইকেলটি সে কোথায় রেখেছে। রাস্তার পাশে কোনো একটা ল্যাম্প পোস্টে সাইকেলটি বেঁধে রেখে এলে কিছুক্ষণের মাঝেই সাইকেলের ফ্রেম ছাড়া বাকি সব কিছু হাওয়া হয়ে যায়। (আমার ধারণা এই ব্যাপারে নিউ ইয়র্কের মানুষের দক্ষতা আমাদের দেশের মানুষ থেকে বেশি!)
আমার মেয়ে বলল, সে নিউ ইয়র্ক শহরে এসে কোনো বাইসাইকেল কিনেনি। যখনই দরকার হয় একটা ভাড়া নিয়ে নেয়। বিষয়টা আমার কাছে যথেষ্ট বিদঘুটে মনে হল। সাইকেল ভাড়া নিলেও ফেরৎ না দেওয়া পর্যন্ত সেটাকে কোথাও না কোথাও নিজের হেফাজতে রাখতে হয়। পুরো সাইকেল ভাড়া নিয়ে শুধু তার কংকালটা ফেরৎ দেওয়া হলে সাইকেল ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা দুইদিনে লাটে উঠে যাবে।
আমার মেয়ের কাছ থেকে বাইসাইকেল ভাড়া দেওয়া-নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটির বর্ণনা শুনে আমি চমৎকৃত হলাম। সিটি বাইক নাম দিয়ে নিউ ইয়র্ক শহরের অসংখ্য জায়গায় সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছে। যার যখন দরকার হয় এক স্ট্যান্ড থেকে ভাড়া নেয়। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর অন্য স্ট্যান্ডে জমা দিয়ে দেয়। কোথাও কোনো মানুষ নেই, পুরো ব্যাটারটা ইলেকট্রনিক। কে কোথা থেকে ভাড়া নিয়েছে, কোথায় ফেরৎ দিয়েছে, সব কিছু ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে হিসাবে রাখা হচ্ছে এবং ক্রেডিট কার্ড থেকে ভাড়ার টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে।” ===
 
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন এ খুবই সামান্য অল্প কয়েকটা স্থানে ‘সিটিবাইক’ সার্ভিস রয়েছে। বিশাল নিউ ইয়র্কের ম্যানহটনের বাইরে অন্য কোন বরোতে আমি সিটিবাইক দেখিনি বললেই চলে। আর জাফর সাহেব তার মেয়ের কাছে শুনে সমাধান দিয়ে দিল!
এবং তার ছাত্ররা শিখলও। কল্পনায় সমাধান।
 
জাফর মিঞা আরও বললেন আমেরিকার মানুষের নাকি গাড়ী কেনার সমস্যা হয়েছিল? === “মাঝখানে পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তেল-বান্ধব ছোট গাড়ির প্রচলন হতে শুরু করেছিল।” ===
 
এসব তথ্য সে কোথায় পায়? কল্পকাহিনীতে?
 
থামেন ভাই।
জাফর মাষ্টার কল্পকাহিনীও লিখতে পারে না। এই সেই জাফর ইকবাল যে কিনা হলিউডে নির্মিত সিনেমাগুলির গল্প থেকে বাংলায় অনুবাদ লিখে নিজের লেখা বলে চালিয়ে দিয়ে আসছে বছরের পর পর। ওসব প্রমাণ তো এখন সকলের কাছেই কমবেশী রয়েছেও।
 
শেষটায় আরও একটা চমক দেখাচ্ছি- জাফর মিঞা কতকিছু পারে! দেখুন।
 
=== “আজ থেকে প্রায় দুই যুগ আগে আমি যখন আমেরিকাতে ছিলাম তখন থেকে এই মানুষটিকে চিনি। তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন, স্থূল রুচির বাকসর্বস্ব একজন ব্যবসায়ী।” ===
 
ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার একজন বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী।
একজন বিলিয়নিয়ার মানুষ না কি ‘স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন, স্থূল রুচির বাকসর্বস্ব একজন ব্যবসায়ী’। এটা জাফর ইকবাল মিঞার বক্তব্য।
 
এই জাফর ইকবাল কিছুদিন আগে একটা চেতনাযুক্ত ফিল্টার আবিষ্কার করেছেন। সেই ফিল্টারের ভেতর দিয়ে কাউকে ঢুকালে সে চেতনাযুক্ত স্বাধীনতার স্বপক্ষ না বিপক্ষ সেটা বের হয়ে আসে।
 
তো, মিষ্টার জাফর ইকবাল! আপনি নিজেই একবার ঢুকুন ওমেশিনে- আমরা দেখি আপনার মেশিন কি বলে ১৯৭১ সালের ২১ বছরের একজন যুবকের যুদ্ধে না যাওয়া’র চেতনার বিষয়ে!
 
আমরও একটু ধন্য হই!
 
মিষ্টার জাফর ইকবাল, আপনি তো স্রেফ একজন কপিবাজ চোর।
 
প্রমাণ দেখুন।
আপনি ‘অবনীল’ নামক একটি বই প্রকাশ করেন ২০০৪ সালে। আর বইটি হবুহ নকল করে ২০০০ সালে জিম হুইট আর কেন হুইট নামে দুই ভাই মিলে “পিচ ব্লাক” নামে একটি হলিউডের সিনেমা বানিয়ে ফেলেন। বলুন তো চোর কি আপনি না মূল লেখক?
 
আপনি ১৯৯৯ সালে ‘নিতু তার বন্ধুরা’ নামক আরেকটি বই লেখেন। আপনার এই বইটা নকল করে দানি দেভিতো নামে এক ভদ্র লোক ‘ম্যাটিল্ডা’ নামে এক হলিউডের সিনেমা বানিয়ে ফেললেন ১৯৯৪ সালে‍! ছবিটি বাজেটের চেয়ে ৬৫ কোটি ডলার বেশি নিজের পকেটে ঢুকিয়েছেন অথচ আপনাকে একটি টাকাও দিলেন না!!
বলুন তো চোর কি আপনি না মূল লেখক?
 
আপনার ২০০৫ সালে বের হওয়া ‘আমি তপু’ ১০ বছর আগে ১৯৯৫ সালে ডেবিড পেলজার নামে আমিরিকান এক সাহিত্যক নকল করেন। তার বইটির নাম দেন ‘আ চাইল্ড কল্ড ইট’।
বলুন তো চোর কি আপনি না মূল লেখক?
আপনার ২০০০ সালে বের হওয়া ‘মেকু কাহিনী’ বইটি নকল করে ১৯৯৪ সালে প্যাট্রিক রিড জনসন নামে এক হলিউডের পরিচালক বানিয়ে ফেললেন বিশ্ব বিখ্যাত শিশুতোষ ছবি ‘বেবিজ ডে আউট’।
বলুন তো চোর কি আপনি না মূল লেখক?
 
একই ভাবে আপনার ১৯৮৮ সালে ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম বইটি নকল করে ১৯৭৯ সালে বের করা হয় ‘এলিয়ন’ নামের বিশ্বসেরা সায়েন্স ফিকশনটিও।
বলুন তো চোর কি আপনি না মূল লেখক?
 
সারা বিশ্ব আপনার (!) বই নকল করে এ জন্য তারা তিন তিন বার সাহিত্যে নোবেল পেলেও আপনি কি তা প্রত্যাখান করেছিলেন মি. জাফর ই বাল?
 
আপনি তো স্রেফ একজন চোরের চেয়ে বেশী কিছু হতে পারেননি মি বাল?
 
বাংলাদেশে হাজার হাজার ডক্টরেট ডিগ্রীধারী রয়েছেন- সেখান থেকে আলাদাভাবে জাফর ইকবালকে খুঁজে পাবার যোগ্যতা যে ঠিক কোথায়- সেটাই বুঝতে পারছি না!
 
জাফর ইকবাল ঠিক কোন যোগ্যতায় দেশের একজন বুদ্ধিজীবি হয়- আমি হিসাব মেলাতে পারি না। ঠিক যেমন পারিনা সামান্য সুলতান কামাল কে বিশাল কিছু ভাবতে বা হাসানুল হক ইনুর মতো লোকদের নেতা হবার যোগ্য ভাবতে।
 
এদের যোগ্য বানায় দেশের মিডিয়াগুলি। আর বাংলাদেশের মিডিয়া, সাংবাদিকদের পরিচয় তো সবচে সুন্দরভাবে দিয়েই দিয়েছেন মিষ্টার সেলিম ওসমান এমপি। এসব মিডিয়ায় ইসলাম বিরোধী কথা বলতে পারলেই সে বুদ্ধিজীবি বা জাতীয় নেতা হওয়া যায়‍‍!
 
আসল বিষয়টা হলো- আমেরিকায় কিছু না করতে পেরে- হুমায়ূন আহমেদ এর প্রচারণায় দেশে ফিরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেয়ে ছাত্রলীগের ‘দালালী’র দায়িত্ব নিয়েছেন শুধুমাত্র একটা কারণে।
 
আর সেটা হলো- শেখ হাসিনাকে পুজো করে শেখ মুজিবের আওয়ামী ধর্মের অনুসারী হিসাবে ঐ শাহজালার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি’র দায়িত্ব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির অর্থকুপের কতৃত্ব নেয়া।
 
অন্য কিছু নয়।
 
   Send article as PDF