দিলীপ কুমার

দিলীপ কুমারের কথা কার কার মনে আছে?
সরি, আমার কিন্তু মনে নেই- কারণ আমি তাকে চিনিও না, তার কোন সিনেমাও দেখিনি।
শুধু শুনেছি- ওনি বলিউড খ্যাত বোম্বে সিনেমার একসময়ের দুর্দান্ত ‘ট্রাজেডি কিং’।
 
যা-ই হোক দিলীপ কুমার কিন্তু মুসলিম। ভদ্রলোকের মূল নাম মুহাম্মদ ইওছুফ খান।
 
দিলীপ কুমার ১৯৪৪ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত বলিউড দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এবং এখন ক্লান্ত এই ৯৩ বছর বয়সে।
 
আমি ওনার কোন সিনেমা দেখেছি কি না জানি না। ‘দদকারিস্তা’ ছবিটিতে দিলীপ কুমার ছিলেন কিনা মনে নেই।
আমি আসলে বাংলা-হিন্দি কোন সিনেমাই দেখি না।
 
যাই হোক।
ঐ সময়টাতে ভারতে একজন মুসলমানকে টিকে থাকতে হলে অনেক কৌশলী হতে হতো। ইওছুফ খান সাহেব ওনার যথেষ্ঠ যোগ্যতা থাকা সত্বেও যদি ‘হিন্দু নাম’ ধারণ না করতেন তাহলে তিনি নিজেকেই প্রকাশ করতে পারতেন না। ট্রাজেডি কিং হয়তো এতোদিনে কোন সরকারী চাকুরীজীবি বা কোন মহল্লার পান-সিগারেটের দোকানদারী করতেন মুম্বাইতে।
 
কিন্তু এখন দিন বদলেছে।
শাহ্ রুখ খান
সালমান খান
আসিফ আলী খান
আমির খান
ইমরান হাছমি
আদনান সামী
এ আর রহমান
 
এরা সবাই মুম্বাই কাঁপানো মানুষ। এরা সবাই কিন্তু তাদের মুসলিম নাম নিয়েই বলিউড কাঁপাচ্ছে।
 
ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হবার পর এই অঞ্চলে ‘ভারত’ দেশটাই একমাত্র অতি চমৎকার ভাবে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রিয় সরকার ব্যবস্থায়ও অত্যন্ত চমৎকার ভাবেই দেশটাতে ‘গণতন্ত্র’ বিদ্যমান। ভারতের প্রশাসন অত্যন্ত স্মার্ট ও দূরদর্শী। পুলিশ যথেষ্ঠ ভদ্র ও যোগ্যতাসম্পন্ন- অন্তত পাকিস্তান বা বাংলাদেশের তুলনায়।
 
হ্যাঁ, ভারতেরও অনেক দোষ খুঁজে পাওয়া যায় প্রতিদিন। কিন্তু আপনি যদি ভারতকে ‘পাকিস্তান’ বা ‘বাংলাদেশ’ এর সংগে তুলনা করেন- তাহলে ভারত নিঃসন্দেহে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে।
 
বহুবহু বার জীবনে ভারত ভ্রমনের সুবাদে আমি একটা বিষয় লক্ষ্য করেছি- ভারতীয়রা সর্ব ক্ষেত্রে সরাসরি আমেরিকা-কেই ফলো করে; অন্য কোন দেশকে না। কিন্তু তারা কোনদিনও এটা স্বীকার করে না।
 
আসলে চিন্তা করতে হলে আপনাকে সবসময় ‘তাল’ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। তাতে অন্তত ‘তাল’ না পান- ‘তিল’ কিন্তু পাবেনই।
কিন্তু আপনি যদি চিন্তাটা শুরুই করেন ‘তিল’ থেকে! তাহলে আর কি আশা করতে পারেন- বলেন?
 
বাংলাদেশ চিন্তাই করে ‘তিল’ থেকে।
 
যাক ও প্রসংগ থাক। আসল কথায় ফিরি।
 
ভারতে এখন মুসলিমরা নিজ নামেই এগিয়ে চলছে। তাদের কে প্রতিষ্ঠিত হতে- হিন্দু নামে যেতে হচ্ছে না। ভারত রাষ্ট্রটি কাশ্মির বাদ দিলে- মোটামুটি সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।
কিছু আঞ্চলিক বৈষম্যবাদ ও ‘মৌলবাদী বিজেপি’র উত্থান বাদ দিলে ভারত ভালভাবেই ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা’র বৈশিষ্য ধরে রেখেছিল।
 
কিন্তু বাংলাদেশ!
বাংলাদেশের মোটামুটি ৮০% জনসংখ্যা মুসলিম।
 
একটা মজার বিষয় হলো- বাংলাদেশের ‘চেতনাবাজ’ ও ‘একটা শ্রেনীর হিন্দুরা’ সবকিছুতেই সাম্প্রদায়িকতা খুঁজে পায়। যে দেশে প্রতদিন ২০/৫০ জন মানুষ খুন হচ্ছে সেদেশে ঐ ২০/৫০টার মধ্যে একটা ‘হিন্দু’ হলেই তখন ‘সাম্প্রদায়িকতা’ চলে আসে।
 
১০০টা ধর্ষন হোক, কোন সমস্যা নেই কিন্তু একটা হিন্দু হলেই ‘সাম্প্রদায়িকতা’ হয়ে যায়।
 
কত শিক্ষক-কে নিয়ে কত সমস্যা হচ্ছে- কিন্তু একজন শিক্ষক হিন্দু হলেই তখন সেটা ‘সাম্প্রদায়িকতা’।
 
এসব ‘চেতনাবাজ’ ও ‘কথিত হিন্দুগুলি’ কোনদিনও মানুষ ছিল না, এখনও নেই।
 
‘চেতনাবাজ ও কথিত হিন্দুগুলি’ একটা সময় দেশে কোথাও একটা বোমা ফুটলে বা কেউ খুন হলে- বলে বেড়াতো ‘জংগী হামলা’। কিন্তু আজ যখন দেশে সত্যি সত্যি ‘জংগী হামলা’ হচ্ছে- এখন তারা বলে বেড়াচ্ছে এসব স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির ‘নাশকতা’!
 
আমি এসব ‘চেতনাবাজ ও কথিত হিন্দু’দের কোনদিনই ‘সভ্য’ মনে করতে পারিনি।
 
বাংলাদেশে কিন্তু আরো দু’টি বিশাল সম্প্রদায় বসবাস করে। খিষ্ট্রান ও উপজাতীয়রা বা পাহাড়ী/ অবাঙালী আদিবাসীরা। মজার বিষয় হলো- খিষ্ট্রান সম্প্রদায় বাংলাদেশে বেশ ধনী এবং এরা অত্যন্ত নিরীহ জীবন যাপন করে অভ্যস্ত। আদিবাসীদের মধ্যেও ‘উল্লেখযোগ্য’ উগ্রতা দেখা যায় না। পাহাড়ীদের মধ্যে বিশেষতঃ চাকমাদের মধ্যে শিক্ষার হার অনেক বেশী।
 
কিন্তু।
ইদানিং বাংলাদেশে বসবাসকারী ‘কথিত হিন্দু’দের দৌরাত্ম চরম পর্যায়ে পৌছে গেছে। আর এর পেছনে রয়েছেন ‘গোপালগঞ্জ সরকার’ এর প্রধানমন্ত্রির সরাসরি হাত। এবং সবচে বেশী কাজ করছে নবী শেখ মুজিব (জা.) এর নবগঠিত আওয়ামী ধর্মের মাত্মারিক্ত খেয়ালীপনা।
 
বাংলাদেশের প্রশাসনের সর্বত্র এখন হিন্দুদের প্রাধান্য; এরা হয় হিন্দু অথবা নাস্তিক এবং ফাইনালী আওয়ামী লীগ।
পুলিশের বড় কর্তারাও সব হয় নাস্তিক অথবা হিন্দু এবং ফাইনালী আওয়ামী লীগ।
 
এবং এরা সবই চেতনা’র ফেরী করে।
পুলিশ লীগের শহিদুল-বেনজীর-মনিরুল’রা সবসময়ই প্রকাশ্যে ‘রাজনৈতিক’ ভাষায় কথা বলে।
 
বাংলাদেশ কোন সভ্য দেশ হলে- ‘শহিদুল-বেনজীর’রা যে ভাষায় কথা বলে তাতে ওদের অনেক আগেই চাকুরীচুত্য করা হতো- বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতো।
 
কিন্তু এটা শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ তো একটা চুড়ান্ত অসভ্য দেশ।
 
সরকার দেশে আইন করেছে আওয়ামী ধর্মের নবী শেখ মুজিবর রহমান (জা.) এর বিরুদ্ধে কোন কথা বলা যাবে না, কোন কিছু লেখা যাবে না। (শেখ মুজিব’কে জারজ বলে গালি দেয়া যাবে কি না- সে বিষয়টা অবশ্য আমি এখনও ঠিক জানি না!)
 
নবী শেখ মুজিব (জা.) এর বিরুদ্ধে কিছু বললে বা লিখলে- তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করা হবে এবং এক কোটি টাকা জরিমানা ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। (তবে সেটা পুলিশের ক্রস ফায়ারের অাগে না পরে- সেটাও কিন্তু উল্লেখ নেই।)
 
শহিদুল বেনজীররা প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে:
১) শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে কোন কথা বললে সে বাংলাদশের স্বাধীনতার বিরোধী এবং তারা অন্য দেশে চলে যাক।
২) দেশে ইসলাম প্রচার করা যাবে না। ইসলাম মানে জংগীবাদ।
 
আমরা এই ‘অতি মহান’ দেশের নাগরিক!
 
শুরুটা করেছিলাম- দিলীপ কুমার’কে নিয়ে।
 
হিন্দু ভারতে মুসলিম ‘মুহাম্মদ ইওছুফ খান’ নিজেকে ‘দিলীপ কুমার’ নামে পরিচিত করিয়েছেন প্রতিষ্ঠা পাবার জন্য; সেটা ওনি করতেই পারেন।
 
কিন্তু আমার ফ্রেন্ড লিষ্টে অনেকেই রয়েছে ‘হিন্দু’ নামে, অনেককে দেখি নিজের কোন ছবি বা রেফারেন্সও প্রকাশ করছেন না। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি- তারা অাদৌ হিন্দু নন। তারা মুসলিম এবং অত্যন্ত ভালো মুসলিম।
 
তারা ভয় পাচ্ছে ‘নাম প্রকাশ’ পেলে পুলিশ তাদের ক্রস ফায়ারে দেবে।
 
এই দেশের ৮০% লোক না কি মুসলিম!
অথচ এখন ইসলামের পক্ষে কথা বলতেও নিজেকে ‘হিন্দু’ অথবা ‘পরিচয়হীন’ ভাবে প্রকাশ করতে হয়!
 
সিলেটে দেখলাম, ‘ইসকান’ নামে কোন এক ‘কথিত হিন্দু সংগঠন’ পুলিশের সহায়তায় জুম্মার দিনে মসজিদে হামলা চালিয়ে অসংখ্য মুসুল্লীকে আহত করেছে।
 
বাংলাদেশ নাকি মুসলিম রাষ্ট্র!
এদেশে মুসলিমদের কোন নিরাপত্তা নেই।
 
সংবিধান থেকে ইসলামকে (রাষ্ট্র ধর্ম) উঠিয়ে দিতে চেষ্টার কেন কমতি নেই এদেশে- সেখানে অলরেডী প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে আওয়ামী ধর্ম।
 
ভারতীয় হিন্দু ঘরে জন্ম নেয়া দেবদাস পরবর্তীতে আওয়ামী নবী শেখ মুজিব (জা.)- তার ধর্ম প্রচারে কোন বাধা নেই। পাহাড়ী বা আদিবাসী রিমোট অঞ্চলগুলিতে খৃষ্টান মিশনারীদের ধর্ম প্রচারে কোন বাধা নেই। হিন্দুদের ও নেই কোন সমস্যা পুজা পার্বনে বা মন্দিরে।
 
কিন্তু এখন বাংলাদেশে ইসলাম নিয়ে কোন কিছু বলা যাবে না, করা যাবে না।
 
আপনার বাসায় কোন ইসলাম ধর্মীয় বই থাকা চলবে না।
 
৫/৬জন বসে মসজিদে ধর্মীয় কোন আলোচনা করা যাবে না।
 
আজ আওয়ামী ধর্মাবলম্বীরা সরাসরি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে সংগে যুক্ত হয়েছে কথিত মুখোশধারী আওয়ামী হিন্দুরাও।
 
আসলে ওরা তো হিন্দু নয়- ওরাও আওয়ামী ধর্মে বিশ্বাসী।
 
আওয়ামী ধর্ম আজ সরাসরি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে। প্রশাসনের বাইরেও সাংবাদিক ও চেতনাবাজরা এর প্রধানতম অনুসারী।
 
এখনই সময়- বাংলাদেশে কি মুসলিমরা স্বাধীনভাবে নিজ পরিচয়ে বসবাস করবে না আওয়ামী ধর্মাবলম্বীরা মুসলিমদের উচ্ছেদ করতে করতে দেশ ছাড়া করবে।
 
আওয়ামী হিন্দুরা ভুলে গেছে- সেভেনটি ওয়ানে যখন মুক্তিযুদ্ধ হয় তখন অসংখ্য হিন্দু বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে স্থায়ীভাবে চলে যায়।
ওসব পরিত্যাক্ত হিন্দু সম্পত্তিগুলির জোর-জবরদোস্ত মালিকানা নিয়ে নেয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী নেতারা। কোন জামায়াত বা জাতীয়তাবাদীরা হিন্দুদের ১টা বাড়ীও দখল করেনি কোনদিনও। তারপরও বাংলাদেশের হিন্দুদের মধ্যে আওয়ামী অনুসারীর সংখ্যাই বেশী।
 
আর আজ আওয়ামী ধর্মের লোকজনসহ প্রকাশ্যে পুলিশ লীগের শহিদুল-বেনজীররা এদেশ থেকে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের উচ্ছেদ করতে চাচ্ছে যেন জানের ভয়ে পরিত্যাক্ত মুসলিম সম্পত্তি তারা জবরদখল করতে পারে!
 
বাংলাদেশে একটি যুদ্ধ আসন্ন।
মুসলিমদের বেঁচে থাকার যুদ্ধ হবে এটা।
অন্যথায় আওয়ামীরা বেঁচে থাকবে।
   Send article as PDF