প্রিয়তমেষু

আমাকে আপনার চেনার কথা না ভাইজান।
অবশ্য, চেনার মতো কোন কারণও দেখি না।
 
বাট, আপনাকে যেহেতু সকলে-ই চেনে এবং আমিও যেহেতু সেই ‘সকলের’ মধ্যেরই-ই একজন, সেহেতু আমিও আপনাকে চিনি।
 
অবশ্য আমি আরেকটু সামান্য বেশী জানি আপনার সম্পর্কে, আপনি যেহেতু ১৯৯৭-৯৮ সালের দিকে টার্কি’র ‘ইজমির’ শহরে আমার বন্ধু চন্দন ভাইয়ের বাসায় মাস খানেক আতিথ্য গ্রহণ করেছিলেন।
 
আরও একটু জেনেছিলাম আপনার সম্পর্কে সেই টার্কি সফরেরও আগেই যখন লুৎফুজ্জামানকে (উই আর লুকিং ফর শত্রুজ!) টার্কি এম্বাসী ভিসাই দিচ্ছিল না এবং আপনি শাহীনকে বলেছিলেন, ‘শাহীন দেখেন তো বাবরের ভিসাটা করে দেয়া যায় কিনা’!
 
আপনার সংগে সামনা-সামনি দু’দিন দেখা হয়েছিল; একদিন ‘করমর্দন’ অন্য দিন ‘হাই’। ব্যস এপর্যন্তই।
 
অবশ্য, ছোট ভাইয়ার সংগে অরেকটু বেশী দেখা হয়েছিল, ওনার গুলশান-২ এর অফিসেও যেতাম। তার যে ‘হাসানকো’ নামের একটেল এর সংগে ব্যবসাটা হয়েছিল- সেটা ছিল আমারই ‘বিজনেস আইডিয়া’ এবং তার বাস্তবায়নেও আমার অনেক পরিশ্রম ছিল।
 
সে যাক-গে, সেটা ভিন্ন ইতিহাস!
 
আপনার সম্পর্কে বাকীটুকু জানার সুযোগ হয়েছে পত্রিকা পড়ে বা টিভিতে আপনার কথা শুনে।
 
অবশ্য এখন তো আপনার কথা প্রচার করা বাংলাদেশে হারাম।
আপনাকে বাংলাদেশের আদালত চুপ থাকতে বলেছে- তাই আপনিও চুপ রয়েছেন।
 
এজন্য, আপনাকে দেশে ফিরলে- পুরুস্কার স্বরূপ নিশ্চয়ই সিনহা বাবুরা দই-মিষ্টি নিয়ে এয়ারপোর্টে গিয়ে বরণ করবে!
 
আপনি এখন ‘অনেক বড় আইন মান্যকারী’- শেখ হাসিনার এই অবৈধ জমানায়, দুষিত বিচারকের অসভ্য রায়ের!
 
আপনাকে আমি ধন্যবাদ দিতে পারছি না, দুঃখিত।
 
আমি আবার ভূমিকা ছাড়া কিছু লিখতে পারি না। ভূমিকা শেষ করলাম, এখন কাজের কথাগুলি বলা দরকার। যদিও গতকাল পর্যন্তও ভাবিনি আপনার সংগে এই কথাগুলি বলবো!
 
যাই হোক, আপনাকে কয়েকটা ‘গল্প’ বলি।
গল্পগুলি আপনারও শোনা দরকার বলেই আমার মনে হলো।
 
গল্প এক.
বাংলা একাডেমির একুশে বই মেলা থেকে মাহদি, জামিল, মাসরুর, জাবের., জুবায়ের, সুলতান আবদুর রহমান, আবদুল্লাহ জুলকারনাইনসহ ৯ জন কওমি মাদ্রাসা ছাত্রকে বৃহঃবার সন্ধ্যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে। তাদের আপরাধ ছিল, তারা দাড়ি রেখে এবং টুপি, পাঞ্জাবি, পায়জামা পরে এক সাথে মেলায় এসেছিল।
 
গল্প দুই.
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে এখন গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। দাড়িপাল্লায় আর চলছে না যদিও সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল এই তো কয়েকদিন আগেই যে দাড়িপাল্লা যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের প্রতিক সেহেতু জামায়াত ওটা ইউজ করতে পারবে না। তারপরপরই নিজেরাই নিজেদের দাড়িপাল্লা বাদ দিয়ে গ্রীক দেবী মূর্তি স্থাপন করেছে মুসলিম বাংলাদেশে।
 
গল্প তিন.
বিভিন্ন বয়সের ২৮ জন মেয়েকে ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁদেরকে রিমান্ড শেষে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। ছবিতে দেখা গিয়েছে, তাঁরা পর্দানশীন ছিলেন। তাঁদের কারো কারো হাতে পবিত্র কোরআন ছিল। রিমান্ডে যাওয়া মেয়েগুলোর মধ্যে দুগ্ধপোষ্য এই শিশু এবং তার মা-ও ছিলেন!
 
গল্প চার.
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী’র পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মীর কাশিম আলীর পুত্র মীর আহমেদ বিন কাশেম এবং গোলাম আজমের পুত্র আমান আজমী এই তিনজনকে গত আগস্টে তাদের গুম করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী; আজ অবধি তাঁদের আর কোন খবর নেই। এর বাইরে, আপনার নিজ দল বিএনপি’র কয়েক হাজার তরুন নেতা-কর্মীকেও হত্যা, গুম এবং পুঙ্গ করে দেয়া হয়েছে সারা জীবনের মতো করে।
 
গল্প পাঁচ.
জনগণের সরাসরি নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের করা ‘তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা’ বাংলাদেশের সংবিধান থেকে একজন ‘বিচারপতি’ তার এক কলমের খোঁচায় উঠিয়ে দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে এক কালো বিড়ালের নেতৃত্বে নতুন সংবিধান তৈরী করা হয়েছে।
 
গল্প ছয়.
নিউ ইয়র্ক ফেডে থাকা বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভ এর একটা অংশ হ্যাক করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জনগণের টাকার ১২ হাজার কোটি টাকার কোন হিসাব পাওয়া যায়নি গেল বছর। দেশে এখন কথিত ‘বাঁশ উন্নয়নে’র নামে জনগনের ট্যাক্সের টাকার হরিলুট চলছে, প্রচুর বিদেশী লোন নেয়া হচ্ছে যার দায় চাপছে দেশের ১৮ কোটি আদমের কাধে এবং সেই টাকা দিয়ে যথেচ্ছা লুটপাট চালানো হচ্ছে; দেশ বাসীকে বোঝানো হচ্ছে ‘বিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ’ চলছে- দেশ এখন অলরেডী সিংগাপুর আর ৪১ সালের মধ্যে আমেরিকাকেও ছাড়ায়ে যাবে।
 
সজীব ওয়াজেদ জয় মাসে দুই লাখ ডলার করে টাকা নিয়ে নিচেছ। হাসিনা পরিবারের সদস্যদের জন্য বলতে পারেন যা যা সম্ভব তার সবকিছুই লিখে নেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার নিরপত্তা দিচ্ছে ইন্ডিয়ান আর্মি।
 
সেনাবাহিনীকে ৭২-৭৫র মতো করেই নপুংসক বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে। আর বাংলাদেশ পুলিশ এই মুহুর্তে বর্তমান বিশ্বের সবচে ভয়ংকর লাইসেন্স প্রাপ্ত সন্ত্রাসী সংগঠন।
 
এরকম গল্প আমি আপনাকে আরও হাজার খানেক শোনাতে পারবো- ইচেছ হচ্ছে না এখন।
 
আসলে, আপনি এসব কিছু জানেন না- কি না, তাই বলছিলাম।
তাছাড়া কিভাবেই বা জানবেন? আপনি তো বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দূরে বসবাস করেন। এতো এতো দূরে থেকে কি আর এইসব খুচরা খবরাখবর রাখা সম্ভব; আপনিই বলুন?
 
আপনার একটা ফেসবুক থাকলেও না হয় কথা ছিল।
ঠিক বলছি না ভাইজান?
 
ওহ আরও একটা খবর দিতে ভুলে গেছি। মাহমুদুর রহমান সাহেবকে বিনা বিচারে ৪ বছর নির্যাতন ও জেল খাটিয়ে অবশেষে মুক্তি দেয়া হয়েছে- তার ডান হাত এখন আর তুলতে পারেন না তিনি; তাই লিখতেও পারছেন না। দেশের আদালত তাকে চিকিৎসার জন্য ‘ম্যাক্সিমাম ৩০ দিন’ এবং ‘শুধুমাত্র বৃটেনে চিকিৎসা গ্রহনে’র অনুমতি দিয়েছিল।
 
কিন্তু বৃটিশ দূতাবাস তাকে ভিসা-ই দেয়নি।
 
কিন্তু এসব কথা আমি আপনাকে কেন বলছি?
আপনি যেহেতু নিজে থেকে এসব খবর রাখেন না- সেহেতু আপনাকে জাননোর কোন দায় আমার রয়েছে এমনটা আমি নিজেও বিশ্বাস করি না।
 
আপনি ১৯৯১-১৯৯৬ সালের বিএনপির ক্ষমতাকালীন সময়ে তেমন একটা সক্রিয় ছিলেন না। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের একমাত্র সৎ, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সাহসী নেতা ছিলেন- যার প্রধানতম দু’টো কাজ ছিল দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়া এবং দেশের মানুষকে একটা অভিন্ন ও যুক্তিগ্রায্য জাতীয় পরিচয় ‘বাংলাদেশী’ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা।
 
বাংলাদেশ সৃস্টিতে মহান স্বাধীনতার নেতৃত্বে এবং যুদ্ধের মাঠে তার সাহসী ও সক্রিয় অংশগ্রহন- সেটা তো শুধুই গর্বের ইতিহাস। তিনি কিন্তু পালিয়ে পাকিস্তান চলে যান নি, পাক বাহিনীর কাছ থেকে মাসিক ১৫০০ রুপি করে ভাতা নেননি বরং নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সংগে বিদ্রোহ করেছেন। ঐ মহান যুদ্ধে পাকিস্তানী বাহিনী বিজয়ী হলে জিয়াউর রহমান সাহেবের মৃত্যুদন্ড হতো। তিনি সবকিছুর উপরে উঠতে পেরেছিলেন এবং নিজেকে দেশের জন্য অমূল্য সম্পদ হিসাবে প্রমাণ দিয়েছেন। এবং বিনিময়ে দেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসাও পেয়েছেন।
 
আর দেশের মানুসের ভালবাসাটা এতই বেশী ছিল যে- শুধুমাত্র তাঁর স্ত্রী হবার সুবাদে বেগম খালেদা জিয়া’র নেতৃত্বকে মেনে নিয়ে বিএনপিকে মানুষ দু’বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে ক্ষমতায় পাঠিয়ে তার ঋণ শোধ করেছে।
 
আপনি সেই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছেলে।
তবে, আমি ‘এমন’ ‘আজব উত্তরাধিকারী যোগ্যতা’কে সম্মান করি না। বিশ্বাসও করি না। আমি ‘শুধুই যোগ্যতা’কে সম্মান করি।
 
গণতন্ত্রকে সম্মান করি।
মানবাধিকারকে সম্মান করি।
 
দেশে গণতন্ত্র ও মানবধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- সেটার আশায় মানুষকে সচেতন করি। লিখি।
 
আমি রাজনীতি করি না।
বিএনপি, আম্লীগ বা জামায়াতের সংগে আমার কোন কালেই কোন সম্পর্ক ছিল না ভবিষ্যতে হবে- সেটা আমি চাইও না।
 
আমি শুধু দেখতে চাই- দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এদেশের যে-কোন ছেলে-মেয়ে স্বপ্ন দেখে বড় হচ্ছে যে চাইলে, যোগ্যতা অর্জন করলে সে নিজেও দেশের প্রেসিডেন্ট হবে, সরকার প্রধান হবে। যেমনটা হতে পেরেছে সাদা আমেরিকায় কালো বারাক ওবামা অথবা রাজনীতির সাথে সম্পর্কহীন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো মানুষও শুধুই নিজেকে ‘যোগ্য’ সেটা মাঠে-ময়দানে ‘প্রমাণ’ দিয়ে।
 
আমি দেখতে চাই না হাওয়া ভবনে বসে আপনি ঠিক করে দেবেন যে মৌলভীবাজারে কোন আসনে প্রতিদ্বন্দীতা করবে কোন এক দারাদ হোসেন কিংম্বা দোহারে নাজমূল হুদা।
 
আমি চাই দোহার বা মৌলভীবাজারে কে নির্বাচন করবে- সেটা নির্ধারণ করে দেবে দোহার বা মৌলভীবাজারের বিএনপি নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে এবং আপনাকে নির্দেশনা দেবে সেখান থেকেই- আপনি কোন নির্দেশনা দেবেন না কাউকে সকলে নিজেরাই নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে নির্বাচন করবে, নির্বাচিত হবে।
 
এমনকি আপনি নিজেও নির্বাচিত হয়েই দলের চেয়ারম্যান হোন, সরকার প্রধান হোন। জিয়াউর রহমানের ছেলের পরিচয় দিয়ে নয়।
 
জর্জ বুশ সিনিয়র এর ছেলে জর্জ বুশ জুনিয়রও কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন- কিন্তু সেটা ছিল তার নিজেকে যোগ্য প্রমাণ দিয়ে- বাবার নাম ভাংগিয়ে নয়।
 
আপনি মৌলভীবাজারে দারাদ হোসেন বা দোহারের নাজমুল হুদাকে তাদের নিজস্ব যোগ্যতা ও গ্রহণ যোগ্যতা প্রমাণ দিয়ে রাজনীতি করার ব্যবস্থা করে দিন।
 
একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবুন।
আপনার দলে যদি আপনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশী সস্তা গণতন্ত্র না। পরিবারতন্ত্র না। এক ব্যক্তির গণতন্ত্র না।
 
আসল গণতন্ত্র।
যে গণতন্ত্র আপনি নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছেন এখন বৃটেনে।
 
যেখানে যোগ্যতা দিয়ে নেতা হতে হয়।
যেখানে টনি ব্লেয়ার, জন মেজর বা টেরেজা মে’রাও প্রাইমমিনিষ্টার হতে পারে।
 
আজ আপনি বর্তমান সিষ্টেমে হয়তো ‘ক্ষমতা এনজয়’ করে যাচ্ছেন- অথবা ‘দু পয়সা’ অবৈধ আয়ের সুযোগও নিচেছন কিন্তু পরিণামে আজ ‘আপনি’ হয়ে লন্ডনে মুখ বন্ধ করে নির্বাসনে রয়েছেন।
 
আপনি এমন কোন অন্যায় করেননি যে আপনাকে হাত-চোখ বেঁধে দোতালা থেকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দিয়ে আপনার মেরুদন্ড ভেংগে ফেলতে হবে! কিন্তু আপনাদের প্রতিষ্ঠিত সেই ‘সস্তা গণতন্ত্র’-ই আপনাকে নীচে ফেলে দেবার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিল এবং সেই ‘সস্তা গণতন্ত্র’টুকুও আজ আর নেই। শেখ হাসিনার গণতন্ত্রে ‘গ’টুকু রাখেনি আজ দেশে।
 
আপনি নেতা হিসাবে দারুণ। আপনার কিছু চমৎকারিত্ব আছে। আপনি মানুষকে সংঘঠিত করতে জানেন। আপনি সারাদেশে আপনার দলকে যথেষ্ঠ চাংগা করে ফেলতে পেরেছিলেন ক্ষমতায় থাকার সময়টাতে।
 
সবচে বড় কথা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সবচে বড় শত্রুও বলতে পারবে না মানুষ হিসাবে ব্যক্তি জিয়াউর রহমানের কোনরকম দুর্বলতা ছিল। তিনি ছিলেন একাধারে সৎ, সাহসী, নির্ভীক, বুদ্ধিমান, প্রত্যয়ী এবং বিনয়ী।
 
আর, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ লোকের ভালবাসা।
আপনি আরেকজন জিয়াউর রহমান হলে- আপনার এমন কিছুই ক্ষতি হতো না।
 
কিন্তু আপনি জিয়াউর রহমান হতে পারেননি।
এবং এটাই আপনার সবচে বড় ব্যর্থতা।
 
আপনার বিরুদ্ধে কেন হাওয়া ভবনের অভিযোগ উঠবে?
আপনার বিরুদ্ধে কে অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠার সুযোগ পাবে?
আপনার বিরুদ্ধে কেন ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠবে?
আপনার বিরুদ্ধে বেয়াদবীর অভিযোগ উঠবে?
 
আমি কিন্তু বলছি না- অভিযোগগুলি সঠিক।
আবার মিথ্যাও বলতে পারছি না।
 
কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ছিল, আছে।
অভিযোগ উঠার সুযোগ দেয়াটাই একটা অপরাধ।
আপনি সেই অপরাধে অপরাধী।
 
আমি বলছি- জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কি কেউ এসব কোন অভিযোগ তুলতে পারবে?
 
না। পারবে না।
তিনি ‘জিয়াউর রহমান’ হয়ে উঠেছিলেন।
 
বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। এক কথায় বললে ভয়াবহ এক অবস্থা দেশে।
 
দম বন্ধ করা পরিবেশ। ভয়ংকর সাইক্লোন হবার আগে যেমন অস্বস্তিকর গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করে- বাংলাদেশটা এখন ঠিক তাই।
 
একটা ঘুর্ণিবর্তে পরে রয়েছে অতি অভাগা দেশটা।
উদ্ধার করার মতো কেউ নেই।
 
অবৈধ শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাা শূণ্যের কোঠায়।
একমাত্র সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী আর সামান্য কিছু অসুস্থ্য মস্তিস্ক ছাড়া কেউ-ই শেখ হাসিনাকে সমর্থন করছে না।
 
১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবের যে অবস্থা ছিল বর্তমানে শেখ হাসিনার অবস্থা তারচেও খারাপ।
 
শেখ মুজিব দুর্দান্ত ব্লাগ্মী ছিলেন- কথা বলেই মানুষকে থামিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু দেশটা ধ্বংশ করে দিয়েছিলেন শেখ মুজিব।
 
দেশে গণতন্ত্র ছিল না।
মানবাধিকার ছিল না।
সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে, চেইন-অব-কমান্ড ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে রক্ষীবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন দেশের অশান্তির নেতৃত্ব।
 
অথচ মানুষ গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের জন্যই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল।
 
ক্ষতি শেখ মুজিব যেটা বেশী করেছিলেন- ৭৪র দূর্ভিক্ষ দিয়েছিলেন, অশান্ত দিয়েছিলেন, সন্ত্রাসের অভায়রণ্য করেছিলেন দেশটাকে। বলতে গেলে কোন প্রশাসন ছিল না।
 
শেখ মুজিবের কথাই ছিল আইন। আর শেষটাতে তো- সরাসরি চক্ষু লজ্জার মাথাটাও খেয়ে গঠন করা হলো পারিবারিক একদলীয় বাকশাল।
 
মোদ্দকথা যাষ্ট একটা আবর্জনার স্তুপ হয়েছিল তখন বাংলাদেশ।
 
কিন্তু দেশপ্রেমিক অল্প কিছু জুনিয়র অফিসার সেদিন একটা ‘ন্যাসেসারী’ হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে দেশটাকে রক্ষা করতে পেরেছিল।
 
আজও কিন্তু তারচেও খারাপ অবস্থা।
বিষয়টা এমন যে, শেখ হাসিনা তার জঘন্য ‘আচরণ’ ও কুকর্ম দিয়ে এতটাই নীচে নেমেছে যে মানুষ বলতে বাধ্য হচ্ছে যে হাসিনার চেয়ে শেখ মুজিবও ভালো ছিল।
 
মানেটা পরিষ্কার।
শেখ হাসিনা তার বাবাকে ‘ভালো’ বলিয়েই ছাড়বে।
এটাই দেশের উপর শেখ হাসিনার প্রতিশোধ।
 
এবং বাস্তবতা হলো- যে কোন একটা সামান্য ঝড়েই শেখ হাসিনার অবৈধ সরকার উড়ে বাতাসের সংগে মিশে যাবে। এতটাই দূর্বল শেখ হাসিনার অবস্থা। শুধুমাত্র সামান্য কিছু মেধা ও ব্যক্তিত্বহীন ‘গোপালগঞ্জবাসী অফিসারে’র বুটের উপর শেখ হাসিনার সরকার দাড়িয়ে রয়েছে।
 
গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলাম সময় দেখা গেছে- এরা কিভাবে রাজপথে সহায় সম্বলহীন ভাবে হাত-পা কাপাকাপি করছে- তখন একটু যদি কেউ ধাক্কা দিতো- সেদিনই শেখ হাসিনা উড়ে যেত।
 
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে যতই টাকা খাইয়ে নপুংসক করে রাখা হউক না কেন- প্রয়োজনের সময় এরা শেখ হাসিনার পাশে দাড়াবে না।
 
পুলিশ ও রাবের সামান্য কয়েকজন গোপালী অফিসার ছাড়া- কোন একজন এসপি, এএসপি বা ইন্সপেক্টর ও সাব-ইন্সপেক্টরও হাসিনার পাশে দাড়াবে না।
 
কথাটা আমার বাস্তব অভিজ্ঞতায় বলছি।
অবস্থা এতটা-ই খারাপ।
 
একজন পুলিশ অফিসার মারা গেলে দেশে আজ আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। যেন হাসিনারই মৃত্যু হয়েছে।
 
একজন কালো বিড়ালের মৃত্যূ আজ গণমানুষকে উদ্দেলিত করে।
 
কিন্তু এমনটাতো বাংলাদেশের মানুষ নন।
এসবই হাসিনার উপর নীরব প্রতিশোধ।
 
মানুষের মুখ বন্ধ করে রাখার প্রতিশোধ।
নিরীহ মানুষ হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে মানুষের অবস্থান।
অসহায় মানুষকে খুন, গুম, নির্যাতন, জেল, জুলুম এর বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিশোধ।
 
কিন্তু তারপও শেখ হাসিনা টিকে রয়েছে।
এর কারণটা কি?
 
কারণটা অত্যন্ত ছোট। এবং বাস্তব।
আর সেটা হলো- শেখ হাসিনার বিকল্প বেগম খালেদা জিয়া নন।
আওয়ামী লীগের বিকল্প বিএনপি নয়।
 
সে যোগ্যতা বিএনপি হারিয়েছে।
সে যোগ্যতা বেগম খালেদা জিয়া হারিয়েছেন।
সে যোগ্যতা আপনিও রাখতে পারেন নি।
 
কিভাবে হারিয়েছেন সে যোগ্যতা শুনতে চান?
আপনি সেটা জানেন না।
 
সেটা ক্যালকুলেশন করা মতো মেধা আপনার নেই।
এবং আপনাকে যারা গাইড করে- তাদেরও নেই সেই যোগ্যতা। বেগম খালেদা জিয়াকেও যারা গাইড করে- তারাও জানে না।
 
কারণ আপনাদের চারপাশে সকলেই সুযোগসন্ধানী তোষামদ এরচে বেশী কিছু না।
 
সুযোগে এরা অনায়াসেই আপনাকে বা বেগম জিয়াকেও ফেলে দেবে।
 
কেন?
উত্তর জানতে চান?
 
আপনার দলও দেশে গণতন্ত্র দেয়নি।
আপনার দলও ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী একটি নির্বাচন করেছিল- আপনারা ব্যর্থ হয়েছিলেন আর শেখ হাসিনা ২০১৪র ৫ই জানুয়ারী সফল হয়েছিল।
 
যাষ্ট এতটুকু-ই পার্থক্য।
 
আপনার ২০০৬ সালে এমন কোন বাহানা নেই যা এপ্লাই করেননি- পুনারায় ক্ষমতা ধরে রাখতে।
 
আপনাদের- দেশের জনগণের প্রতি বিন্দু মাত্র বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, ভালবাসা অথবা ভক্তি নেই। বাংলাদেশের জনগণ শুধুই গিনিপিগ।
 
আপনাদের কাছে এরচে বেশী কিছু তারা কোনদিনই ছিল না।
 
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের মানুষকে গিনিপিগ থেকে মানুষে পরিণত করেছিলেন বলেই মানুষ আজও প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে মনে রাখে, তাঁর নাম অতি শ্রদ্ধার সংগে ভালবাসা মিশিয়ে উচ্চারণ করে।
 
কিন্তু বেগম জিয়া বা আপনি সেটা করতে পারেননি।
আপনার হাতে সুযোগ ছিল। সেটা করতে পারলে আপনি এমনিতেই সারাজীবন ক্ষমতায় থেকে যেতে পারতেন।
 
বাংলাদেশের মানুষের চাহিদা অত্যন্ত কম।
এরা উচ্চাভিলাষী না। এরা স্রেফ দু’বেলা ডাল-ভাতেই খুশী।
 
এরা স্বপ্ন দেখতে জানে না কেউ এদের স্বপ্নও দেখায় না।
অবশ্য এমন কেউ নেইও যে তাদের স্বপ্ন বুঁনে দিতে পারে এদেশে।
 
তবে হ্যাঁ। এই কাজটাতে আমি হাত দিয়েছি।
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি দেশবাসীকে স্বপ্ন দেখাবো। এমন স্বপ্ন দেখাবো- সেই স্বপ্নের বাস্তবতা দেখতে এরা ঘুমানোর সময়ও পাবে না।
 
আমি আমার নিজের কাছেই এটা নিয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
গণমানুষকে আমি জাগাবোই।
 
স্বপ্নগুলি হবে গণতন্ত্রের।
স্বপ্নগুলি হবে মানবতাবাদের।
স্বপ্নগুলি হবে দুইবেলা সামান্য ডাল-ভাতের পরিবর্তে তিনবেলা ‘পরিমিত ক্যালরী’ গ্রহনের।
 
স্বপ্নগুলি হবে প্রতিটি মানুষ হবে উচ্চ আয়ের। ইচেছ মতো তারা আয় করবে। ইচ্ছে মত খরচ করবে। সকলের হাতে হাতে থাকবে আইফোন সেভেন। নিজস্ব দামী গাড়ী হাকাবে সকলে। কথায় কথা উড়াল দেবে আমেরিকা ইওরোপ ছুটি কাটাতে। আর বিদেশীরা আসবে মালের অর্ডার করতে হংকং, দুবাই যেভাবে এখন ছুটে মানুষ।
 
সভ্যতা, উন্নয়ন এবং অর্থ এই তিনটা বিষয় নির্ভর করে শুধুই রাস্ট্রের নির্বাহীর যোগ্যতার উপর। নির্বাহী যা চিন্তা করতে পারে – তাই করা সম্ভব।
 
আমি ১৮ কোটি মুখ দেখি না। আমি দেখি ৩৬ কোটি হাত এবং ১৮ কোটি শক্তিশালী মগজসম্পন্ন মানুষ।
 
৩৬ কোটি কর্মীর হাত দিয়ে যা ইচেছ তাই করা সম্ভব।
 
আমি ধীরে ধীরে এমন স্বপ্ন বুঁনবো- ওদের এই স্বপ্নের বন্যায় হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে পরিবারতন্ত্র। অযোগ্যের শাসন। তখন শুধু জিয়াউর রহমান সাহেবের ছেলেই ক্ষমতার চেয়ার স্বপ্ন-এ দেখবে না- চেয়ারে নজর রাখবে চাপাই নবাবগঞ্জ থেকে শুরু করে কুড়িগ্রাম বা খাগড়াছড়ি থেকেও কেউ একজন।
 
একজন সাওতালও স্বপ্ন দেখতে শিখবে দেশের প্রধান নির্বাহীর চেয়ারে বসার।
 
তাহলে আপনাকে কেন লিখছি?
হ্যা। এটারও উত্তর রয়েছে।
 
দেশে কিছু একটা ঘটবেই। খুব তাড়াতাড়িই ঘটবে। এতটা অন্যায় করে শেখ হাসিনা আর বেশী দিন ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। সেই যোগ্যতা বা দক্ষতা তার নেই- যেটা সে দেখাচ্ছে সেটা শুধুই শক্ত কারো অনুপস্থিতির জন্য।
 
কিন্তু প্রকৃত বেশীদিন শূণতা মানে না।
কেউ না কেউ আসবেই।
 
যেমন ১৯৭৫ সালেই এসেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি অন্ধকারে আলোর বর্তিকা হয়ে এসেছিলেন- সিপাহী-জনতা তাকে খুঁজে বের করেছিল সেদিন।
 
সেভাবেই কেউ হয়তো বা বের হয়ে আসবেন।
 
কিন্তু অতি সামান্য কয়েকটা কাজ করলে- আপনিও এখন সেই কেউ একজন হতে পারেন। আমি সেই যোগ্যতা আপনার ভেতরে খুঁজে পাই।
 
আপনি যাষ্ট নিজে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কয়েকটা কাজ করবেন। আপনাকে সুস্পস্ট কয়েকটা বিষয়ে ঘোষনা দিতে হবে।
 
১) আপনি দেশে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার’ বাস্তবায়ন করবেন। আপনার দলের ভেতরে আপনি পূর্ণ গণতন্ত্র চালু করবেন ঠিক যেভাবে গণতন্ত্রের চর্চা হয় ইওরোপ-আমেরিকায়। আপনি গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করবেন না- কোন অবস্থাতেই না। এবং পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দল ছাড়া দেশে কেউ কোন রাজনৈতিক দল করার অনুমোদন পাবে না।
 
২) বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান বাতিল করে সম্পূর্ণ নতুনভাবে একটা গণমূখী, গণতান্ত্রিক, মানবতাপূর্ণ নতুন সংবিধান তৈরী করবেন যেখানে লোকাল গভর্ণমেন্ট ব্যবস্থায় জোর দেয়া হবে, পুলিশ থাকবে সিটি বা লোকাল গভর্ণমেন্ট এর আওতাধীন। লোকল নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগ থাকবে সম্পূর্ণভাবেই সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত। নির্বাচনকালীন তত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থা সৃষ্টি করবেন। এবং ক্ষমতার মেয়াদ হবে ৪ বছর ব্যাপী এবং দুই বারের বেশী কোন নেতাই কোন পদেই (মেয়র, চেয়ারম্যান, উপজেলা বা জেলা চেয়ারম্যান এমপি, প্রধান নির্বাহী ইত্যাদি) থাকতে পারবে না।
 
৩) দেশের প্রতিটি নাগরিককে সোসাল সিকিউরিটি নাম্বারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি গরীব মানুষের জরুরী মেডিকেল ট্রিটমেন্ট সম্পূর্ণ ফ্রি প্রদান করতে হবে। মানুষ ট্যাক্স দেয় কিছুই পায় না- আপনাকে সেই ট্যাক্সের বিনিময়ে প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি গরীব নাগরিককে আর্জেন্ট মেডিকেল সেবা সম্পূর্ণ ফ্রিতে প্রদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে ও আইন করতেহবে।
 
৪) বর্তমান পুলিশী সিস্টেম বাতিল করে নতুন আইন করতে হবে- যেখানে কোন থানা ভিত্তিক পুলিশী কাঠামো থাকবে না। প্রতিটি ইউনিয়নে আদালত গঠন করবেন এবং পুলিশের কাজ হবে যে-কোন আসমীকে ধরে সরাসরি আদালতে নিয়ে জাজের সামনে উপস্থিত করা। পুলিশ কোন মানুষের শরীরে একটা ফুলের টোকা দেবার ক্ষমতা রাখবে না। একজন সাধারণ মানুষও অন্য আরেকজন সাধারণ মানুষের গায়ে হাত তুলতে পারবে না- পিতামাতাও সন্তানের গায়ে হাত তুলতে পারবে না। মানবাধিকারের সর্বোচ্চ আইনী ব্যবস্থা তৈরী করবেন।
 
৫) দেশের সাধারণ মানুষকে কর্মীতে রূপান্তর করতে হবে। দেশে ইংলিশের উপর জোর দিতে হবে শিক্ষা ব্যবস্থায়। বর্তমান বিভ্রান্তিকর শিক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়ে সম্পূর্ণ ভোকেশনাল ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন করা হবে। শুধুমাত্র বাছাই করা অতি মেধাবীরাই যোগ্যতানুযায়ী উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবে এবং গবেষনার কাজে যুক্ত হবে। বাকীদের ১২ বছরের বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা এমনভাবে চালু করতে হবে- যাতে ১২ বছরের শিক্ষার পর তাকে চাকুরীর পেছনে দৌড়াতে না হয়- চাকুরীই তাকে খুঁজে নেয়।
 
প্রত্যেকের ইংলিশে এবং কাজের দক্ষতাগুণে বিদেশে উচ্চ বেতনে চাকুরীর সুযোগ নিশ্চিত করা হবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এবং সবচে বড় কাজ যেটা করতে হবে তা হলো দেশের মানুষ যেন খুব সহজে একটা ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ পায় তা নিশ্চিত করা। ব্যবসা শুধুমাত্র গুটি কয়েক ব্যাংক, মোবাইল কোম্পনীর জন্য সীমাবদ্ধ করে রাখা যাবে না। যে-কোন মানুষ নূনতম বিনিয়োগে যে-কোন মাথা খাটিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ পাবে। দেশের ব্যবসা অান্তর্জাতিক পর্যায়ে রূপান্তর করে দিতে হবে যা করে যাচ্ছে চায়না, হংকং, মালয়েশিয়া এবং হালের ইন্ডিয়াও।
 
কথিত নারীর ক্ষমতায়ন এর বস্তপঁচা শ্লোগান, নারী কোটা, বিরক্তিকর মুক্তিযোদ্ধা কোটা, মুক্তিযোদ্ধার নাতী-নাতনী কোটা, উপজাতীয় কোটা সব বাদ দিতে হবে। প্রতিটি মানুষ, যে কোন মানুষ শুধুই তার নিজের যোগ্যতানুযায়ী যে-কোন চাকুরীতে নিয়োগ পাবে।
 
যোগ্যতাই হবে একমাত্র শর্ত ও কোটা।
 
আমি এরকম আরও অসংখ্য জনগণবান্ধব সিষ্টেম উপস্থাপন ও বাস্তবায়ন করার বিষয়ে আলোচনা করতে রাজী। যাতে দেশের প্রতিটি মানুষ উপকৃত হবে। প্রতিটি মানুষ আয় করবে।
 
ছোট বাংলাদেশ মোটেও কৃষিভিত্তিক থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারবে না- আমাদের ব্যাপক শিল্পায়ন ঘটাতে হবে। প্রতিটি মানুষের হাতে প্রচুর টাকা তুলে দিতে হবে। দেশে কোন গরীব থাকবে না। সকলে সচেতন হবে, মাথা খাটিয়ে আয় করা শিখবে।
 
আপনি যদি অনেষ্টি এবং প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে এভাবে ঘোষনা দিতে প্রস্তত থাকেন; তাহলে আজই একটা ফেসবুক ও টুইটার পেইজ খুলেন নিজ নামে। প্রতিমুহুর্তে ঘোষনা দিতে থাকেন গণমানুষকে উদ্দেশ্য করে।
 
বিদ্রোহ ঘোষনা করেন এই অবৈধ দুরাচার জালিম শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
 
আমি জানি সর্বোচ্চ ১ মাসের মধ্যেই আপনার পেইজে ফলোয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
 
আপনি একটা বিদ্রোহী টেলিভিশন চ্যানেল চালু করেন।
 
নিজেকে প্রচারে আনেন।
মানুষকে রাস্তা দেখান।
 
মানুষ একজন নেতা চায়।
কিন্তু মানুষ একজন সৎ, সাহসী নেতৃত্ব চায়।
 
আগের সেই তারেক রহমানকে চায় না।
নতুন কাউকে চায়- আপনি এখনও তরুন। আপনি বুদ্ধিদীপ্ত। আপনি মানুষের সংগে যোগাযোগ করতে পারেন। কিন্তু আপনাকে শতভাগ অনেস্ট হতে হবে।
 
পূর্বের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে সম্পূর্ণ নতুন তারেক রহমান হয়ে সামনে চলে আসুন।
 
আপনি যদি এসব না করতে চান- কোন সমস্যা নেই।
 
এদেশে এমন দিন নিশ্চয়ই আসবে।
আমি মানুষের ভেতরের স্বপ্ন জাগাবো-ই।
 
হয়তো একটু সময় লাগবে। দশ বছর। বিশ বছর বা আরও বেশী।
 
মানুষকে হয়তো আরও টু ডেকেট কষ্ট করতে হবে।
তবুও সময় আসবেই ইনশাল্লাহ।
 
শেষে আরেকটি গল্প বলি।
এভাবে চলতে থাকলে সেদিন বেশী একটা দূরে নেই- যেদিন বেগম খালেদা জিয়াকে অবৈধ সরকার ও তার পকেটজাত বিচার বিভাগকে দিয়ে কারাদন্ডে দন্ডিত করে এই বৃদ্ধ বয়সে জেলে ঢুকাবে।
 
আমি চাই না আপনি সেই দিনটি দেখুন।
আপনি স্থান পরিবর্তন করুন। আমেরিকায় চলে আসুন। আপনার জন্য লন্ডন ভালো জায়গা না।
 
ইমাম খোমেনী সুদুর প্যারিসে বসে তেহরানের দুর্দান্ত প্রতাপশালী রাজা শাহকে উৎখাত করেছিলেন।
 
দুরত্ব কোন বিষয় না।
কিন্তু অনুকুল পরিবেশ একটা বড় বিষয়।
 
লন্ডনে সেটা আপনি পাচেছন না।
 
আর যদি, এসব কিছুই করতে না চান- তাহলে শেষ একটা বুদ্ধি দিই।
 
আপনার মা’র এখন অনেক বয়স হয়েছে।
তাকে আপনার কাছে নিয়ে যান। শুধু শুধু মা’কে কষ্ট দিতে নেই।
 
আর আপনিও বাংলাদেশকে ভুলে যান।
জনগণ কোনকালেও আপনাকে ডেকে নিয়ে ক্ষমতায় বসাবে না।
 
সেই দিন আর নেই।
   Send article as PDF