হৃদয় ভার্সেস ব্রেন

বছর দশেক আগের কথা; বা ১২ হলেও হতে পারে।
ফেসবুক তখনও এখনকার সময়ের মতো ততটা জনপ্রিয় নয়। মানুষ সবে মাত্র ব্যবহার শুরু করেছে, যদিও আমি আছি ফেসবুকের জন্মলগ্ন থেকেই, মানে সেই ২০০৭ থেকে। ফেসবুক ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও আমেরিকার বাইরে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে ২০০৭ সালেই।
আমার বহুবছরের অভ্যাস রাত জাগা।তখনও রাত জাগি। রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ইনবক্সে একটা মেয়ের ‘হাই’ বলে নক করলেন। আমি তার প্রফাইলে গেলাম। পরিচয় দেয়া নেই সেভাবে। তবে ভালো, সম্মানজনক প্রফাইল।
আমি রেসপন্স করলাম। পরস্পর পরিচিত হলাম, নাম ধাম জানলাম, আমাদের সবসময় ইংলিশেই কথা হতো; কোনদিনও বাংলায় আমরা কথা বলিনি।
মেয়েটি আমার সংগে কথা বলছিল দক্ষিন ভারত থেকে। যদ্দুর মনে পরছে কেরালায় সে সেনাবাহিনীর একটা ট্রেনিং এ ছিল। মেয়েটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর।
এরপর থেকে আমার সংগে তার প্রায়ই কথা হতো। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে- রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, পরিবার, প্রেম, ভালোবাসা সব বিষয়। কোন কিছুই বাদ থাকতো না।
যাই হোক, আমি তার কাছে বেশী জানতে চাইতাম দক্ষিন ভারতের কালচার নিয়ে। সে তেমন তথ্য দিতে পারতো না। প্রচুর ব্যস্ত থাকতো ট্রেনিং নিয়ে।
একদিন তাকে একটা প্রশ্ন করেছিলাম, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী-র কাজের বেইসিক পার্থক্য বা বৈপরীত্য কোথায়?’
মেয়েটা আমাকে অতি চমৎকার একটি উত্তর দিয়েছিল।তার কথাটা যে কি ভাল লেগেছিল সেদিন!মেয়েটার নাম-ধাম সব ভুলে গেছি কিন্তু তার কথাগুলি মনে পরে।
বলেছিল, ‘ভারতীয় সেনাসদস্যরা কাজ করে ব্রেন দিয়ে; আর বাংলাদেশের সেনাসদস্যরা কাজ হৃদয় দিয়ে।’
অবশ্য, এখনও তারা তা করে কি না, আমি ঠিক বলতে পারছি না।

   Send article as PDF