দেশটার মালিক আমিও

আমি কোন প্রফেশনাল লেখক নই।
স্রেফ মনের আনন্দে এবং মাঝে মধ্যে মনের ভেতরে জমে থাকা ক্ষোভ নিরসনে লিখি।
 
নিয়মিত লেখালেখি করছি বছরও পার হয়নি।
সেই ২০০২ সালে একটা বই লিখছিলাম, তারপর দীর্ঘ ১৫ বছরের বাধ্যতামূলক ‘ব্যস্ততা বিরতী’।
 
আমেরিকায় এসে অল্প পরিশ্রমেও ভালো থাকা যায় এবং হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকে বলে সোসাল মিডিয়াতে লেখার সময় পাই, লিখি।
 
বিগত ১৫ বছরে ঢাকায় আমার ব্যবসায়িক জীবনকালে গোটা পাঁচেক আর্টিকেল লিখেছিলাম আর একটা কবিতা। তিনটা প্রথম আলো (আলু) তে আর দু/একটা জনকন্ঠতে ছাপাও হয়েছিল।
 
আমার লেখা তেনারা তাদের পত্রিকায় ছাপানোর ‘সাহস’ রাখেন না। পরিবর্তন করে দিতে বলেন- আমি রাজী হইনি।
 
আমি রাজী হইনি- আর ছাপাও হয়নি।
 
আমেরিকা স্বাধীন দেশ।
 
না।
জানি- আপনাদের দৃষ্টিতে বাংলাদেশও নাকি স্বাধীন দেন- যদিও আমেরিকার স্বাধীনতা দেখার পর বাংলাদেশ-কে ‘স্বাধীন দেশ’ বলে স্বীকার করতে আমার ঘোরতর আপত্তি আছে।
 
যাই হোক, আমেরিকায় স্বাধীনভাবে কথা বলা যায়, লেখা যায়, মনের কথা প্রকাশ করা যায়।
 
আমেরিকায় আপনার যদি কোন একটা মেয়েকে পছন্দ হয়, আপনি সরাসরি তাকে বলতে পারেন, ‘হাই, তুমি কি সিংগেল? তোমাকে আমার পছন্দ হয়েছে।’
 
মেয়েটি আপনাকে ‘রিফিউজ’ করলেও একটা থ্যাংকস দিবে এবং সংগে মিষ্টি হাসি যোগ করে বিদায় নিবে। কিন্তু বাংলাদেশে ঠিক এই কাজটি-ই করলে- আপনাকে ‘জুতা খেতে’ হবে! গণপিটুনীতেও মরতে হতে পারে- কে জানে!
 
সরি, ও প্রসংগে না হয় নাই বা গেলাম।
 
যা বলছিলাম, যাই হোক- আমেরিকায় স্বাধীনভাবে কথা বলা যায়, লেখা যায়, মনের কথা প্রকাশ করা যায়। ক্রিয়েটিভ কিছু চিন্তা করা যায়। একটু বুদ্ধি থাকলে সম্পূর্ণ রিস্ক ফ্রি ব্যবসায় বিনিয়োগ করা যায়। না খেয়ে থাকতে হয় না, ফ্রি চিকিৎসা সুবিধাও পাওয়া যায়। কারেন্ট যায় না, গ্যাস যায় না, হরতাল নেই, ২৪-ঘন্টা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চলছে।
 
সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা কাজ করলেও আপনি রাজার হালে দিন পার করে দিয়ে বাড়তি সঞ্চয় করতে পারবেন। গাড়ী কিনতে বা বাড়ী করতে লোন নিয়ে আপনার কাছে ব্যাংকগুলি হাজির।
 
না, বাংলাদেশী ব্যাংকগুলির মতো ডাকাতী করতে আসে না ওরা।
ক্রেডিট কার্ডে কোন চার্জ নেই- উল্টা ৫% পর্যন্ত আপনার কেনা-কাটার উপরে এরা ক্যাশব্যাক দেয়।
 
কোন কোন ব্যাংকে একাউন্ট ওপেন করলে ২০০ ডলার পর্যন্ত আপনাকে বকশিশ দিয়ে দেয় এরা।
 
এমন একটা আনন্দময় দেশে বসবাস করে একটু লেখালেখি করার যে কতটা আনন্দ- সেটা বোঝানো অসম্ভব।
 
বাংলাদেশে থাকতে টেনশনে টেনশনে ঘুমাতেও পারতাম না, হাই ব্লাড প্রেসার বাধিয়েছি, মাথার চুল তো পেকেছে সেই আরও বছর পনের আগেই!
 
ইদানিং মনে হচ্ছে সেই সিলভার কালারের চুলগুলি না আবার ব্লাক হয়ে যাচ্ছে! (এটা কিন্তু মিছে কথা)!
 
যাই হোক, স্বাধীনতা।
 
হ্যা।
আমি মাস কয়েক ডালাসে ছিলাম- সেখানে বেশ কয়েকটা মসজিদ রয়েছে। ম্যাক্সিমাম মসজিদে দেখতাম আরাবিয়ানরা নামাজ পড়তে আসে। পরে জানলাম ডালাসে প্রচুর সংখ্যায় আরাবিয়ান বসবাস করে। আমার সংগে বেশ কয়েক জনের পরিচয় হয়ে গেল, কথা বলতাম। সৌদী আরাবিয়া, কুয়েত, জর্ডান, ইরাক, ইরানীও ছিল।
 
ওদের কাছে জানতে চাইছিলাম, ‘আমি না হয় তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশ থেকে আমেরিকায় ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য দেশান্তরী হয়েছি। তোমাদের তো কোন অভাব নেই। প্রচুর আয়, গভর্ণমেন্ট বেনিফিট, তেল বেচা টাকা, গাড়ী, বাড়ী সংগে অসংখ্য বউও আছে! তা তোমরা কোন দুঃখে দেশান্তরী হলে, শুনি?’
 
ওদের উত্তর আমাকে অবাক করেছিল।
ওরা বলতো, ‘মন খুলে, স্বাধীনভাবে একটু কথা বলার জন্য আমেরিকায় এসেছি’।
 
আমি একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ছেড়েছিলাম।
আর মনে মনে বলেছিলাম, ‘কথা তো আমরাও বলতে পারি না বাংলাদেশে’।
 
ওদের সক্ষমতা আছে; ‘স্বাধীনভাবে কথা বলা’র জন্য ওরা অমেরিকায় আসতে পারে- কিন্তু আমার দেশের মানুষতো সেটাও পারে না!
 
আমার লেখাগুলি আমেরিকাময়, এটা হেটার্সদের কথা।
বাট, অভিযোগটি সত্য।
 
আমি আমেরিকা নিয়ে বেশী লিখি; কারণ- আমি আমার জীবনের ৪০টা বছরে বাংলাদেশে বসবাস করে, এবং বিশ্বের প্রায় ২৫টা দেশে তিন শতাধিক বার ভ্রমণ করার পরও যা শিখতে পারিনি- স্রেফ গত মাত্র আড়াই বছরে তার অনেক কিছুই শিখেছি, শিখছি এবং এতটুকু বুঝতে পারছি ‘কত কত কত ভুল শিক্ষা’ আমি আমার দেশ থেকে অর্জন করেছি।
 
আমেরিকা সভ্য দেশ। আমি সভ্যতা শিখছি।
আমেরিকার মানবতা, স্বাধীনতা আর গণতন্ত্রের দেশ। আমি গণতন্ত্রিক, মানবিক ও স্বাধীন হতে চেষ্টা করছি প্রতিনিয়ত। এসব উপভোগ করছি।
 
আমেরিকা ক্রিয়েটিভ দেশ। আমি কোটি কোটি টাকা নগদ নষ্ট করে যে ক্রিয়েটিভ কাজে বাংলাদেশে সফল হতে পারিনি- শুধুই অশিক্ষিত, মূর্খ, অসৎ, নোংড়া মানসিকতসম্পন্ন সরকার ও সরকারী আমলা এবং অসৎ মানুষের ভীড়ে- সেই সুযোগটা এখানে পূরণ করার দারপ্রান্তে রয়েছি।
 
আমেরিকা সুযোগের দেশ- ল্যান্ড অব অপুর্চনিটি।
আমেরিকায় যে ‘সফল’ হতে পারে না- সে মানুষ হবার দৌড়ে ব্যর্থ।
 
আমি একটি বর্ণও মিথ্যা বা বানিয়ে বলছি না।
আমি কারো নিকট দায়বদ্ধতা নিয়ে লিখি না, কিছু বলি না।
আমি এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন মানুষ।
 
আমার লেখালেখির একটা উদ্দেশ্য আছে।
আনন্দ বা ক্ষোভ যা থেকেই লিখি না কেন- আমি উদ্দেশ্যহীন কিছু লিখি না।
আমার লেখালেখির অল্পসময়ে প্রচুর ভালো ভালো কমেন্ট পাই, প্রচুর।
 
কিন্তু এরমধ্যেও আমি কিছু বিরূপ কমেন্ট পাই।
বিরূপ কমেন্টগুলিকে আমি খুবই সিরিয়াসলি গ্রহন করি। সেখান থেকে নিজের ভুলগুলি খুটিয়ে বের করার চেষ্টা করি।
 
যাই হোক, বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১২ কোটি মানুষ কোন কাজ করে না- বসে বসে খায়। বাবা, স্বামী, ভাই বা মামা-চাচাদের উপর নির্ভর করে থাকে। এতে যে তার ‘পারিবারিক স্বাধীনতা’ বিঘ্নিত হয়- সেটাও সে বুঝে না।
 
দেশের প্রতিটি মানুষ কাজ করবে- সকলে স্বাবলম্বী হবে। তাহলেই না দেশ এগুবে।
কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ অলস। তারা কর্মবিমুখ। নতুন কিছুতে তাদের ঘোর আপত্তি। ক্রিয়েটিভ তো মোটেও নয় এরা। অতি অল্পতে এরা দ্রুত বড়লোক হতে যায় এবং তা যে-কোন উপায়ে।
 
হাতে টাকা আসলে সর্বপ্রথম একটা বাড়ী করবে এবং সেই বাড়ী ভাড়ার টাকায় বাকী জীবন বসে বসে খাবে। এটা যে কতটা ক্ষুদ্র ও নোংড়া একটা মানসিকতাপূর্ণ বিষয়- সেটাও তারা জানে না।
 
বাংলাদেশী মানুষ উৎপাদনমুখী চিন্তা করতে নারাজ।
 
নেতারা যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় যাবে, ক্ষমতায় থাকবে।
দেশে শিক্ষার মান অত্যন্ত নিম্নমূখী। সরকার চায়না দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক, স্বাবলম্বী হোক। শিক্ষার নামে যতটুকু অপচয় করে- সবটুকুই লোক দেখানো, হাততালি মার্কা।
 
গণমানুষ শিক্ষিত, সচেতন হলে যে অযোগ্যরা ক্ষমতায় থাকতে পারবে না- তাই। সোজা ও পরিস্কার হিসাব।
 
দেশের সরকারী চাকুরীতে কোটা প্রথার নামে সাধারণ মানুষকে ‘বঞ্চিত’ রাখা হয়েছে- যতটুকুই বা কোটামুক্ত চাকুরী রয়েছে সেটুকুর জন্য মন্ত্রী, এমপি, আমলাদের ঘুষ বানিজ্যের উপর নির্ভরশীল করে রাখা হয়েছে।
 
একটা কবিতা শুনেছিলাম, ‘টাকা নেই তো চাকা ঘুরে না, চাকা ঘুরে না তাই টাকা আসে না’।
 
আরও একটা কবিতা ছিল এরকম, ‘ঘুম ক্ষুধা, ক্ষুধা ঘুম, ক্ষুধা ক্ষুধা ঘুম ঘুম’ অর্থাৎ খাবার পর ঘুমাবো, ঘুমের পর খাবো’।
 
এই হলো আমাদের বাংলাদেশ।
 
এদেশে ক্ষমতায় যাবে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ।
শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া। সজীব ওয়াজেদ জয় বা তারেক রহমান পিনো।
 
আপনি হয় আওয়ামী লীগ করেন অথবা বিএনপি।
এটাই আপনার পরিচয়।
 
আমি বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদে বিশ্বাসী। স্বাধীন, গণতন্ত্র ও মানবতায় বিশ্বাসী মানুষ।
আমি বিশ্বাস করি, পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ বিএনপি বাংলাদেশের অবস্থা পরিবর্তন করবে না, করার যোগ্যতা রাখে না।
শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া অথবা সজীব ওয়াজেদ জয় কিংবা তারেক রহমান পিনো সম্পূর্ণভাবে অযোগ্য মানুষ। দেশের নায়ক হবার বিন্দুমাত্র যোগ্যতাও তারা রাখে না।
 
জাতীয় পার্টিতো পচেই গেছে। জামায়াত চমৎকার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংগঠন হলেও যোগ্যতার অভাব রয়েছে তাদের, জামায়াতে ক্ষুদ্রতা উপস্থিত। রাম-বাম এসব তো স্রেফ চুলকানী।
 
সেদিন নিউ ইয়র্কে একজন সাংবাদিক বললেন, দীপু মনি আবার মন্ত্রী হচ্ছেন।
আমি জানতে চাইলাম কেন, আবার কেন? সাংবাদিক উত্তর করলেন, ‘শেখ হাসিনা যখন সংসদ ভবনের অস্থায়ী জেলখানায় বন্দী তখন প্রতিদিন নিয়ম করে ভোড় ছয়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দীপুমনি ঐ জেলখানার সামনে গিয়ে বসে থাকতেন- তাই।
 
আমি উত্তর দিলাম, তাহলে জেল খানার গেটে বসে থাকলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়া যায়? বেশ ভালো তো? সাংবাদিক নিরুত্বর!
 
আমাদের মোসাদ্দেক আলী ফালু একসময় শাহজাহানপুর কবরস্থানের তত্ববধায়ক (কেয়ারটেকার) ছিলেন। মির্জা আব্বাসের বদান্যতায় বেগম জিয়ার দেহরক্ষীর চাকুরী পান ফালু।
 
সেই দেহরক্ষী ফালু – বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী হলেই হয়ে উঠেন দেশের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে। কোন যোগ্যতায়? কিসের জন্য?
 
যেনতেনভাবে ক্ষমতাধরের কাছে ঘেষতে পারলেই ‘ক্ষমতা’ পাওয়া যাবে- এটা কোন যোগ্যতার কথা না।
 
এভাবে আপনার পরিবার চলুক- কিন্তু একটা দেশ আমরা চলতে দিতে পারি না।
 
এ দেশটার মালিক আমিও।
 
বিগত ৩০ বছরের অপশাসন এবং দেশটাকে ধ্বংশ করার জন্য শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া সম্পূর্ণভাবে দায়ী। দায়ী তাদের অযোগ্যতার জন্য। তারা একটা ভয়াবহতম অযোগ্য প্রশাসন তৈরী করে রেখেছে। আর বর্তমান অবৈধ শেখ হাসিনাতো দেশটাকেই ধ্বংশ করার মিশন বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
 
আমার ফলোয়ারদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত-মনাদের সংখ্যধ্যিক লক্ষণীয়।
আমি বেগম জিয়া অথবা তারেক সাহেবের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই আমাকে ‘জামায়াত’ ট্যাগ দেয়া হয়; অনেকে আবার ‘রাজনীতি বাদ দিয়ে ভ্রমণ নিয়ে লেখা’র পরামর্শ দেয়।
 
ভাইজানেরা, আমি যে আমার মাথাটা আপনার মতো অন্যের কাছে বর্গা দিয়ে রাখিনি- সেটা কেন বুঝেন না।
 
আমি সম্পূর্ণ স্বাধীন।
আমার লেখার কোন শব্দ বা লাইন-কে আপনি যুক্তি, তথ্য ও প্রমাণ দিয়ে মিথ্যা প্রমাণ করুন আমি মেনে নিবো। সেটা না পারলে চলবে কেন- বলুন?
 
আমার লেখার স্বাধীনতা আপনি বন্ধ করতে পারবেন না। আমি দেশের নিরীহ মানুষদের জন্য লিখি- যারা জানেই না যে রাষ্ট্র শুধু পাবলিক থেকে ট্যাক্স-ই নিবে না- উল্টো জনগণকে ফ্রি চিকিৎসা দেবে। বেকার ভাতা দেবে। ফ্রি শিক্ষা দিবে, মানুষ হবার ফ্রি ট্রেনিং দিবে।
 
হাসিনা ওয়াজেদ বা খালেদা জিয়া এসব করতে পারেনি। তারা অযোগ্য, তারা ব্যর্থ। ব্যর্থদের আমি পছন্দ করি না, তাদের রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। এটা সময়ের দাবী। নইলে কষ্টকর বিদেয় হবে এমনিতেই, ইনশাল্লাহ।
 
আমি কাউকে খুশী করার জন্য একটা শব্দও লিখি না।
আমার লেখায় কেউ আহত হলে আমার কিছু যায় আসে না।
সত্য কথা হজম করা অনেক কষ্টকর।
 
আজ বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে কথা বলা যায় না।
গণতন্ত্র নেই। মানবাধিকার সম্পর্ণভাবে হারিয়ে গেছে।
 
মানুষের জীবন আর গরু-ছাগলের জীবনের মধ্যে কোন পাথ্যর্ক নেই। পুলিশকে ১ লাখ টাকা দিয়ে যে-কাউকে হত্যা করানো সম্ভব। আর লোকল মাস্তানরা এই একই হত্যাকান্ডটি করে দেয় মাত্র বিশ হাজার টাকায়।
 
অথচ ভালো জাতের একটা অষ্ট্রেলিয়ান গরুর দামও আজ ৮০ হাজার টাকা।
 
এই হলো আজ আমাদের প্রাণের বাংলাদেশ।
আমি যেখানে রয়েছি- বাংলাদেশ নিয়ে চিন্তা না করলে আমার এমন কোন ক্ষতিবৃদ্ধি হবে না।
 
কিন্তু আমি আমার দেশটাকে আমেরিকার মতো দেখতে চাই।
সিংগাপুরের মতো বা হংকং এর মতো দেখতে চাই।
এবং সামান্য কিছু সিদ্ধান্ত নিলেই দেশটাকে পরিবর্তন করে ফেলা সম্ভব।
 
আপনি বিশ্বাস করেন, যে শিশুটা আজ বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছে- তাকে কাল আমেরিকায় এনে ছেড়ে দেন। ১৮ বছরে যে গ্রাজুয়েট হয়ে বের হবে, সেদিন থেকেই তার ঘন্টা প্রতি আয় হবে মিনিমাম ৩০ ডলার। সে একটা নতুন মডেলের গাড়ী ক্রয় করতে পারবে ৩ মাসের চাকুরী বয়সেই।
 
হ্যা। আপনিও যদি বাংলাদেশটাকে আমেরিকার মতোই দেখতে চান- তাহলে সামগ্রীক পরিবেশটা আমাদের চেঞ্জ করতে হবে।
 
বর্তমান পড়াশোনা পদ্বতি পরিবর্তন করতে হবে। কর্মমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তণ করতে হবে। আমাদের লক্ষ লক্ষ এমবিএ বিবিএ বা ডক্টরেট দরকার নেই- দরকার হাতের কাজ জানা টুয়েলভ ক্লাস পাশ কর্মী মানুষের।
 
ক্ষুদ্র দেশ বাংলাদেশে কৃষি দিয়ে কোন উন্নয়ন আদৌ সম্ভব নয়। ব্যাপক হারে শিল্পায়ন ঘটাতে হবে।
 
দেশের যাতায়াত, ম্যান টু ম্যান কানেক্টটিভিটি বাড়াতে হবে। ডাক ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। দেশকে আন্তর্জাতিকিকরণ করতে হবে যেন ঢাকা বসে সিডনী, নিউ ইয়র্কে বা রিওডি জেনিরোতেও চায়না থেকে এক কনটেইনার লাল পেয়াজ কা ইন্দোনেশিয়ার কয়লা সাপ্লাই করতে পারে।
 
মিথ্যা ডিজিটাল মুলা নয়, সত্যিকারার্থে ডিজিটাল সেবা উপস্থিত করতে হবে জনগণের দোড়গোরায়।
 
আর ইতিমধ্যেই বাংলাদেশটা ভারতের গহ্বরে প্রবেশ করেছে- শেখ হাসিনা করিয়েছে; যেখানে নেপালের মতো ক্ষুদ্র দেশ জাতীয়তাবোধ জাগ্রত হয়ে লাথি মেরে ভারত থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে।
 
যেভাবে বাংলাদেশ এগুচেছ তাতে ভাবা যায় না আগামী দশ বছর পর কি হবে দেশটার?
 
হেনরী কিসিঞ্জারের ‘বটমলেস বাস্কেট’ তত্ত্ব কার্যকারী হতে বাকী নেই মোটেও।
 
আপনিও মনে মনে চান দেশটা উন্নত হোক।
কিন্তু আপনি মোটেও তৈরী নন।
আপনি ব্যস্ত তাহসান-মিথিলা’র ডিভোর্স নিয়ে।
 
শেখ হাসিনা একের পর এক ধংসাত্বকভাবে দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে। রাষ্ট্রিয় সম্পদ লুটপাট করে ব্যাংকগুলিকে শূণ্য করে দেয়া হয়েছে। দেশের প্রতিটি মানুষের মাথার উপর ঋণের দায় ৪৫ হাজার টাকা। দেশে চাকুরী নেই, ব্যবসা নেই।
 
আওয়ামী লীগ না হলে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নেই।
 
আপনার জীবনের দাম ২০ হাজার টাকাও না। অথচ একটা গরু কিনতেও লাগছে ৮০ হাজার।
 
আপনি কি সত্যিই তাহলে ‘মানুষ’ হতে চান না?
 
   Send article as PDF