৩ মাস পর

সময় টিভিতে বাংলা খবর শুনছিলাম। সময় পেলে মাঝে মধ্যেই শুনি, দেশের লোকজন, রাস্তাঘাট এসব দেখতে এখন ভালই আগে।
কিনতু দুটি সংবাদের ২টি ভিন্ন লাইনে একটু নড়েচরে উঠলাম। সুক্ষ ভূলগুলি বরাবরই আমার চোখে আটকে যায়, এটা হয়তো বা আমার চোখেরই দোষ!
সময় টিভিতে সংবাদ পাঠিকা সংবাদ পাঠ করছিলেন। ধামরাই এর একটি সংবাদ।
প্রথম লাইনটা ছিল এমন ‘রাজধানীর ধামরাই এ ….’
আমি হাসলাম। ধামরাই কবে রাজধানীর অংশ হলো?
রাজধানী ঢাকা এবং ঢাকা জেলা দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন অঞ্চল। দোহার, নবাবগঞ্জ, কেরাণীগঞ্জ, সাভার ও ধামরাই ঢাকা জেলার অংশ; রাজধানী ঢাকার অংশ নয়।
বাংলাদেশের শিক্ষা, সচেতনতা এবং মিডিয়ার যোগ্যতা আমি সবসময়-ই হতাশ! এটা নতুন কিছু না।
কিনতু দেশটা যাচ্ছে কোথায়? মানুষ শিখবে কোত্থেকে?
দ্বিতীয় খবরটিও আরও মজার।
সংবাদটি ছিল জামায়াত নেতা প্রখ্যাত রাজাকার মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যু পরোয়ানা জারি প্রসংগে। সেখানে বলা হলো মতিউর রহমান নিজামী ৪০টি নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদন্ড; অবশ্য আরও অনেকগুলি অপরাধের জন্যও মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে।
আচ্ছা ৪০টি ধর্ষন করতে তো ৪০টি মেয়ের প্রয়োজন হয়।
মতিউর রহমান নিজামী কি একদিনেই ৪০টি ধর্ষন করেছিলেন? নাকি ভিন্ন ভিন্ন দিনে?
এতোগুলি মেয়ে- ভদ্রলোক পেলেন কোথায়?
আচ্ছ! এই ৪০টি মেয়েই কি কোর্টে এসে স্বাক্ষী দিয়ে গেছে নিজামীর বিরুদ্ধে?
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির গালে জোরা থাপ্পর দিতে পারলে একটু শান্তি পেতাম।
– ধর্ষন সেঞ্চুরী তো ছাত্রলীগের নিয়মিত মহরার অংশ; তাহলে মতি রাজাকার কি তখন ছাত্রলীগ নেতা ছিল?
– যাই হোক, যে লোকটি সেই ৭১ সালের ৯ মাসেই ৪০ মেয়েকে ধর্ষন করে ফেলল সে তো নিশ্চয়ই গত ৪৫ বছরে আরও অন্তত ৫০০ মেয়েকে ধর্ষন করে ফেলার কথা!
এই হিসাবটাও সাংবাদিক বা বিচারপতিদের একটু বের করা দরকার ছিল না?
একটা কৌতুক বলি।
নিউ ইয়র্ক এর ব্রঙ্কস এ একটি চমৎকার পার্ক রয়েছে, পেলহাম বে পার্ক। খুবই সুন্দর। আমি নিজেও সেখানে মাঝে মধ্যে যাই; ভাল লাগে।
তো, সেই পার্কে দু জানের দোস্ত বসে গল্প করছে। তারা এমন বনধু যে এক মুহুর্ত একজন আরেকজনকে না দেখে থাকতে পারে না। দুজন বসে গল্প করছিল।
হঠাৎ এক বনধু (নাম টা না বললাম) হিসু পাওয়াতে অপর বনধুকে বলল, দোস্ত একটু দাড়াও আমি একটু ইয়ে করে অাসি।
সেই বনধু যে গেল, গেলই; আর ফেরার খবর নেই। বনধুটি অনেকক্ষন বসে থেকে এদিক ওদিক অনেক খুঁজেও ঐ বনধুকে ফেল না। তখনও মোবাইল ফোন আবিষ্কার হয়নি। ওদের বাড়ীতে গেল- সেখানেও কোন খোঁজ নেই। এভাবে ১দিন, ২দিন, সপ্তাহ পার হয়ে ৩টি মাস চলে গেল। এই বনধু তো চিন্তায় অস্থির, কোথায় হারিয়ে গলে প্রিয় বনধুটি!
অবশেষে ৩ মাস পর সেই হারিয়ে যাওয়া বনধুটি এসে উপস্থিত। দু’জন দু’জনকে জরিয়ে ধরলো।
‘তুই কোথায় ছিল? কি হয়েছিল, আমাকে জানাবি তো? আমরা তো চিন্তায় অস্থির।’
ওই বনধুটি বলল, ‘আমি হিসু করছি তখনই দেখলাম দুইজন পুলিশ গাড়ী নিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। এরপর পুলিশ আমাকে ধর্ষনের অভিযোগে এ্যারেষ্ট করে নিয়ে গেল। আমাকে কোর্টে তোলা হল। রায় হলো ৩ মাসের সাজা; আজ সাজা খেটে বের হয়ে আসলাম।’
‘মানে কি? তুই তো সবসময় আমার সাথেই থাকিস। ধর্ষন করলি কবে? তুই ধর্ষন করলে আমি তো জানতাম অন্তত!’
বনধুটি উত্তর দিল, ‘দোস্ত আমি তো আসলে কোন ধর্ষন করিই নি, মেয়েটাকে জীবনে দেখিওনি। ঘটনা হলো কি- পুলিশ আমাকে কোর্টে তুলল। অত্যন্ত রূপবতী একটা মেয়ে কোর্টে আমাকে দেখিয়ে সবার সামনে বলল- এই ছেলেছিই আমাকে ধর্ষন করেছে।
আমি মেয়েটাকে চিনিও না। কিনতু বিশ্বাস কর মেয়েটা দেখতে এতো সুন্দরী- আমার মাথাই খারাপ হবার জোগাড়। সেই মেয়েটি নিজের মুখে যখন সবার সামনে বলল, আমিই নাকি ওকে ধর্ষন করেছি। আমার খুব ভালো লাগছিল, ধর্ষন করিনি তাতে কি? তাই, আমি সবার সামনে স্বীকার করে নিলাম, কোন প্রতিবাদ করি নাই। আমি ধর্ষন না করলাম কিনতু ওতো সবার সামনে স্বীকার করলো- এটাই তো কত বড় একটা পাওনা, চিন্তা করে দেখ!
   Send article as PDF