ইস্টার্ন রিফাইনারি

ইস্টার্ন রিফাইনারির বিষয়ে আমাকে বেশ কয়েকজন কিছু লেখালেখি করার অনুরোধ জানিয়ে ইনবক্স করেছেন। আসলে এসব ব্যাপারে আমি তেমন একটা জ্ঞান রাখি না। অার যা জানিই না সেটা বলার সাহস আমার নেই।
আমি একটু অন্য দিকে যাই।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল এবং অত্যন্ত চমৎকার ভাবে, সর্বোচ্চ সভ্যতা প্রদর্শন করে শেখ হাসিনা কোন রকম কুট-চাল না চেলেই এবং যথাসময়ে তত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বিদেয় নেন।
সে হিসাবে বেগম জিয়া, ১৯৯৬ এবং ২০০৬ এই দু’দুবারই তত্বাবধায়কের হাতে ক্ষমতা দিতে এমন কোন অসভ্যতা নেই যা করেননি।
সুতরাং ২০০৯ সালের নির্বাচনে আগের (এরশাদ পরবর্তী) সরকারগুলির সভ্যতার বিচারে আমি সহ অনেকেই আওয়ামী লীগের নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছিলাম। বিএনপির বিরোধীতা করেছিলাম।
এবং পরিণামে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতার চাবি হাতে নিয়ে সকল অসভ্যতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এই মুহুর্তে পৃথিবীর সবচে অসভ্য মহিলা এবং অসভ্য, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বাকী জীবন ক্ষমতায় থাকার স্কাজুয়াল করে নিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের কষ্টের সকল টাকা পয়সা ও ক্ষমতা নিজ এবং পরিবারের আনন্দ-উল্লাসে নিয়োজিত করেছেন।
একটু ঠান্ডা মাথায় ভাবলে- এটাই আওয়ামী লীগের প্রকৃত চরিত্র।
বাংলাদেশের মানুষ যে গণতন্ত্রের জন্য জীবন বাজী রেখে, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল; শেখ মুজিব সেই দেশ থেকে গণতন্ত্র বিদায় করে দিয়েছিলেন মাত্র ৩ বছরে মাথায়। সংবাদপত্রে স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা সব বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
অপর দিকে শেখ হাসিনা দেশের সংবাদমাধ্যগুলিকে গৃহপালিত গরু (সরি, গৃহপালিত সাংবাদিক) বানিয়ে আজ্ঞাবহ করিয়ে নিয়েছেন। বাবার আদর্শের ব্যক্তিস্বাধীনতা বন্ধের পরিবর্তে স্বাধীন-মতবাদকে হত্যা, গুম করে দিয়েছেন। শেখ মুজিবের রক্ষী বাহিনীর আদলে বাংলাদেশে আওয়ামী পুলিশ লীগ গঠন করে নিয়েছেন।
তবে, শেখ মুজিব যে কাজটা কোনদিনই করেননি- সেটা হল তিনি ভারতের কাছে নতজানু হননি। সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশ থেকে প্রথমেই ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বিতারিত করেছেন।
কিন্তু শেখ হাসিনা তার উল্টো পথে হেঁটে চলছেন।
বর্তমানে বাংলাদেশ শাসিত হচ্ছে নতুন দিল্লী থেকে। সেখানকার ‘সাউথ ব্লক’ নিয়ন্ত্রণ করছে বাংলাদেশ সরকারকে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের প্রায় ৬০% হিন্দু কর্মকর্তা নিয়ন্ত্রিত যারা নেতৃত্বে দিচ্ছে ৮৫% মুসলিমকে। শেখ হাসিনার বডি গার্ডের এসএসএফ এর ৯০% সদস্য ভারতীয় সেনা বাহিনীর সদস্য। (কলকাতায় গিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকাকে জয়ের সেই আস্ফালন ‘আমরা ইন্দিরা গান্ধির মতো বডিগার্ড দ্বারা কোন আতংকে নেই’)
এবং ফাইনালী বাংলাদেশের সকল নিয়ন্ত্রণ এই মুহুর্তে সম্পূর্ণভাবেই ভারতীয় কোম্পানীগুলির হাতে।
বাংলাদেশের নদীগুলি দিয়ে অবাধে চলাচল করতে ভারতীয় জাহাজ, ভারতীয় ভারী গাড়ীগুলির নিশ্চিন্ত চলাচলের জন্য রাস্তায় চলছে মেরামতি, বিনিময়ে কোন ট্রানজিট ফি-ও নেয়া যাবে না; বিদু্ৎ সম্পূর্ণভাবেই ভারতের নিয়েন্ত্রণে, ইর্ষ্টার্ণ রিফাইনারী পরামর্শক ভারত, বাঙলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তার পরামর্শক ভারত। গ্যাস ট্রান্সমিশন, পায়রা বন্দর, সুন্দরবন, ব্যান্ডউইথ সবই তাদের কন্ট্রোলে।
আমি বরং একটা ভাল ও যুক্তিযুক্ত পরামর্শ দিচ্ছি। দেখুন তো সেটা কেমন হয়।
আমেরিকা বর্তমান পৃথিবীর সবচে শক্তিশালী, সমৃদ্ধ, আধুনিক এবং উচ্চ আয়ের দেশ। আমার যুক্তি হলো যদি এক্সিডেন্ট করে মারা যাই তাহলে সেটা হতে হবে বিমান এক্সিডেন্ট। যদি পানিতে ডুবে মরি- তাহলে অবশ্যই সেটা যেন হয় প্যাসিফিক ওসেনে। যদি পাহাড় থেকে পড়ে তাহলে এভারেষ্ট বা রকি।
সুতরং, বাংলাদেশটা আমেরিকাকে দিয়ে দেয়া যায় কিনা? আমেরিকার ৫০টি ষ্টেট রয়েছে। আরও রয়েছে ১০/১২ ট্রাষ্ট টেরিটরি; যেমন পুয়ের্তরিকা, ভার্জিন আইল্যান্ড। আবার এশিয়ার ভেতরেও আমেরিকার ট্রাস্ট রয়েছে; যেমন গুয়াম, মাক্রোনেশিয়া ইত্যাদি।
বাংলাদেশের মানুষগুলিতো আমেরিকায় আসার জন্য পাগল। তারচে এটাই তো ভালো হয় যদি সবাই ঘরে বসেই সরাসরি আমেরিকান হয়ে যাই! তাই না?
কিন্তু অতি বুদ্ধিমান আমেরিকা কি এই ১৮ কোটি জঞ্জালের দায়িত্ব নেবে? অামার বিশ্বাস এই ভুলটা আমেরিকা করবে না।
থাক, এটা বাদ।
তাহলে অন্য বুদ্ধি দিই।
ভারত নিঃসন্দেহে এ অঞ্চলের সুপার পাওয়ার। শুধু পাকিস্তানকে একটু ভয় পায়। চায়নার সামনে তো কথা বলতেই হাত-পা কাপা-কাপি শুরু করে দেয়!
তবুও শেখ মুজিবের মা’র জন্মভূমি। শেখ মুজিবের নানার দেশ বলে কথা। শেখ হাসিনার নানা-মামা’র দেশ। মামার বাড়ীর আবদার বলেওতো একটা কথা রয়েছে।
সংসদে আওয়ামী লীগের সংখ্যা গরিষ্ঠতা রয়েছে। যাষ্ট সিকিম ষ্টাইলে সুরঞ্জিত চোরাকে দিয়ে একটি সংশোধনী আনিয়ে ভারতের ৩১তম প্রদেশ হিসাবে অন্তভূর্ক্ত করে দিলেই কেল্লা ফাতে। এতে কি কি লাভ হবে বলে দিচ্ছি।
১) রাজধানী নয়া দিল্লীতেই থাকবে; এখনও কার্যত তাই আছে।
২) পশ্চিম বঙ্গ থেকে ওখানকার নেতারা ও লোকজন আমাদের আর তুচ্ছ-তাচিছল্য করে কথা কথা বলতে পারবে না কারণ সেটা হয়ে যাবে ভারতীয় সংবিধান লঙ্ঘন।
৩) পূর্ব বঙ্গ হয়ে যাবে সেভেন সিষ্টারের মেইন গেটওয়ে। আসাম এর গুরুত্ব বহুলাংশে কমে গিয়ে পূর্ব বঙ্গ হয়ে যাবে আধুনিক।
৪) মুহুর্তেই আমাদের জাতিয় আয় হয়ে যাবে বার্ষিক ৬২০৯ ডলার। বিশাল ব্যাপার।
৫) সারা পৃথিবী থেকে সাদারা দলবেধে সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ও সাবেক বাংলাদেশ ভূখন্ড দেখতে চলে আসবে কোন ঝামেলা ছাড়াই। কক্সবাজার হয়ে উঠবে প্রকৃত এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।
৬) বেকাররা অনায়াসে অন্যান্য রাজ্যে যেতে পারবে চাকুরী করতে।
৭) ঢাকার নায়ক-নায়িকাদের আর কস্ট করে ভিসার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে। সরাসরি ঢালিউড ছেড়ে টালিউডে চলে যাবে কমলাপুর থেকে ইলেকট্রিক ট্রেন ধরে।
৮) ভারত পেয়ে যাবে তাদের অত্যন্ত পছন্দনীয় শিল্পী রুনা লায়লাকে নিজস্ব শিল্পী হিসাবে।
৯) নির্বাচন কমিশন একটা সুষ্ঠ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করার ক্ষমতা অর্জন করবে।
১০) আমাদের দেশের লোকজন বাথরুমের পরিবর্তে রাস্তা-ঘাটেই প্রাকৃতিক কর্ম সম্পাদনে অধিক আগ্রহী হয়ে উঠবে।
১১) ধর্ম নিরপেক্ষ ইমেজ চলে আসবে।
১২) ব্লগারদের অার কষ্ট করে ব্লগে যেয়ে ইসলাম ধর্মকে গালাগালি করতে হবে না। এবং তাদের আর ইওরোপ-আমেরিকা অাশ্রয় দেবার প্রয়োজন বোধ করবে না।
১৩) তসলিমা নাসরিন ফিরে পাবেন তার পিতৃভূমী।
১৪) বাংলাদেশের মানুষ আমেরিকায় এসে আর রাজনৈতিক আশ্রয় বা পলেটিকাল এসাইল্যাম চাইতে পারবে না।
১৫) নিরপেক্ষ নির্বাচনের বদৌলতে পারিবারিক উত্তরাধিকারী রাজনীতির অবসান ঘটবে অন্তত প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং এরা আঞ্চলিক দলে পরিণত হবে।
১৬) চুরি করে আর বাঙলা মদ খেতে হবে না এদেশের মানুষকে। হেরোয়িন, ইয়াবা, ফেনসিডিল (ডাইল) বন্ধ হয়ে যাবে। ওপেন মদ খাওয়া যাবে; রাস্তায় রাস্তায় বার তৈরী হবে। ব্যবসা বাড়বে।
১৭) শেখ হাসিনার পুত্র ও বঙ্গনাতি শেখ সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেয়া সকল টাকা ভারত সরকারের কাছে পাই-টু-পাই ফেরত দিতে হবে।
১৮) ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাছাড়া বৃটিশরা মনে হয় আগে ভাগেই এসব বিষয়গুটি টের পেয়ে তাদের ভিসা অফিস ঢাকা থেকে সড়িয়ে নয়া দিল্লী নিয়ে গেছে।
কিন্তু দেশের যা অবস্থা। ভারত কি এই দায়িত্ব নেবে?
অন্যের বউকে যদি ফ্রি পাওয়া যায় তাহলে বিয়ে করার মতো বেকুব কি ভাতের দাদারা?
– খোঁজ নিয়ে দেখা দরকার।
বাংলাদেশ তো এখন ভারতের ফ্রি বউ এর মতোই।
ইচ্ছামত ধর্ষন করতে পারছে তারা।
ফ্রি পাওয়া গেলে কি দরকার বাড়তি ঝামেলা নেয়ার!
   Send article as PDF